গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
১০ দফা এবং জনগণের জীবিকার বিভিন্ন সমস্যা ও সরকারের দুর্নীতি, লুটপাট, জনদুর্ভোগের বিরুদ্ধে গড়ে উঠা গণআন্দোলন নসাৎ করতে সরকার দমন-নিপীড়ন অব্যাহত রেখেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত দফতর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স। তিনি বলেন, নেতাকর্মীদের গ্রেফতার হয়রানি করে সরকার চলমান কর্মসূচি বানচাল ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে। বৃহস্পতিবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।
এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, দেশের সাধারণ মানুষ আজ আওয়ামী সরকারকে বয়কট করেছে। সরকারের সকল অন্যায়, অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে বিএনপির কর্মসূচিতে একাত্মতা প্রকাশ করে অবৈধ ফ্যাসিবাদী সরকারের পদত্যাগে রাজপথে নেমে এসেছে। তাই সরকার নিজেদের অপশক্তি প্রয়োগ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দ্বারা নেতাকর্মীদের ওপর জুলুম নির্যাতন চালাচ্ছে, অবৈধভাবে গ্রেফতার করছে নিরীহ নেতাকর্মীদের।
তিনি বলেন, বিএনপি, সরকারের হীন এই কর্মকান্ডের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাচ্ছে এবং সরকারকে এসব হীন ষড়যন্ত্র পরিত্যাগ করে সুস্থ ও সুষ্ঠু রাজনীতির ধারায় ফিরে আসার আহবান জানাচ্ছে। এসব মামলা, হামলা, গুম, খুন, গণ-গ্রেফতার ও নেতাকর্মীদের হয়রানি করে গণতন্ত্র, মানবাধিকার, ভোটাধিকার ও আইনের শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং সরকারের সৃষ্ট জনদুর্ভোগ, দুর্নীতি ও লুটপাটের বিরুদ্ধে চলমান আন্দোলন বিভ্রান্ত বা নস্যাৎ করতে পারবে না। প্রিন্স বলেন, সরকার ও আওয়ামী লীগ এতটাই জনবিচ্ছিন্ন, দুর্বল এবং ভীত যে তৃণমূলে আন্দোলনের কর্মসূচি দেওয়া মাত্রই তাদের হৃদকম্পন বেড়ে গেছে, তারা নার্ভাসনেসে ভূগছে। জনসম্পৃক্ত এই আন্দোলন সকল বাধা বিঘœ উপেক্ষা করে যৌক্তিক পরিণতির দিকে এগিয়ে যাবে।
তিনি জানান, বুধবার রাতে বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপুকে কোন কারণ ছাড়াই নিজ বাসা থেকে পুলিশ গ্রেফতার করে। তার বিরুদ্ধে নতুন কোন মামলাও নেই। পুরাতন সকল মামলায় তার জামিন রয়েছে। কোন কারণ ছাড়াই সপুকে গ্রেফতার চলমান আন্দোলনে নেতাকর্মীদের ভীত করার সরকারী অপকৌশল মাত্র। এছাড়া বৃহস্পতিবার জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা-জাসাস নারায়ণগঞ্জ মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন স্বাধীনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে এবং বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেলিম, জাকির হোসেন, গিয়াস উদ্দিন গেসু, রানা ও সেন্টুকে গ্রেফতার করেছে। বুধবার ঢাকা মহানগর উত্তরের গুলশান থানা বিএনপির মো. শাহজাহান কবির মন্টু, মো. রাশেদ বিন সোলেমান শাহাজাদা, মো. হাসেম, আব্দুল মমিন, মো. মনিরুল ইসলাম, আফসার আলম খাঁন সেলিম, মো. রিপন তালুকদার, মো. আফজাল হোসেন, মো. মহসিন, মো. আমির হোসেন, মো. শুক্কর আলী, মো. মনির হোসেন লিটন, মো. হুমায়ুন কবির, দারগ আলী, এসএম খান টিটু, মো. হেলাল মিয়া, হাজী আ. মতিন, হাজী দেলোয়ার হোসেন, আবুল বাশার ভূঁইয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া যুবদলের সভাপতি শামীম মোল্লা, ইউনিয়ন বিএনপির শেখ মহসিন, আবুল কাশেম, আব্দুল হাই মেম্বার, উপজেলার বিএনপির শামিম রেজা এবং যশোর মনিরামপুর উপজেলায় ৬ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে। এছাড়াও শেরপুর, কিশোরগঞ্জসহ দেশের বিভিন্নস্থানে গত ৫ দিন ধরে পুলিশ নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে গ্রেফতারের ভয় দেখিয়ে হয়রানি করছে এবং চলছে গ্রেফতার বাণিজ্য।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত দফতর সম্পাদক অবিলম্বে সরাফত আলী সপুসহ গ্রেফতারকৃত সকল নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবী করেন এবং গ্রেফতার ও হয়রানি বন্ধের দাবী জানান।
১১ ফেব্রুয়ারি ইউনিয়ন পর্যায়ে পদযাত্রা: এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, গ্যাস, বিদুৎ, চাল ডালসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য, সার, ডিজেল সহ কৃষিপন্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াসহ নেতাকর্মীদের মুক্তি এবং ফ্যাসিস্ট সরকারের পদত্যাগসহ ১০ দফা দাবীতে সারাদেশে বিএনপি’র পদযাত্রা কর্মসূচি পালিত হবে। এই কর্মসূচীকে সামনে রেখে সরকার সারাদেশে নেতাকর্মীদের গ্রেফতার ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করছে। ক্ষমতাসীন দল নির্লজ্জের মত পাল্টা কর্মসূচি দিয়ে সংঘাত সৃষ্টিতে উস্কানী দিচ্ছে। ###
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।