Inqilab Logo

শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

‘স্পেয়ার’-এ রাজপরিবারের যেসব চাঞ্চল্যকর তথ্য ফাঁস করলেন প্রিন্স হ্যারি

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৭ জানুয়ারি, ২০২৩, ৫:৩৫ পিএম

নিজের আত্মজীবনীমূলক বই ‘স্পেয়ার’-এ বিভিন্ন ঘটনার কথা উল্লেখ করেছেন যুক্তরাজ্যের প্রিন্স হ্যারি। বইটির ইংরেজি সংস্করণটি আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো বাজারে আসেনি। তবে স্পেনে প্রকাশিত হয়েছে স্প্যানিশ সংস্করণ। এতে করে তার বইয়ে উল্লেখিত বেশ কয়েকটি ঘটনা আগেই ফাঁস হয়ে গেছে। -বিবিসি

এরই মধ্যে জানা গেছে, বড় ভাই প্রিন্স উইলিয়াম প্রিন্স হ্যারিকে জামার কলার ধরে মাটিতে ফেলে দিয়েছিলেন। এছাড়া বইয়ে আফগানিস্তানে ২৫ জন তালেবান যোদ্ধাকে হত্যার কথাও উল্লেখ করেছেন প্রিন্স হ্যারি। স্পেনে প্রকাশিত স্প্যানিশ সংস্করণটির কিছু কিছু ‘বিস্ফোরক তথ্য’ ইংরেজিতে অনুবাদ করে প্রকাশ করছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

এখন পর্যন্ত যেসব বড় তথ্য জানা গেল—

ক্যামিলিয়াকে বিয়ে করতে বাবাকে বারণ করেছিলেন উইলিয়াম-হ্যারি : প্রিন্সেস ডায়ানার সঙ্গে বিচ্ছেদের পর বর্তমান কুইন কনসর্ট ক্যামেলিয়াকে বিয়ে করেন তৎকালীন প্রিন্স ও বর্তমান রাজা তৃতীয় চার্লস। কিন্তু ক্যামেলিয়াকে বিয়ে না করতে বাবা চার্লসকে অনুরোধ করেছিলেন হ্যারি ও উইলিয়াম। এমনকি বিয়ের আগে তারা ক্যামেলিয়ার সঙ্গে দেখাও করেছিলেন। তবে বাবার সুখের কথা চিন্তা করে তারা ক্যামেলিয়াকে মেনে নেন।

অলৌকিক শক্তিসমৃদ্ধ নারীর সঙ্গে কথা : হ্যারি তার আত্মজীবনীমূলক বইয়ে জানিয়েছেন, মা প্রিন্সেস ডায়ানার মৃত্যুর পর বেশ ভেঙে পড়েছিলেন। ওই সময় কথিত অলৌকিক শক্তিসমৃদ্ধ এক নারীর সঙ্গে দেখা করেন তিনি। ওই নারী দাবি করেছিলেন, তার বিশেষ ক্ষমতা আছে। ওই বিশেষ ক্ষমতার মাধ্যমে প্রিন্সেস ডায়ানার কাছ থেকে কিছু বার্তা পেয়েছেন। যেগুলো তিনি হ্যারিকে জানিয়েছিলেন। হ্যারি লিখেছেন ওই নারী তাকে বলেছিলেন, ‘তোমার মা বলেছেন তুমি এমন জীবন-যাপন করছ যেটি তিনি পারেননি। তুমি এমন জীবন-যাপন করছ যেটি তোমার মা চেয়েছিলেন।’ ১৯৯৭ সালে ফ্রান্সের প্যারিসে এক গাড়ি দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান প্রিন্সেস ডায়ানা। ওই সময় হ্যারির বয়স ছিল মাত্র ১২ বছর।

মায়ের মৃত্যুর পর বাবা চার্লস জড়িয়ে ধরেননি হ্যারিকে : প্রিন্স হ্যারি তার বইয়ে মায়ের গাড়ি দুর্ঘটনার কথা উল্লেখ করেছেন। তিনি লিখেছেন, বাবা চার্লস তার কাছে মায়ের দুর্ঘটনার খবর পৌঁছায়। কিন্তু ওই রকম একটি কঠিন মুহূর্তে তাকে জড়িয়ে ধরেননি বাবা চার্লস। পরবর্তীতে হ্যারি জানিয়েছিলেন, তার মা প্যারিসের যে রাস্তায় দুর্ঘটনায় পড়েছিলেন সেখানে গিয়েছিলেন তিনি। মূলত কিভাবে দুর্ঘটনা ঘটেছিল সেটি বোঝার চেষ্টা করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে যাওয়ার পর তার মায়ের মৃত্যুর যে আনুষ্ঠানিক কারণ উল্লেখ করা হয়েছিল সেটি নিয়ে তার সন্দেহ তৈরি হয়েছিল।

কলার ধরে মাটিতে ফেলে দিয়েছিলেন বড় ভাই প্রিন্স উইলিয়াম : হ্যারি তার বইয়ে দাবি করেছেন, স্ত্রী মেগান মেরকেলকে নিয়ে বড় ভাই প্রিন্স উইলিয়াম তাকে কলারে চেপে ধরে মাটিতে ফেলে দেন এবং তার গলায় থাকা চেইন টান দিয়ে ছিড়ে ফেলেন। ওই সময় মাটিতে থাকা কুকুরের খাবারের বাটিতে পড়ে পিঠে ব্যথা পেয়েছিলেন বলেও উল্লেখ করেছেন প্রিন্স হ্যারি।

যেভাবে নিজের কুমারত্ব হারিয়েছিলেন প্রিন্স হ্যারি : হ্যারি তার আত্মজীবনীমূলক বইয়ে তার কুমারত্ব হারানোর কথাও উল্লেখ করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, যখন তার বয়স ১৭ ছিল তখন নিজের চেয়ে বড় এক নারীর সঙ্গে যৌনমিলন করেছিলেন। তিনি জানিয়েছেন, বিষয়টি তার জন্য ‘অপমানজনক’ ছিল এবং ওই নারী তার সঙ্গে এমন ব্যবহার করছিলেন যেন তিনি তার ‘অবৈধ প্রেমিক’ ছিলেন।

কোকেন, গাঁজা সেবন এবং ম্যাজিক মাশরুম খাওয়া : হ্যারি জানিয়েছেন, যখন তার বয়স ১৭ ছিল তখন কেউ একজন তাকে কোকেন সেবনের আহ্বান জানিয়েছিলেন এবং সেই আহ্বানে সাড়া দিয়ে তিনি এই মাদক সেবন করেছিলেন। এরপর আরও কয়েকবার কোকেন সেবনের কথা স্বীকার করেছেন হ্যারি। যদিও এটি তার ভালো লাগেনি। এছাড়া ইটন কলেজে পড়া অবস্থায় কলেজের বাথরুমে প্রথমবার গাঁজা সেবন করেছিলেন বলেও জানিয়েছেন প্রিন্স হ্যারি। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় গিয়ে কথিত ম্যাজিক মাশরুম খেয়েছিলেন তিনি।

আফগানিস্তানে ২৫ তালেবান যোদ্ধাকে হত্যার কথা স্বীকার : আলোচিত ও সমালোচিত প্রিন্স হ্যারি তার বইয়ে উল্লেখ করেছেন আফগানিস্তানে দু’বার কথিত জঙ্গিবাদ বিরোধী অভিযানে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে হেলিকপ্টার থেকে হামলা চালিয়ে ২৫ তালেবান যোদ্ধাকে হত্যার কথার জানিয়েছেন।

বড় ভাইয়ের সঙ্গে আর কোনো দ্বন্দ্বে না জড়াতে অনুরোধ করেছিলেন বাবা চার্লস : ২০২১ সালে মারা যান প্রিন্স ও উইলিয়ামের দাদা প্রিন্স ফিলিপ। হ্যারি জানিয়েছেন, ওই সময় তার বাবা চার্লস দুই ভাইকে একসঙ্গে দাঁড় করিয়ে অনুরোধ করেছিলেন, তারা যেন আর কোনো দ্বন্দ্বে না জড়ান। হ্যারি বইয়ে লিখেছেন বাবা তাদের বলেছিলেন, ‘ছেলেরা দয়া করে…আমার শেষ বছরগুলো দুর্দশাপূর্ণ করো না।’

কী কারণে আত্মজীবনীমূলক বইয়ের নাম ‘স্পেয়ার’ দিয়েছেন প্রিন্স হ্যারি : প্রিন্স হ্যারি জানিয়েছেন, তার বয়স যখন ২০ ছিল তখন তিনি জানতে পারেন তার জন্মের পর তার বাবা মা প্রিন্সেস ডায়ানাকে বলেছিলেন, তুমি আমাকে একজন উত্তরাধিকারী (প্রিন্স উইলিয়াম) দিয়েছ, আরেকজন বাড়তি (স্পেয়ার) উত্তরাধিকারী দিয়েছ। রাজপরিবারের বড় সন্তান সিংহাসনে বসেন। আর তার পরে যেসব সন্তান জন্ম নেন তাদের স্পেয়ার হিসেবে উল্লেখ করা হয়। যদি বড় সন্তানের কিছু হয় তখন সেই বাড়তি উত্তরাধিকারী রাজ্যভার গ্রহণ করেন। আর জন্মের সময় তাকে ‘স্পেয়ার’ হিসেবে উল্লেখ করায় নিজের বইয়ের নাম স্পেয়ার দিয়েছেন প্রিন্স হ্যারি।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ