চরিত্র মানুষের শ্রেষ্ঠতম অলঙ্কার
সৃষ্টির সেরা জীব আশরাফুল মাখলুকাত- মানবজাতি। এ শ্রেষ্ঠত্ব মানুষ তার চরিত্র দিয়ে অর্জন করে নেয়।
প্রশ্ন : আমি বিয়ে করেছি আট বছর হলো। বিয়েটা ছিল আমার পছন্দের। পরে অবশ্য পারিবারিকভাবেই বিয়ে সম্পন্ন হয়। আমাদের পাঁচ বছরের একটি মেয়ে সন্তান রয়েছে। কাজের সুবাদে আমি, আমার মা, স্ত্রী আর সন্তান নিয়ে আলাদা ভাড়া বাসায় থাকি। আমার স্ত্রী একটি প্রাইভেট কলেজে শিক্ষকতা করে। সমস্যা হলো, আমার স্ত্রী সংসারের কোনো কাজ করতে চায় না। বিশেষ করে রান্না-বান্না। সব কাজ মাকেই করতে হয়। মায়ের এই কষ্ট আমি সহ্য করতে পারি না। এ ব্যাপারে স্ত্রীকে অনেক বোঝানো হলেও কোনো কাজ হয়নি। উল্টো তার সাথে ঝগড়া হয়েছে। এ অবস্থায় আমার কী করা উচিৎ?
উত্তর : প্রশ্নের বিবরণ শুনে মনে হয় আপনার স্ত্রী ঘরের কাজ বা রান্না-বান্না না করে থাকতে চান। তিনি একটি জবও করেন। আপনার সাথে বোঝাপড়ার মাধ্যমে শরিয়তের অনুগত থেকে পর্দা রক্ষা করে তিনি তা করলে করতেও পারেন। তবে, ঘরোয়া কাজকর্ম বা রান্না-বান্না যদি তিনি না করেন, তা হলে এর বিকল্প ব্যবস্থা সম্পর্কে তার তো নিশ্চয় কিছু পরামর্শ থাকবে। সেটি কি, তা তিনিই আপনাকে ভালো বলতে পারবেন। আপনারা দু’জনে পরামর্শ করে সংসারের সমুদয় কাজের ব্যবস্থা করবেন। নারীরা মমতাময়ী হওয়ায় তারা সৌজন্যমূলকভাবে নিজ সংসারে সারাজীবন অফুরন্ত কাজ করে থাকেন। আপনার স্ত্রীও এভাবে কম-বেশি কাজ করতে পারেন। নতুবা আপনি কিভাবে এসব ম্যানেজ করবেন তা বলে আপনাকে সহায়তা করতে পারেন। তবে, যে কাজটি আপনারা দু’জনের একজনও পারেন না সেটি হচ্ছে, মা’কে দিয়ে সংসারের কাজ করানো। রান্না-বান্না ও ঘরকন্যার কাজ বিবাহিত পুত্র ও পুত্রবধূওয়ালা বয়স্কা মায়ের হতে পারে না। এটি আগে বন্ধ করুন। এরপর স্ত্রীকে সংসারের ব্যাপারে সমাধান দিতে বলুন। শরিয়তে অবশ্য সংসারের সমুদয় কাজ করা স্ত্রীর ওপরও ফরজ, ওয়াজিব নয়। এর নীতিগত দায়িত্ব পুরুষের ওপর। প্রেম-ভালোবাসা মায়া-মমতা ও শ্রদ্ধাবোধ এসব ক্ষেত্রে সবাইকে কর্ম বণ্টন করে নিয়ে সংসারকে সচল রাখার পথ দেখায়। এখানে বিধান যত না কার্যকর, সামাজিকতা ও সৌজন্যবোধ তার চেয়ে বেশি ফলপ্রসূ। আল্লাহ আমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন, সুবিচার ও সৌজন্যের। যাকে আল কুরআন বলেছে, আদল ও ইহসান। এ দু’টি সমন্বয় করে আপনার স্ত্রীকেও সংসারে অংশীদার হয়ে থাকতে হবে। বাকি সমন্বয় করার দায়িত্ব আপনার। তবে, মায়ের যেন কষ্ট ও অবহেলা সইতে না হয়।
প্রশ্ন : কাহারও স্ত্রী যদি অনেক বলার পরও, বহুভাবে বোঝানোর পরও নামাজ না পড়ে, তাহলে স্বামীর কি করণীয়?
উত্তর : স্ত্রীকে নামাজের জন্য তাগিদ দেওয়া ও নানাভাবে বোঝানোর পরও যদি সে নামাজ না পড়ে, তাহলে স্বামীর আলাদাভাবে আর করণীয় কিছু থাকে না। সাবালিকা কাউকে বোঝানোর পর তার নিজের অবস্থার ওপর ছেড়ে দেওয়াই নিয়ম। আল্লাহ তার বাঁদীকে হেদায়েত ও বুঝ দান করুন, এ দোয়া করতে থাকতে হবে। নামাজের কারণে যদি স্বামী স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে সেটা সে সুন্নত মোতাবেক জ্ঞানী ব্যক্তির পরামর্শে করতে পারে। তবে এটি সংশোধনের নিয়তে হতে হবে। নামাজের বাহানায় সংসার ভাঙ্গার ইচ্ছায় নয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।