গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
রাজধানীর মিরপুরের শাহ আলী এলাকায় প্রকাশ্য দিবালোকে গুলি করে বাসু মিয়া নামে এক ব্যক্তিকে হত্যা করে আলকেস (৫২)। হত্যা দায়ে চার মাস জেল খেটে জামিয়ে মুক্তি আরও বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়েছে। তার বিরুদ্ধে আরও দুটি হত্যা মামলাসহ ডাকাতির মামলাও রয়েছে দেশের বিভিন্ন থানায়। অবশেষে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আলকেসকে প্রায় ১২ বছর পর গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
শুক্রবার রাতে বরিশাল মহানগরী এলাকা থেকে মোহাম্মদ আলকেসকে গ্রেপ্তার করা হয়।
শনিবার রাজধানীর কাওরানবাজার মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব-৪ এর অধিনায়ক মোজাম্মেল হক।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব জানায়, হত্যাকাণ্ডের শিকার বাসু মিয়া ও তার বড় ভাই চিনু মিয়ার নামে শাহ আলী থানা এলাকার নবাবেরবাগের চটপারি এলাকায় ১০ শতাংশের একটি পৈত্রিক সম্পত্তি ছিল। যা আজগর আলী নামে এক ব্যক্তির কাছে বাৎসরিকভাবে লিজ দেয়া ছিল। কিন্তু এক সময় আসামি আজগর আলী প্রতারণা মূলকভাবে জাল দলিল করে নিজের নামে নিয়ে নেয় এবং পরবর্তী সময়ে ২০১০ সালে অবৈধভাবে স্থানীয় একটি মৎস্যজীবী সমিতির নামে হস্তান্তর করে। জমির মালিকানা নিয়ে চিনু এবং বাসু মিয়ার সঙ্গে সেই সমিতির বিরোধের সৃষ্টি হয়।
২০১২ সালের ১৪ মে বাসু মিয়া তাদের নবনির্মিত বিল্ডিংয়ের ছাদে পানি দিতে গেলে সমিতির সদস্য আলকেস, আজগর, রাজু, খলিল, সেলিম, কদম আলী ও লেবুসহ ৬-৭ জন আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তার ওপর হামলা চালায়। এ সময় আসামি আলকেসের কাছে থাকা অবৈধ অস্ত্র দিয়ে গুলি করলে বাসুর মাথার বাম পাশে লাগে এবং ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
পরবর্তী সময়ে আলকেসসহ ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে শাহ আলী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। আদালত বিচার শেষে ২০২১ সালের ১৫ নভেম্বর আসামি আলকেস, আজগর আলী, খলিল, সেলিম ও রাজ নামের ৫ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড এবং কদম আলী ও লেবুকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়।
র্যাব-৪ এর অধিনায়ক মোজাম্মেল হক বলেন, আসামি আলকেসের বিরুদ্ধে বাসু হত্যা মামলা দায়ের পর চার মাস জেল খেটে জামিনে বের হয়ে অবৈধভাবে বালু ব্যবসা শুরু করে আলকেস। এই ব্যবসা করতে গিয়ে বাসু হত্যা মামলার আসামি আজাহার ও শানুর সঙ্গে বিরোধ সৃষ্টি হয় তার। পরে সেই বিরোধের জেরে সাভার এলাকায় নির্মমভাবে শানু ও আজহারকে হত্যা করা হয়। এই মামলাতেও আকলেস সাভার থানায় ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক আসামি।
এছাড়াও শাহ আলী থানায় ডাকাতি মামলার ওয়ারেন্টুক্ত পলাতক আসামি সে। মামলায় গ্রেপ্তার এড়াতে সে নিজে আত্মগোপনে চলে যায়। ১২ বছর ধরে ঠিকানা পরিবর্তন করে, বিভিন্ন ছদ্মবেশ ধারণ করে দেশের বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান করছিল সে।
র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, একপর্যায়ে বরিশাল গিয়ে ট্রাকে চালকের হেলপার হিসেবে কাজ শুরু করে। পরে ড্রাইভার হিসেবেও কাজ করার সুযোগ হয় তার। এই পেশাতে এসেও বেপরোয়াভাবে বাস চালানোর সময় সিলেটে তার বাসের নিচে চাপা পড়ে একজন নিহত হয়। এ ঘটনায় সিলেটের ওসমানী থানায় তার বিরুদ্ধে আরও একটি হত্যা মামলা হলে সে পালিয়ে কুয়াকাটা মাছ ধরা ট্রলারে কাজ শুরু করে।
সেখান থেকে পরে ফিরে এসে গ্রেপ্তারের আগ পর্যন্ত আসামি আলকেস গত দেড় বছর ধরে একটি দূরপাল্লার পরিবহনের ড্রাইভার হিসেবে কাজ করে আসছিল বলেও জানান র্যাব-৪ এর অধিনায়ক মোজাম্মেল হক।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।