Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সরকারকে রক্ষার দায়িত্ব প্রশাসনের নয়: গয়েশ্বর

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৫:২৭ পিএম

সরকারকে রক্ষার দায়িত্ব প্রশাসনের নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনি বলেন, যারা প্রশাসনে আছেন সরকারের অংশীদার অথবা এই লুটপাটের অংশীদার অথবা কিছু পাইছেন তাদেরকে বলব আপনাদের চাকরি যাবে না। এখন থেকে সরকারের কোনো কাজ নেই। যাবেন না। আপনার যেটা স্বাভাবিক দায়িত্ব সেই স্বাভাবিক কাজটা করেন। সরকার রক্ষা করার দায়িত্ব প্রশাসনের পোষাকধারী অথবা পোষাক ছাড়া যেই হোন কেনো, এখনো সময় আছে জনগণের পক্ষে আসুন। আপনাদের চাকরি আপনারাই করেন, আমরা কেউ ওখানে চাকরি করতে যাবো না। কিন্তু যে সরকারকে জনগণ চায় না, সেই সরকারকে টিকিয়ে রাখার ক্ষেত্রে সে যেই হোক তাকে ছাড় দেয়ার সুযোগ থাকবে না।

বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে স্বাধীনতা ফোরামের উদ্যোগে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মরহুম শাহ মোয়াজ্জেম হোসেনের স্মরণে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

সরকার পতনের সকল বিরোধী রাজনৈতিক দলকে নিয়ে যুগপৎ আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, সবাই আমরা একটা জায়গায় আসছি। আজকে সবাইকে মিলে দেশটা উদ্ধার করতে হবে, আবার সবাই মিলে রাষ্ট্রকে মেরামত করতে হবে। আসুন সর্বপ্রথম আমরা একটা জায়গায় আসি সরকারটাকে হটানো, একটা সুষ্ঠু নির্বাচন আদায় করার ক্ষেত্রে। আর নয়। এনাফ ইজ এনাফ-এই সরকারকে বিদায় করতে হবে। যে সরকারকে জনগণ চায় না, এমন সরকার আর ক্ষমতায় থাকবে না।

তিনি বলেন, বিএনপি জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার চেষ্টা করছে বিএনপি। যুগপৎ কিংবা যে পন্থায় হোক ঐক্য গড়ে তোলা হবে। ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনার দাবি আদায়ে খুব শিগগিরই এই বিষয়ে সুরাহা হবে। জাতীয় ঐক্যের মধ্য দিয়ে সরকারের পতন নিশ্চিত করা হবে। প্রথমে সরকার পতনের মাধ্যমে নির্বাচন আদায় করা হবে। এরপর আগামীর রাষ্ট্র মেরামতে ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সবাই মিলে সরকার হটিয়ে জবাবদিহিমূলক সরকার গঠন করা হবে। রাষ্ট্রের অনেক সংস্কার করা প্রয়োজন। এজন্যে সম্মিলিত প্রয়াস প্রয়োজন।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, একটি দেশ ও জাতি যখন বিপদগ্রস্ত হয়ে পড়ে তখন দেশের সমগ্র মানুষ ঐক্যবদ্ধ একটি প্রচেষ্টা চালায়। অতীতে যতবার জাতীয় ঐক্য গড়ে উঠেছে সেই জাতীয় ঐক্য কখনো বৃথা যায়নি, জাতীয় ঐক্যের প্রাপ্ত ফসল কার গোলায় গেছে সেটা হচ্ছে বড় কথা। তাই এবার জাতীয় ঐক্যের ফসল যাতে জনগণের গোলায় যায় সেই চিন্তা ভাবনা বিএনপি করছে। ইতিমধ্যে আপনারা জাতীয় ঐক্যের বিষয় শুনেছেন। আমিও আমার দলের পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করতে চাই যে, একসঙ্গে পথ চলা পাশাপাশি পথ চলা অথবা আলাদা আলাদা মঞ্চে আলাদা আলাদা রাস্তায় আমরা একযোগে কাজ করতে চাই। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা জনগণের ইচ্ছায় সেটা হতে পারে যুগপৎ। সেটা হতে পারে কখনো কখনো আলাদাভাবে আন্দোলন। কখনো কখনো একসঙ্গে এক মঞ্চে আন্দোলন। আমরা যদি দেশে একটি অবাধ সুস্থ গ্রহণযোগ্য নির্বাচন এবং ফ্যাসিবাদী সরকারকে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে সরাতে চাই তাহলে ন্যূনতম কর্মসূচির ভিত্তিতেই আমরা যে ধরনের আলোচনা করছি সেটা খুব শিগগিরই অগ্রসর হবে। পাশাপাশি আরেকটি একটি কথা আছে। অতীতের যে তিক্ততা- যে প্রতারণা সেজন্য জাতীয় রূপরেখায় জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদী সরকারের পতন নিশ্চিত করতে কাজ করা হচ্ছে। আমরা এর মাধ্যমে পরে রাষ্ট্রের গুণগত পরিবর্তন করতে চাই। তাহলে আমরা চূড়ান্ত রায়ের আগেই পারব কিন্তু সাজানো গোছানো নিয়ে যদি দ্বিমত দেখা দেয় তাহলে সেটা সম্ভব নয়।

তিনি বলেন, স্বৈরাচারেরও কিছু না কিছু লজ্জাবোধ থাকে। কিন্তু আজকের এই লুণ্ঠনকারী সরকার তারা বুক টান করে কথা বলে। যারা ক্ষমতায় থাকে সম্পদ লুণ্ঠনে ব্যস্ত থাকে তাদের চোখে ছানি পড়েছে, তারা চোখে কিছু দেখে না। এই সরকার এককভাবে ক্ষমতায় থাকতে তারা যে লুণ্ঠনকারীর ভূমিকায় নেমেছে- তাদের পরিণতি কী হবে আমি বলতে পারব না। তবে ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় নৈতিক অবক্ষয়, দাম্ভিকতা, অহংকার ও লুণ্ঠনকারী জনগণকে প্রতারণা করার ফলাফল অত্যন্ত ভয়ানক হয়েছে। এমন ভয়ানক হয়েছে যে, মৃত্যুর পরেও মানুষ কাঁদতে ভয় পেয়েছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই নেতা বলেন, আজকের মানুষকে জঙ্গীবাদের তকমা দেওয়া হয়, হত্যা করা হয়। জঙ্গীবাদকে ব্যবহার করে কিংবা জঙ্গীবাদের অজুহাতে যারা দেশটাকে লুটপাট করছে, তাদের বিরুদ্ধেও রুখে দাঁড়াতে হবে।

সংগঠনের সভাপতি আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ‘র সভাপতিত্বে এবং ইশতিয়াক আহমেদ বাবুল ও সহিদ হাসান মিন্টুর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মাহবুবউল্লাহ, বিএনপির মনিরুল হক চৌধুরী, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, জাতীয় দলের সৈয়দ এহসানুল হুদা, এলডিপির শাহাদাত হোসেন সেলিম, উলামা দলের শাহ নেসারুল হক, তাঁতী দলের কাজী মনিরুজ্জামান প্রমূখ নেতারা বক্তব্য রাখেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: গয়েশ্বর

২২ সেপ্টেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ