Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কিছুক্ষণের মধ্যেই রানির শেষকৃত্য শুরু হচ্ছে- কখন, কোথায়, কী ঘটবে?

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ২:৩২ পিএম | আপডেট : ৭:১১ পিএম, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২

লন্ডনের কেন্দ্রস্থলের ওয়েস্টমিনস্টার হলে রানির রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শায়িত অবস্থা আজ শেষ হয়েছে। কিছু দূরে ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবের দরজা খুলে দেয়া হয়েছে যাতে বাংলাদেশ সময় বিকাল ৪টায় শেষকৃত্যানুষ্ঠানের আমন্ত্রিত অতিথিরা সেখানে এসে প্রবেশ করতে শুরু করতে পারেন।

বিকাল ৩টা ৪৪মিনিট

এই সময়ে এসে দিনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। রানির কফিন ক্যাটাফাল্ক থেকে সরিয়ে নেয়া হবে। চারদিন ধরে তিনি এখানে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শায়িত আছেন। কফিনটি এরপর নেয়া হবে ওয়েস্টমিনিস্টার অ্যাবেতে শেষকৃত্য অনুষ্ঠানের জন্য। রাজপরিবারের সিনিয়র সদস্যরা, তাদের মধ্যে নতুন রাজা, তার ছেলে প্রিন্স উইলিয়াম এবং প্রিন্স হ্যারি গান ক্যারিজ বা কামানবাহী গাড়িকে পদব্রজে অনুসরণ করবেন। এই গাড়িতে রানির কফিন নিয়ে যাওয়া হবে। স্কটল্যান্ড এবং আয়ারল্যান্ড রেজিমেন্টের পাইপ এবং ড্রামবাদক দল এই শোভাযাত্রার অগ্রভাগে থাকবে। আরো থাকবে রয়্যাল এয়ার ফোর্স এবং গোর্খা সদস্যরা।

বিকাল ৪টা

রানির শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে আশা করা হচ্ছে দুই হাজার অতিথি থাকবেন ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে। এটা একটা রাষ্ট্রীয় শেষকৃত্য অনুষ্ঠান। এই ধরণের অনুষ্ঠান সাধারণত রাজা অথবা রানির জন্য করা হয়। এসব অনুষ্ঠানে কঠোর নিয়ম, রীতিনীতি মানতে হয় - যেমন সেনাবাহিনীর অংশগ্রহণে শোভাযাত্রা এবং রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শায়িত রাখা। ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবে একটা ঐতিহাসিক গির্জা। এখানেই ব্রিটেনের রাজা এবং রানিদের অভিষেক হয়।

এখানেই ১৯৫৩ সালে রানির অভিষেক হয়েছিল। এই গির্জাতেই তৎকালীন প্রিন্সেস এলিজাবেথ ১৯৪৭ সালে প্রিন্স ফিলিপকে বিয়ে করেন। আঠারো শতকের পর এখানে কোন রাজার শেষকৃত্য হয়নি। যদিও ২০০২ সালে রানির মায়ের শেষকৃত্য এখানেই হয়েছিল। এই রাষ্ট্রীয় আয়োজন পরিচালনা করবেন ওয়েস্টমিনস্টারের ডিন ডেভিড হয়েল। সঙ্গে থাকবেন ক্যান্টারবারির আর্চবিশপ জাস্টিন ওয়েলবি। প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাসও ধর্মগ্রন্থ থেকে পাঠ করবেন।

বেলা ৪টা ৫৫মিনিট

শেষকৃত্যের শেষের দিকে সংক্ষেপে বিউগলের সুর বাজানো হবে এরপর দুই মিনিট জাতীয়ভাবে নীরবতা পালন করা হবে। জাতীয় সঙ্গীত এবং রানির বাঁশীবাদক দল বিষাদের সুর তুলবেন। এরই মধ্যে দিয়ে দিনের মধ্যভাগে শোকসভা শেষ হবে।

দুপুর ৫টা ১৫মিনিট

রানির কফিন নিয়ে একটা শোভাযাত্রা হেঁটে হেঁটে ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবে থেকে ওয়েলিংটন আর্চ, লন্ডনের হাইড পার্কের কোনায় যাবে। এই রাস্তায় সেনাবাহিনীর সদস্য ও পুলিশ লাইন ধরে দাঁড়িয়ে থাকবে। বিগ বেন থেকে এক মিনিট পর পর ঘণ্টা ধ্বনি করা হবে। শোভাযাত্রাটি খুব ধীরে ধীরে রাজধানীর রাস্তা দিয়ে যাবে।

হাইড পার্ক থেকে প্রতি মিনিটে তোপধ্বনি করা হবে। সাধারণ মানুষ এই শোভাযাত্রা কয়েকটি নির্দিষ্ট স্থান থেকে দেখতে পাবেন। এই শোভাযাত্রাটি রয়েল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশ নেতৃত্ব দেবে। শোভাযাত্রাটি সাতটা ভাগে থাকবে। প্রতিটা ভাগের অগ্রভাগে থাকবে আলাদা বাদকদল। যুক্তরাজ্য এবং কমনওয়েলথের সৈন্যবাহিনী শোভাযাত্রায় থাকবে। পুলিশ, ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস এর সঙ্গে যুক্ত থাকবে। রাজা আরো একবার রাজপরিবারের সদস্যদের নেতৃত্ব দেবেন। কুইন কনসর্ট ক্যামিলা, প্রিন্সেস অব ওয়েলস, কাউন্টেস অব ওয়েসেক্স এবং ডাচেস অব সাসেক্স শোভাযাত্রায় অংশ নেবেন গাড়ীতে চড়ে।

সন্ধ্যা ৬টা

ওয়েলিংটন আর্চে দুপুর একটার সময় (বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬টা) নতুন একটা রাষ্ট্রীয় শবযানে কফিনটি নেয়া হবে উইন্ডসর ক্যাসেলের দিকে শেষযাত্রার উদ্দেশ্যে। এই প্রাসাদটি প্রায় এক হাজার বছর ধরে ৪০ জন রাজা উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছেন, আর রানির কাছে জীবনভর এটার একটা বিশেষ তাৎপর্য ছিল। কিশোরী বয়সে তাকে এখানে পাঠানো হয়েছিল, কারণ লন্ডনে বোমাবর্ষণের আতঙ্ক ছিল। আর সাম্প্রতিক সময়ে করোনাভাইরাস মহামারির সময় তিনি এখানে স্থায়ীভাবে থাকছিলেন।

রাত ৮টা

উইন্ডসর ক্যাসেলের প্রবেশের জন্য ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ লং ওয়াক-এ নামে আরেকটি শোভাযাত্রায় অংশ নেবে শবযান। এই সড়কের দুধারে সেনাসদস্যরা দাঁড়িয়ে থাকবেন। সাধারণ মানুষদের শোভাযাত্রা দেখার জন্য লং ওয়াকে প্রবেশাধিকার দেয়া হবে। আশা করা হচ্ছে পরের দিকে রাজা এবং রাজপরিবারের সিনিয়র সদস্যরা উইন্ডসর ক্যাসেলের ভিতর কোয়ার্ডরেঙ্গেলের কর্টেজে যোগ দেবেন। প্রাসাদের সেবাস্টোপোল এবং কারফিউ টাওয়ারের ঘণ্টা প্রতি মিনিটে বাজানো হবে। প্রাসাদের প্রাঙ্গনথেকে তোপধ্বনি করা হবে।

রাত ৯টা

সেন্ট জর্জেস চ্যাপেলে কফিনটি নেয়া হবে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার জন্য। রাজপরিবারের সদস্যদের বিয়ে, দীক্ষা এবং শেষকৃত্য হয় এই গির্জায়। এখানেই ডিউক এবং ডাচেস প্রিন্স হ্যারি ও মেগানের বিয়ে হয়েছিল ২০১৮ সালে। রানির প্রয়াত স্বামী প্রিন্স ফিলিপের শেষকৃত্য হয়েছিল এখানে। অপেক্ষাকৃত কম মানুষ সমবেত হবেন এখানে। অনেকটা ব্যক্তিগত ধর্মসভা করা হবে যেখানে প্রায় আটশ অতিথি থাকবেন।

এই ধর্মসভা উইন্ডসরের ডিন ডেভিড কনার পরিচালনা করবেন। ক্যান্টারবারির আর্চবিশপ জাস্টিন ওয়েলবির আশীর্বাদ নিয়ে সভাটি হবে। রানির রাজত্বের শেষ হিসেবে নানা ঐতিহ্য প্রতীকী হিসেবে স্মরণভায় উপস্থাপন করা হবে। এসময় রানির মুকুট, রাজকীয় গোলক ও রাজদণ্ড শেষবারের মত সরিয়ে নেয়া হবে কফিন থেকে। এসময় আরো কিছু আনুষ্ঠানিকতার পরা রানির কফিন রয়েল ভল্টে নামানো হবে। বাঁশীবাদক দল প্রার্থনা এবং 'গড সেভ দ্যা কিং' গাইবেন। বাকিংহাম প্রাসাদ থেকে বলা হয়েছে বাঁশীবাদক দলের এই পারফরমেন্স রানি ব্যক্তিগতভাবে অনুরোধ করে গিয়েছেন।

রাত ৯টা ৩৫ মিনিট

শেষকৃত্য অনুষ্ঠান শেষ হবে। রাজা এবং রাজপরিবারের সদস্যরা চ্যাপেল ছেড়ে যাবেন।

রাত সাড়ে ১২টা

পারিবারিক ও ঘনিষ্ঠজনদের উপস্থিতিতে সেন্ট জর্জেস চ্যাপেলের অভ্যন্তরে অবস্থিত রাজা ষষ্ঠ জর্জ মেমোরিয়াল চ্যাপেলে রানিকে তার প্রয়াত স্বামী ডিউক অব এডিনবরার সাথে সমাহিত করা হবে। তার সমাধির উপর মার্বেলের ফলকে খোদাই করে লেখা থাকবে "দ্বিতীয় এলিজাবেথ ১৯২৬-২০২২"। সূত্র: বিবিসি।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: লন্ডন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ