নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
ওয়াহেদ আহমেদ, বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক তারকা খেলোয়াড়। যিনি ক্যারিয়ারের শুরুতেই মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব ও ঢাকা আবাহনী লিমিটেডের মতো বড় দলের হয়ে খেলে ঢাকার মাঠ মাতিয়েছে। সাদাকালোদের হয়ে জিতেছেন ‘কোটি টাকার’ টুর্নামেন্ট সুপার কাপ। সেই ওয়াহেদ এখন আছেন ইস্ট লন্ডনে। ২০১৭ সালে দেশের ফুটবলকে বিদায় জানিয়ে চলে আসেন লন্ডন। সেই থেকে এখানেই ব্যস্ত জীবন কাটাচ্ছেন এই ফুটবলার। তবে ব্যবসা ও চাকুরি করার পাশাপাশি ফুটবলকেও সময় দেন তিনি।
দেশের ফুটবলকে ‘না’ বললেও লন্ডনে কিন্তু শত ব্যস্ততার মাঝেও এক মূহূর্তের জন্য ফুটবলকে ভুলে থাকেন নি ওয়াহেদ। ৩৫ বছর বয়সী এই ফুটবলার এখানকার লন্ডন এফসির নিয়মিত খেলোয়াড়। এটি বাংলাদেশের সোনালী অতীত ক্লাবের মতই। এখানকার বেশিরভাগ খেলোয়াড়ই ৩৫ বছরের উর্ধ্বে। এখানকার সবাই ক্যানারি অফের খেলোয়াড় হিসেবে খেলছে। লন্ডনেও হয় বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) খেলা। এই লিগে ১৩ দল খেলে থাকে। এখানে বাংলাদেশের মতই সাত স্থানীয় ও চারজন বিদেশি খেলোয়াড় খেলতে পারে। এই লিগে ওয়াহেদ খেলে থাকেন পিওয়াইও এফসি দলের হয়ে। লন্ডন বিপিএলের খেলা হয় শুধুমাত্র সামারে। সপ্তাহে একদিন (রোববার) অনুষ্ঠিত হয় এই লিগের খেলা। সব মিলিয়ে ১২টা ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। ম্যাচগুলো হয় ৭০ মিনিটের।
লন্ডনে কেমন কাটছে ওয়াহেদের জীবন? কি করছেন এখানে, দেশের ফুটবলকে কি ভুলে গেছেন? এমন সব প্রশ্ন নিয়ে বুধবার বিকালে লন্ডন টাওয়ার ব্রিজে ওয়াহেদের মুখোমুখী হলে তিনি বলেন, ‘প্রায় পাঁচ বছর হয়ে গেছে এখানে আসা। আসলে এই দেশের আবহাওয়া সবকিছু খুবই সুন্দর। আর এখন আপনারা দেখতেছেন টাওয়ার ব্রিজের সামনে বসে আছি। এখানে খুবই ভাল আছি।’ ওয়াহেদ যোগ করেন, ‘আসলে সত্য কথা বলতে বাংলাদেশের ফুটবলটা আসলে খুব মিস করতেছি। যখন খুব ছোট ছিলাম, তখন পরিবারের ইচ্ছে ছিল আমাকে ফুটবলার বানানোর। আমারও স্বপ্ন ছিল আবাহনী-মোহামেডান দুটো টিমে খেলব। আল্লাহ আমার এই স্বপ্নটাকে পূরণ করেছেন। আমি জাতীয় দলেও খেলেছি। হয়তো বা আমার স্বপ্নটা বেশি দীর্ঘায়িত করার কথা ছিল, কিন্তু নানা কারণে তা করতে পারেনি। বলতে পারেন অনেকটা অভিমান করেই লন্ডনে চলে এসেছি। অভিমানটা আসলে কি তা এখন আর বলতে চাই না। অভিমানটা নিজের মধ্যেই রাখতে চাই। আমি চাই সবার সঙ্গে আমার ভালো সম্পর্ক থাকুক।’
এখানে কীভাবে ফুটবলের সঙ্গে আছেন? এই প্রশ্নে ওয়াহেদের উত্তর,‘এখানকার বাংলাদেশের প্রিমিয়ার লিগে খেলতেছি এবং আমি লন্ডন এফসির সঙ্গে আছি। তারা প্রতি বছর একটা বা দুটো ট্যুর করে।’ লন্ডনের বিপিএল সর্ম্পকে তিনি বলেন, ‘এদেশে প্রিমিয়ার লিগে সাতটি বাংলাদেশি বংশদ্ভুত এবং চারটি বিদেশি খেলোয়াড় খেলতে পারে। লিগটা শুধু সামারে হয়। টিমগুলো লন্ডন বেসড। বেশিরভাগ খেলোয়াড়ই লন্ডনের।’ ভবিষ্যতে বাংলাদেশে কোনো কিছু করার ইচ্ছে আছে কিনা? এ সম্পর্কে ওয়াহেদ জানান, এ ব্যাপারে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেননি। মোহামেডান-আবাহনীর জন্য খারাপ লাগে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমার ক্যারিয়ারের শুরুটা মোহামেডানে। সেই দলটির প্রতি আমার অন্যরকম মায়া আছে। আর মোহামেডানে খেললেও আবাহনীর সমর্থক ছিলাম আমি। দুটো টিমেই আমার অন্তরে আছে। যখনই দুটি টিম ভাল করে, তখন অনেক ভালো লাগে। খারাপ করলে কষ্ট লাগে।’
দেশের ফুটবল সর্ম্পকে ওয়াহেদ বলেন, ‘আমাদের পাইপলাইনের প্লেয়ারগুলো অনেক কম। প্রতিটি টিমে যদি একটা দ্বিতীয় দল থাকে, তাহলে অনেক ফুটবলার উঠে আসবে। এদেশে অনূর্ধ্ব-১৬, ১৭ অনেকগুলো টিম আছে। এখানে প্রতিটি ক্লাবেই বয়সভিত্তিক পর্যায়ের দল আছে।’ লন্ডনে এসে ভুল করেছেন কী? এই প্রশ্নের উত্তরে ওয়াহেদ বলেন, ‘না, ভুল করিনি। দেশের বর্তমান সামাজিক পরিস্থিতি ও ফুটবলের অবস্থান নিয়ে খুবই হতাশ আমি। অবশ্য প্রথম যখন এসেছিলাম, তখন অনেক খারাপ লাগছিল। এখন অ্যাডজাস্ট হয়ে গেছি। তবে সবকিছুর মাঝে বাংলাদেশের ফুটবল এবং নিজের ওয়াহেদকে মিস করি।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।