গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী না হয়েও ভুয়া পরিচয় বিহীন করে গত তিন বছর ধরে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে ক্লাস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে আসছিলো সাজিদ উল কবির নামে এক যুবক। বুধবার (২৪ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাকে অছাত্র ও বহিরাগত হিসেবে শনাক্ত করে শাহবাগ থানায় হস্তান্তর করে।
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের একাধিক শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সাজিদ উল কবির নামের ওই ছেলেটি যার নামে পরীক্ষা দিতো সে মেডিকেলে সেকেন্ড টাইমে চান্স হওয়ার পর চলে যায়। তার রোল ব্যবহার করে ইনকোর্স পরীক্ষা দিতো ছেলেটি। কিন্তু ফাইনাল পরীক্ষা দিতো না। আজকে (বুধবার) ষষ্ঠ সেমিস্টারের একটি কোর্সের ইনকোর্স পরীক্ষা চলাকালে ২ জন শিক্ষক এসে তাকে জেরা করে। পরে আরো কয়েকজন শিক্ষক এসে তার বিস্তারিত জানতে চাইলে পর্যাপ্ত ডকুমেন্ট দিতে পারেনি ছেলেটি। পরে তাকে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও প্রক্টরিয়াল টিম এসে নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. তাসনিম সিদ্দিকী বলেন, আমাদের প্রায় দুইশত স্টুডেন্ট শ্রেণিকক্ষে ক্লাস করতে আসে। সবাইকে কিন্তু আইডি চেক করে ক্লাসে ঢুকানো সম্ভব না। তাই এটি কারও পক্ষে খেয়াল করা সম্ভব না। তাছাড় ইনকোর্স পরীক্ষাগুলোতে সাধারণত রোল নম্বর দিয়ে পরীক্ষা নেওয়া হয়। এইবার কোনো একটা বিষয়ে শিক্ষকদের খটকা লেগেছে দেখে বিষয়টা তাদের নজরে আসে। ফাইনাল পরীক্ষায় গিয়ে নাম রোল সবকিছু বিষয়ে হালনাগাদ আসে কিন্তু ছেলেটি তাতে অংশগ্রহণ করত না। অন্যের রোল নম্বর ব্যবহার করে ছেলেটি ইনকোর্স পরীক্ষায় অংশ নিত। এরই মাঝে শিক্ষকরা যথেষ্ঠ খেয়াল করেছেন দেখে ছেলেটি ধরা পড়েছেন বলে জানান তিনি।
তিনি আরো বলেন, প্রাথমিকভাবে আমরা তাকে আমাদের বিভাগের ছাত্র নয় বলে শনাক্ত করেছি। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিস ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের অফিসের প্রতিনিধিদের কাছে তাকে হস্তান্তর করা হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর (সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ) আবু হোসেন মুহম্মদ আহসান বলেন, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের একটি কোর্সের পরীক্ষা চলাকালীন বিভাগের শিক্ষকদের অভিযোগের ভিত্তিতে আমি এবং পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিসের দুজন কর্মকর্তা সংশ্লিষ্ট বিভাগে যাই। এরপর তাকে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের অফিসে হস্তান্তর করা হয়। সেখানে যাচাই-বাছাই করে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিস থেকে জানানো হয় তার ছাত্রত্বের কোনো ডকুমেন্ট সেখানে নেই এবং ওই যুবকও তার ছাত্রত্বের কোনো ডকুমেন্ট দেখাতে পারেনি।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, ওই যুবকের নানা তৎপরতা দেখে বিভাগ থেকে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়। অভিযোগ গুলো বিভাগ, অনুষদের ডিন, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক সমন্বিতভাবে যাচাই বাছাই করে তাকে অছাত্র ও বহিরাগত হিসেবে শনাক্ত করা হয়। ছেলে নিজেও স্বীকার করেছে ভর্তি পরীক্ষা দিলেও সে তাতে উত্তীর্ণ হয়নি। এরপর থেকে সে ওই বিভাগে বিভিন্ন সময় ক্লাস পরীক্ষা দিলেও আজকে (বুধবার) হাতে নাতে ধরা পরে। যেহেতু সে কোনো ছাত্রত্বের ডকুমেন্টস দেখাতে পারেনি আর আমরাও কোনো ডকুমেন্টস পাইনি তাই তাকে অছাত্র ও বহিরাগত হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে। আরো কোনো উদ্দেশ্য আছে কিনা তা তদন্তের জন্য তাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এ বিষয়ে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মওদূত হাওলাদার বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একজনকে আমাদের কাছে হস্তান্তর করেছে। আমরা তদন্ত করবো এই বিষয়ে। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও আমাদের তদন্তের ফলাফল অনুযায়ী সমন্বয় করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।