Inqilab Logo

রোববার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

ইয়াবার নতুন রুট দক্ষিণাঞ্চল

বরগুনা যাওয়ার পথে উদ্ধার ৭ লাখ পিস

| প্রকাশের সময় : ৩০ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

রফিকুল ইসলাম সেলিম : নেশার ট্যাবলেট ইয়াবা পাচারের নতুন রুট এখন দেশের দক্ষিণাঞ্চল। রোহিঙ্গা ইস্যুতে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার উপকূলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কড়া নজরদারির কারণে চতুর পাচারকারী চক্র নতুন এ রুট নির্ধারণ করেছে।
মিয়ানমার থেকে সরাসরি ট্রলারে বঙ্গোপসাগর হয়ে এসব চালান চলে যাচ্ছে বরিশাল ও আশপাশের জেলায়। আর সেখান থেকে তা রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করা হচ্ছে।
সোমবার গভীর রাতে বরগুনাগামী একটি মাছ ধরা ট্রলার থেকে ৭ লাখ ইয়াবার একটি বড় চালান আটক করে এলিট বাহিনী র‌্যাব। চালানের সাথে আটক ৭ জনের কাছ থেকে নতুন গন্তব্য সম্পর্কে চাঞ্চ্যকর তথ্য পাওয়া গেছে।
র‌্যাব-৭ চট্টগ্রামের পরিচালক লে. কর্নেল মিফতাহ উদ্দিন আহমদ বলেন, দীর্ঘ দিন থেকে মিয়ানমারের তৈরি ইয়াবা পাচার করে আসছে দুই দেশের সংঘবদ্ধ কয়েকটি মাদক ব্যবসায়ী চক্র। মাছের ব্যবসার আড়ালে ইয়াবার চালান মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে নিয়ে আসে।
তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে র‌্যাব-৭ চট্টগ্রাম সমুদ্রে টহল জোরদার করে টেকনাফ থেকে চট্টগ্রাম রুটে অভিযান চালিয়ে ইয়াবার বেশ কয়েকটি বড় বড় চালান আটক করে। এ জন্য মাদক ব্যবসায়ীরা বর্তমানে তাদের রুট পরিবর্তন করে ইয়াবার চালান চট্টগ্রামে না এনে মিয়ানমার থেকে সরাসরি গভীর সমুদ্রের মাঝ দিয়ে বরিশাল, বরগুনা এবং পটুয়াখালীসহ দেশের দক্ষিণাঞ্চলের উপকূলীয় এলাকায় নিয়ে যাচ্ছে। পরে সেখান থেকে দেশের সর্বত্র সরবরাহ করছে।
এমন তথ্য নিশ্চিত হয়ে র‌্যাব নতুন ওই রুটে নজরদারি শুরু করে। এর ধারাবাহিকতায় র‌্যাব-৭ চট্টগ্রাম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে, একটি মাদক সিন্ডিকেট ফিশিং ট্রলারের অন্তরালে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা নিয়ে মিয়ানমার থেকে বরগুনার পাথরঘাটার দিকে যাত্রা করছে।
ওই তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব-৭ চট্টগ্রামের পরিচালকের নেতৃত্বে র‌্যাবের একটি চৌকস আভিযানিক দল চট্টগ্রামের গভীর সমুদ্রে একটি মাছ ধরার ট্রলারকে ধাওয়া করে আটক করে। পরবর্তীতে আটককৃত ট্রলার এমভি রিফায় তল্লাশি করে ট্রলারের পাটাতনের নিচে সুকৌশলে লুকানো ৭ লাখ পিস ইয়াবা উদ্ধার করে। এ সময় ৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
র‌্যাব জানায়, এ চক্রটি গত কয়েকদিনে বড় ধরনের তিনটি চালান সরাসরি বরিশাল অঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় নিয়ে খালাস করেছে। আটকৃতরা স্বীকার করে তারা এ পর্যন্ত মোট তিন বারে ২ লাখ করে মোট ৬ লাখ ইয়াবা মিয়ানমার থেকে বরিশালে নিয়ে আসে।
৭ লাখ ইয়াবার এচালানটি ছিল তাদের চতুর্থ চালান। জব্দ ইয়াবার দাম প্রায় ২৮ কোটি টাকা। আটককৃতরা জানায়, এসব ইয়াবার মালিক কক্সবাজার জেলার টেকনাফের ম-লপাড়ার গোলাপ হোসেনের পুত্র মো: ফারুক (২৯)। তার ব্যবসায়িক অংশীদার একই থানার সাবরাং এলাকার পানছড়ি গ্রামের অলি আহম্মদের পুত্র আবুল কালাম (৩০)।
ইয়াবাসহ গ্রেফতার ৭ জনের মধ্যে ৪ জন মিয়ানমারের বাসিন্দা বলে জানায় র‌্যাব। গ্রেফতার সাত জন হলোÑ মো: ফারুক, নবী হোসেন, মো: ইসহাক, শরিফ হোসেন, মো: ফারুক, মো: সামশুল আলম ও নুরুল আমীন। র‌্যাব জানায়, এদের মধ্যে নবী হোসেন বরগুনায় বিয়ে করে। তার শশুরবাড়ির লোকজনও মাদক পাচারের সাথে জড়িত।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশকে টার্গেট করে মিয়ানমারের ছোট-বড় অর্ধশতাধিক ইয়াবার কারখানা গড়ে উঠেছে। এসব কারখানায় তৈরি ইয়াবার চালান ঠেলে দেয়া হচ্ছে দেশে।
র‌্যাব-৭ চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ৬৭ লাখ ৮৫ হাজার ৭৮২ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করে। পুলিশ, কোস্টগার্ড, নৌবাহিনীর হাতেও ধরা পড়েছে বিপুল সংখ্যক ইয়াবার চালান। দেশের সর্বত্রই এখন ইয়াবার আগ্রাসন চলছে। ইয়াবা আসক্ত হচ্ছে তরুণ-তরুণী থেকে শুরু করে শিশু-কিশোরেরাও। মাদকাসক্তির সাথে বাড়ছে অপরাধ প্রবণতা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইয়াবার

৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৬
৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ