Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কুমিল্লায় মরণ নেশা ইয়াবার ছোবল : বিষে নীল হচ্ছে শিক্ষার্থীদেরও স্বপ্নময় জীবন

প্রকাশের সময় : ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

সাদিক মামুন, কুমিল্লা থেকে : মিয়ানমারে উৎপাদিত মরণনেশা ইয়াবা মাদক বাণিজ্যে কুমিল্লায় বেশ শক্ত ঘাঁটিই গড়ে তোলেছে পাচারকারীরা। টেকনাফ-কক্সবাজার-চট্টগ্রামের পরে দেশের গুরুত্বপূর্ণ জেলাগুলোতে ইয়াবা পাচারের সবচেয়ে নিরাপদ সুবিধাজনক ও অন্যতম ট্রানজিট এখন কুমিল্লা। এছাড়া কুমিল্লা থেকে ভারতের ত্রিপুরায় ইয়াবা পাচারেও রয়েছে যথেষ্ট সুযোগ। আর তাই ইয়াবা বিজনেসের গডফাদারদের কাছে কুমিল্লা নিরাপদ ট্রানজিট। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) কুমিল্লার ১০ রাইফেল ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক মোখলেসুর রহমানের মতে কুমিল্লায় ফেন্সিডিলের ডিমান্ড কমেছে আর ইয়াবার ডিমান্ড সাপ্লাই দুটোই বেড়েছে। টেকনাফ, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম হয়ে কুমিল্লায় নিরাপদে ইয়াবার চালান মজুদ হচ্ছে। কুমিল্লায় ইয়াবার ছোটবড় চালানের প্রবেশমুখ হলো চৌদ্দগ্রাম। ইয়াবার বিষয়টি কুমিল্লার জন্য চ্যালেঞ্জিং হয়ে দেখা দিয়েছে। কুমিল্লায় আইন-শৃংখলাবাহিনীর লোকেজনের ব্যাপক তৎপরতার মধ্যেও প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ ইয়াবা কুমিল্লায় মজুদ হচ্ছে। এখানকার চাহিদা মেটানোর পর স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ীদের দিকনির্দেশনায় পাচারকারি ব্যক্তিদের হাত ধরে বাকি ইয়াবা চলে যায় ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, সিলেট, ময়মনসিংহ, গাজীপুর, টাঙ্গাইল, ফরিদপুরসহ বিভিন্ন জেলায়। কুমিল্লার পুলিশ, বিজিবি, র‌্যাবের হাতে ইয়াবাসহ আটক হওয়ার ঘটনাও কম নয়। তারপরও এখানে থামছে না ইয়াবার বিস্তার। কুমিল্লায় বর্তমানে মাদক নির্ভরতাদের মধ্যে বেশিরভাগই ইয়াবাসেবি। গন্ধবিহীন ইয়াবা নামের গোলাপি রংয়ের গোলাকার ছোট ট্যাবলেট এখন সমাজের উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্ত পর্যায়ের তরুণ, যুবক এবং কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছেও প্রিয় নেশায় পরিগণিত হয়েছে। ইয়াবাসেবিদের কাছে এটি বাবা নামেও পরিচিতি পেয়েছে। মরণনেশা ইয়াবার বিষে অনেক শিক্ষার্থীর স্বপ্নময় জীবন নীল হয়ে যাচ্ছে। কুমিল্লার মাদক নিরাময় কেন্দ্রগুলোতে বেশিরভাগই ইয়াবায় আসক্ত রোগী। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইয়াবার ছোট বড় চালান টেকনাফ, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম হয়ে কুমিল্লার মাদক ব্যবসায়িদের হাতে পৌঁছে। কুমিল্লা নগরী ও উপজেলাগুলোতে ইয়াবা পাচারে অসচ্ছল নারী ওএসব পরিবারের কিশোর-কিশোরীদের ব্যবহার করা হয়। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) কুমিল্লার ১০ রাইফেল ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক মোখলেসুর রহমান জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির এক সভায় ইয়াবা প্রসঙ্গে বলেছেন ‘কুমিল্লায় মাদকসেবিদের কাছে দিন দিন ইয়াবার কদর বাড়ছে আর কমছে ফেন্সিডিলের। কক্সবাজার, চট্টগ্রাম থেকে ইয়াবা সরাসরি কুমিল্লায় আসছে। পুরো বর্ডার এলাকায় ইয়াবা ছেয়ে যাচ্ছে। বিজিবিসহ অন্যান্য আইন প্রয়োগকারি সংস্থা প্রতিনিয়তই ইয়াবা আটক করছে। ইয়াবা ছোট আকৃতির ট্যাবলেট। মাদক ব্যবসায়িরা ৫টি, ১০টির প্যাকেট করে বিক্রি করে। অসংখ্য বিক্রেতা রয়েছে। কিন্তু যখন এক-দুইজন ধরা পড়ে তখন তাদের কাছ থেকে ১০/২০টির বেশি ইয়াবা পাওয়া যায় না। কুমিল্লায় প্রবেশের আগে চৌদ্দগ্রামে অভিযান জোরদার করা যেতে পারলে ইয়াবার অনেক চালান ঠেকানো সম্ভব। কারণ ইয়াবা প্রবেশের ব্ল্যাকস্পটই হলো চৌদ্দগ্রাম। কুমিল্লায় ইয়াবার আগ্রাসন চ্যালেঞ্জিং হয়ে দাঁড়িয়েছে’।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কুমিল্লায় মরণ নেশা ইয়াবার ছোবল : বিষে নীল হচ্ছে শিক্ষার্থীদেরও স্বপ্নময় জীবন
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ