চরিত্র মানুষের শ্রেষ্ঠতম অলঙ্কার
সৃষ্টির সেরা জীব আশরাফুল মাখলুকাত- মানবজাতি। এ শ্রেষ্ঠত্ব মানুষ তার চরিত্র দিয়ে অর্জন করে নেয়।
প্রশ্ন : একজন স্ত্রীকে বলল, তোমাকে এক তালাক দিলাম। এর মাঝে একটা সন্তানও হয়েছে। এরপর দেড় বছর পর আবার বলল, তোমাকে এক তালাক দিলাম, সে ক্ষেত্রে কয় তালাক হবে। এতে কি দুজন একসাথে থাকতে পারবে? উল্লেখ্য, এখানে উদ্দেশ্য তালাক নয়, বরং স্ত্রীকে শোধরানো।
উত্তর : স্ত্রীকে শোধরানো যদি উদ্দেশ্য হয়, তা হলে উপদেশ ও আলোচনার মাধ্যমে শোধরাবেন। তালাক একটি বিষয়, যা তীরের মতো। একবার ছুঁড়ে দিলে আর ফেরানো যায় না। প্রয়োজনে তালাকের ভয় দেখানো যায়। কিন্তু দিয়ে দেয়া যায় না। আপনি একবার তালাক দিয়ে যেহেতু পরে আবার সংসার করেছেন, যদি তা নির্দিষ্ট মেয়াদের ভেতর করে থাকেন, তা হলে ঠিকই আছে। পূর্ণ তালাক হয়নি। একটি তালাক হয়ে গেছে। এরপর যখন দেড় বছর পর আবার এক তালাক দিলেন, তখনো মেয়াদের মধ্যে তাকে গ্রহণ করে থাকলে পূর্ণ তালাক হয়ে সংসার ভেঙে যায়নি। তবে দু’টি তালাক হয়ে গেছে। হয়ে গেছে মানে, আপনার তূণীর থেকে দু’টি তীর নিক্ষিপ্ত হয়ে গেছে। আপনার হাতে আছে আর মাত্র একটি তীর। মানে একটি তালাক দেয়ার সুযোগ। এটি প্রয়োগ করলে আপনাদের সংসার টিকবে কি-না সন্দেহ। স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব, এ ধরনের তিনটি তালাক আপনি জেনে বুঝে প্রয়োগের ব্যবস্থা নিয়েছেন। আপনার স্ত্রীকে কি শোধরানো গেছে? শোধরানো বলতে আপনি কি বোঝাতে চাইছেন, তাও আমরা জানি না। আসলে সমস্যাটি কার? আপনার না আপনার স্ত্রীর। এসব ভেবেচিন্তে এবং অবশ্যই একজন বিজ্ঞ আলেমের পরামর্শে জীবনের এ কঠিন বিষয়গুলো সমাধান করবেন বলে আশা রাখি। অন্যথায় ভুলত্রুটির সম্ভাবনা থেকেই যায়।
প্রশ্ন : ব্যাংকে চাকরি করা কী জায়েজ। ইসলামী ব্যাংক কেমন?
উত্তর : শরিয়া অনুযায়ী যেসব ব্যাংক চলে, সেসবে চাকরি করা জায়েজ। যেসব ব্যাংক সুদভিত্তিক সেসবে চাকরি করার বিষয়ে বিভিন্ন মত রয়েছে। ব্যাংকের যেসব পদ সুদি অর্থ লেনদেনের সাথে জড়িত নয়, যেমনÑ সিকিউরিটি, গাড়ি চালনা, মালি, সাধারণ শ্রমিক ইত্যাদি এসব চাকরি করা যাবে। যদি ব্যাংকটিতে ব্যবসা-বাণিজ্য সংক্রান্ত অন্য কোনো জব থাকে, তাও করা যাবে। ব্যাংকটি যদি সরকারি হয়, তা হলে সরকার নিয়োজিত চাকুরে হিসেবে ব্যাংকের নির্দোষ যে কোনো কাজ করা যাবে। শুধু সুদ দেয়া, নেয়া, সাক্ষী থাকা, লেখালেখি, কমিশন, অ্যাজেন্ট বা সরাসরি সুদ সংশ্লিষ্ট কাজগুলো করা জায়েজ হবে না। কোনো প্রতিষ্ঠান যদি কেবলই সুদি মহাজনি প্রতিষ্ঠান হয়, তা হলে মাসয়ালা একরকম। এতেও মূল কাজ ছাড়া অন্যান্য নির্দোষ সার্ভিস করা যায়। আর যদি প্রতিষ্ঠানটি ব্যাপক কাজের জন্য খোলা হয়, কিন্তু এতে সুদের কারবার মিশ্রিত থাকে, তা হলে সাধারণভাবে এর সকল চাকরি নাজায়েজ নয়। শুধু সুদি অংশটি নাজায়েজ। সুতরাং সংক্ষিপ্ত আলোচনাটি মাথায় রেখে বিজ্ঞ কোনো ফকিহ কিংবা শরিয়া বিশেষজ্ঞ থেকে সংশ্লিষ্ট প্রত্যেকেই নিজের কাজ সম্পর্কে বিস্তারিত ফতোয়া জেনে নেবেন। এক কথায় উত্তর দেয়া কারো পক্ষেই সম্ভব নয়। কেননা, বিষয়টি বিশ্লেষণ ও গবেষণার দাবি রাখে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।