Inqilab Logo

রবিবার, ৩০ জুন ২০২৪, ১৬ আষাঢ় ১৪৩১, ২৩ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

ইরানের ৬ লাখ ব্যারেল তেল জব্ধ করল যুক্তরাষ্ট্র

সুইস রাষ্ট্রদূতকে তলব ইরানের

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৮ মে, ২০২২, ১২:১০ এএম

নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগের নতুন তরঙ্গে ইরানের ৬ লাখ ব্যারেল অপরিশোধিত তেল জব্ধ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। গ্রিসের উপকূলে একটি ট্যাঙ্কার থেকে বৃহস্পতিবার এই বিপুল পরিমাণ তেল জব্ধ করে যুক্তরাষ্ট্র। এই তেল এখন যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। পেগাস নামের তেলের ট্যাংকারটি ইরান ও রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার অধীনে আটক করা হয়। ট্যাঙ্কারটি রাশিয়ার মালিকানাধীন এবং এটি ইরানের তেল বহন করছিল।
গত ২২ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের দুই দিন আগে রুশ ব্যাঙ্ক প্রমসভিয়াজ এর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার সময় যে পাঁচটি জাহাজের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল পেগাস তাদের একটি। প্রমসভিয়াজ রাশিয়ার প্রতিরক্ষা খাতের জন্য গুরুত্বপুর্ন একটি ব্যাঙ্ক। ওই নিষেধাজ্ঞার পর গত ১ মার্চ ট্যাংকারটির নাম পরিবর্তন করে ‘লানা’ রাখা হয় এবং ১ মে থেকে এতে ইরানের পতাকা ওড়ানো হয়। জাহাজটিতে ১৯ জন রাশিয়ান নাবিক ছিলেন। গত মাসে দক্ষিণ গ্রীক দ্বীপ ইভিয়া উপকূলে গ্রীক কর্তৃপক্ষ প্রথমে জাহাজটি আটক করেছিল।
গ্রীস বলেছে, ইউক্রেনে আগ্রাসনের জন্য রাশিয়ার ওপর ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞার অংশ হিসেবে জাহাজটি আটক করা হয়েছিল। তবে জাহাজটি পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গত সপ্তাহে রাশিয়ান-সমর্থিত তেল চোরাচালান এবং ইরানের কুদস ফোর্সের জন্য পরিচালিত মানি লন্ডারিং নেটওয়ার্কের ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। ফলে তেলের ট্যাঙ্কারটি আবার জব্দ করা হয়। আল কুদস হল ইরানের ইসলামী বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর বৈদেশিক অপারেশন ইউনিট।
ইরানের পোর্টস অ্যান্ড মেরিটাইম অর্গানাইজেশন বলেছে, ট্যাঙ্কারটি প্রযুক্তিগত সমস্যা এবং খারাপ আবহাওয়ার কারণে গ্রিসের উপকূলে আশ্রয় চেয়েছিল এবং এর মালামাল জব্দ করা ’জলদস্যুতার একটি স্পষ্ট উদাহরণ’।
এর আগে ২০২০ সালে ভেনেজুয়েলা যাওয়ার সময় ইরানী জ্বালানীর চারটি কার্গো জব্ধ করে যুক্তরাষ্ট্র। এরপর যৌথ সমন্বিত কর্ম পরিকল্পনার পুনরুজ্জীবনের আশার মধ্যে ইরানি তেলের বিরুদ্ধে অভিযান বন্ধ রাখা হয়। যৌথ সমন্বিত কর্ম পরিকল্পনা হল তেল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিনিময়ে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি বন্ধ করার চুক্তি। তবে, সম্প্রতি চুক্তিটি পুনরুজ্জীবিত করার বিষয়ে আলোচনা স্থগিত হয়ে গেছে। এবং নতুন করে এই তেলের কার্গো জব্দ করার ঘটনায় ইঙ্গিত মেলে যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আবার নিষেধাজ্ঞা বলবৎ করছে। ওয়াশিংটনের ইরান দূত কয়েকদিন আগে বলেন, পারমাণবিক চুক্তি পুনরুজ্জীবিত করার সম্ভাবনা এখন সবচেয়ে বেশি নড়বড়ে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরও কঠোর করতে প্রস্তুত।
সুইস রাষ্ট্রদূতকে তলব ইরানের : এদিকে গ্রিস উপকূলের কাছে রাশিয়ার পরিচালিত একটি জাহাজে থাকা ইরানের তেল যুক্তরাষ্ট্র জব্দ করার প্রতিবাদ জানাতে সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে তেহরান। সুইস দূত তেহরানে মার্কিন স্বার্থের প্রতিনিধিত্ব করে থাকেন। শুক্রবার তাকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করা হয় বলে জানিয়েছে ইরানের আধা-সরকারি বার্তা সংস্থা আইএসএনএ। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘মার্কিন সরকারের ক্রমাগত আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন এবং আন্তর্জাতিক সামুদ্রিক চুক্তি লঙ্ঘনের জন্য গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ইসলামী প্রজাতন্ত্র’। ওই জাহাজ ও কার্গো অবিলম্বে ছেড়ে দেওয়ার দাবি জানায় ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ইরানের পতাকাবাহী জাহাজ পেগাস ছাড়া আরও চারটি জাহাজের ওপর গত ২২ ফেব্রুয়ারি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন শুরুর দুই দিন আগে এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। সূত্র: রয়টার্স, এপি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইরান


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ