প্রাক্তন প্রেমিকের নির্যাতনের শিকার অভিনেত্রী
মালায়ালাম সিনেমার অভিনেত্রী আনিকা বিক্রমন। প্রাক্তন প্রেমিক অনুপ পিল্লাই তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেছেন বলে অভিযোগ
জনপ্রিয় সঙ্গীত শিল্পী আসিফ আকবরের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে তথ্য-প্রযুক্তি আইনে দায়ের করা শফিক তুহিনের মামলার বিচারকাজ ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেছে হাইকোর্ট। সোমবার বিচারপতি মোহাম্মদ আবু জাফর সিদ্দিকী এবং বিচারপতি মোহাম্মদ মাহমুদ হাসান তালুকদারের বেঞ্চ এই আদেশ দিয়েছেন। আসিফ আকবর তার ভ্যারিফাইড ফেসবুক পেইজে এই তথ্য জানিয়েছেন।
ফেসবুকে আসিফ লিখেছেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ। সকল প্রশংসা মহান আল্লাহর। আজ মহামান্য হাইকোর্ট আমার বিরুদ্ধে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন- ২০০৬ মামলাটি ছয় মাসের জন্য স্থগিত ঘোষণা করেছেন। মাননীয় বিচারপতি মোহাম্মদ আবু জাফর সিদ্দিকী এবং বিচারপতি মোহাম্মদ মাহমুদ হাসান তালুকদার মহোদয়ের বেঞ্চ আজ এই আদেশ দেন।’
আসিফ আরো লিখেছেন, ‘মহামান্য উচ্চ আদালতের মাননীয় বিচারক মহোদয়দের এই আদেশ শুনে মনে হলো, আমার গলায় লটকে থাকা অপবাদের জ্বলন্ত দগদগে লাল লোহার শিকলটি খসে পড়লো। আলহামদুলিল্লাহ। আমার ছোটবেলার বন্ধু ব্যারিস্টার মইন ফিরোজী মাকিন এবং তাঁর আইনজীবী স্ত্রী বন্ধু সাবরিনা সামাদ ফিরোজী তাদের চালিয়ে যাওয়া জোরালো লড়াইয়ের ফসল এই স্থগিতাদেশ।’
তিনি আরো লিখেছেন, ‘ছোট ভাই অ্যাডভোকেট জাকির হোসেন ও অ্যাডভোকেট মনিরসহ সংশ্লিষ্ট সবার জন্য ভালোবাসা। আমি আজ মুক্ত, উড়ে বেড়ানোর জন্য আমার আকাশ আবার উন্মুক্ত। দীর্ঘ চার বছরের অপমান অপবাদ গ্লানি থেকে মুক্তি পেয়েছি। এক রমজানে গ্রেপ্তার হয়েছি, আরেক রমজানে পাওয়া এই আদেশে আমি মহান আল্লাহর প্রতি যারপরনাই কৃতজ্ঞ।’
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ৫ জুন দিনগত মধ্যরাতে এফডিসির পার্শ্ববর্তী নিজ স্টুডিও থেকে সিআইডি’র একটি টিম তাকে গ্রেফতার করে। তেজগাঁও থানায় দায়ের করা মামলায় আইসিটি এ্যাক্ট ও প্রতারণার অভিযোগে আসিফ আকবরকে গ্রেফতার করা হয়। মামলা নং ১৫। কয়েকমাস জেলে খেটে জামিনে মুক্তি পান তিনি।
মামলার এজাহারে বাদী শফিক তুহিন উল্লেখ করেন, ২০১৮ সালের ১ জুন আনুমানিক রাত ৯টার দিকে একটি বেসরকারি টেলিভিশনের এক অনুষ্ঠানের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের মাধ্যমে তিনি জানতে পারেন যে, অনুমতি ছাড়াই তার সংগীতকর্মসহ অন্য গীতিকার, সুরকার ও শিল্পীদের ৬১৭টি গান বিক্রি করেছেন আসিফ আকবর। পরে তিনি বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগ করে জানতে পারেন, আসিফ আকবর আর্ব এন্টারটেইনমেন্টের চেয়ারম্যান হিসেবে অন মোবাইল প্রাইভেট লিমিটেড কনটেন্ট প্রোভাইডার, নেক্সনেট লিমিটেড, গাক মিডিয়া বাংলাদেশ লিমিটেড ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে গানগুলো ডিজিটাল রূপান্তরের মাধ্যমে ট্রু-টিউন, ওয়াপ-২, রিংটোন, পিআরবিটি, ফুলট্রেক, ওয়াল পেপার, অ্যানিমেশন, থ্রি-জি কন্টেন্ট ইত্যাদি হিসেবে বাণিজ্যিক ব্যবহার করে অসাধুভাবে ও প্রতারণার মাধ্যমে বিপুল অর্থ উপার্জন করেছেন।
ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে শফিক তুহিন ওই বছরের ২ জুন রাত ২টা ২২ মিনিটে তার ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি পোস্ট দেন। তার ওই পোস্টের নিচে আসিফ আকবর নিজের একটি অ্যাকাউন্ট থেকে অশালীন মন্তব্য করেন ও হুমকি দেন। পরদিন রাত ৯টা ৫৯ মিনিটে আসিফ আকবর তার প্রায় ৩২ লাখ লাইকসমৃদ্ধ ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে লাইভে আসেন। ৫৪ মিনিট ৩৪ সেকেন্ডের ভিডিও’র ২২ মিনিট থেকে তুহিনের বিরুদ্ধে অবমাননাকর, অশালীন ও মিথ্যা-বানোয়াট বক্তব্য দেন।
ভিডিও’তে আসিফ আকবর ‘তাকে (শফিক তুহিন) শায়েস্তা করবেন’ বলার পাশাপাশি ভক্তদের উদ্দেশে বলেন, ‘তাকে যেখানেই পাবেন, সেখানেই প্রতিহত করবেন।’ এ নির্দেশনা পেয়ে আসিফ আকবরের ভক্তরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শফিক তুহিনকে হত্যার হুমকি দেন। আসিফ আকবরের এ বক্তব্য লাখ লাখ মানুষ দেখেছেন। তিনি উসকানি দিয়েছেন। এতে তার (শফিক তুহিন) মানহানি হয়েছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।
এই মামলায় গত ৮ নভেম্বর ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আস-সামছ জগলুল হোসেনের আদালতে অভিযোগ গঠনের বিষয়ে শুনানি হয়। শুনানি শেষে আদালতে আদেশের জন্য ৯ নভেম্বর দিন ধার্য করা হয়। ওই দিন ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর নজরুল ইসলাম শামীম শিল্পী আসিফের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আবেদন জানান। অন্যদিকে, আসিফের আইনজীবী জজ আহমেদ মামলা থেকে অব্যাহতি চেয়ে শুনানি করেন।
পরে সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আস-সামছ জগলুল হোসেন উভয়পক্ষের শুনানি শেষে অধিকতর অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য চলতি বছরের ১৩ জানুয়ারি দিন ধার্য করেন। পরে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে সংগীতশিল্পী শফিক তুহিনের দায়ের করা মামলায় আসিফ আকবরের বিরুদ্ধে ১৩ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিক বিচার কার্য শুরু হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।