চরিত্র মানুষের শ্রেষ্ঠতম অলঙ্কার
সৃষ্টির সেরা জীব আশরাফুল মাখলুকাত- মানবজাতি। এ শ্রেষ্ঠত্ব মানুষ তার চরিত্র দিয়ে অর্জন করে নেয়।
প্রশ্ন : আমার মা গত ২০১৭ সালে দীর্ঘ দিন কিডনি, ক্যান্সারসহ নানা জঠিল রোগে ভুগে আমার উপর বেশ রাগ, অভিমান নিয়ে মারা গেছেন। মা খুব অসহায় অবস্থায় মারা যান। বড় সন্তান হিসেবে তার প্রতি দায়িত্ব পালন করিনি। অনেক অবহেলা করেছি, রাগারাগি করেছি, তার চিকিৎসাও ঠিকমতো করিনি। আমি এখন খুব মর্মাহত, ক্ষমা পাওয়ার উপায় আছে কি?
উত্তর : যে বিবরণ আপনি দিয়েছেন, এটি আপনার অনুশোচনা ও অনুতাপ থেকেই এসেছে। এরই নাম তওবা। আপনি আল্লাহ তায়ালার কাছে খুব কান্নাকাটি ও মিনতি করে তওবা ইস্তেগফার করতে থাকুন। যে অপরাধ আপনি করেছেন, সেটি মূলত মায়ের কাছে। কারণ, এটি ছিল বান্দার হক। আল্লাহর নয়। আল্লাহ ইচ্ছা করলে আপনার আম্মাকে রাজী করিয়েও আপনাকে মাফ করতে পারেন। তবে আপনার অপরাধের নাম ‘ওকুকুল ওয়ালিদাইন’। যা শিরকের পর সবচেয়ে বড় গুনাহ। বড় ছেলে হিসাবে মায়ের প্রতি এত অবহেলা ও দায়িত্বহীনতা কেন দেখালেন? আপনার এ আচরণ অনেকটাই অমানবিক নির্মমতার পর্যায়ে পড়ে। আপনার গুনাহ আল্লাহ মাফ করবেন। তবে, মায়ের কাছে ক্ষমা চাওয়া বাকি রয়ে গেছে। মা হয়তো অভিমান করে চলে গেলেও আপনাকে ক্ষমা করেও দিয়েছেন। মায়েরা এমনই হয়। এরপরও আপনার জন্য তিনটি পথ শরিয়তে খোলা আছে। ১. মায়ের জন্য আল্লাহর কাছে বেশি বেশি দোয়া করা। ২. দান, সদকাহ, নফল ইবাদত ইত্যাদির মাধ্যমে মায়ের নামে সওয়াব পাঠানো। ৩. নিজের ক্ষমার জন্য আল্লাহর কাছে আজীবন রোনাজারি করে যাওয়া। যা প্রথমেই বলা হয়েছে।
প্রশ্ন : গত বছর আমার শ্বশুর মারা যান। আমার শ্বশুরের কোন ছেলে নেই। এমতাবস্থায় আমার শাশুড়ী আমাকে নিয়ে পবিত্র হজ্জ পালন করতে চান। আমার হজ্জের খরচ তিনি বহন করবেন। এটা কতুটুকু শরীয়ত সম্মত? আবার আমি কি আমার শ্বশুরের বদলী হজ্জ করতে পারব?
উত্তর : শাশুড়ীকে সাথে নিয়ে মেয়ের জামাতা হিসাবে আপনি হজ্জ পালন করতে পারেন। কারণ, আপনি তার মাহরাম (মাহরাম এমন আত্মীয়কে বলে যার সাথে বিয়েশাদি চিরতরে হারাম)। মহিলাদের হজ্জের সফরে মাহরাম থাকা জরুরী। যদি সহজে মাহরাম হজ্জ যাত্রী পাওয়া যায়, তাহলে মহিলাদের হজ্জ ফরজ হয়। অতএব, অনেক সময় দেখা যায়, মহিলারা দু’জনের খরচ জোগাতে পারলেই তাদের হজ্জ ফরজ হয়। যদি এমনিতেই মাহরাম পুরুষ নিজে হজ্জ যাত্রী হয়, তখন মহিলাদের একটি হজ্জের খরচ থাকলেও হজ্জ ফরজ হয়ে যায়। তিনি আপনার ব্যয় বহন করতে পারেন। প্রথম হজ্জটি হবে আপনার নিজের। খরচ যেই দিক, নিয়ত অনুযায়ী হজ্জ হবে। পরে অন্য সময় বদলি হজ্জ করবেন। অবশ্য নিজে হজ্জ পালন করার আগেও অন্যের বদলি হজ্জ করা জায়েজ। আপনার ওপর হজ্জ ফরজ হয়ে থাকলে শাশুড়ীকে বুঝিয়ে তার সাথে নিজের হজ্জটি করে নিন। আবার আপনি অবশ্যই বদলি হজ্জ করতে পারবেন। এটিই বরং বেশি নিয়মসিদ্ধ হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।