Inqilab Logo

শনিবার, ০৬ জুলাই ২০২৪, ২২ আষাঢ় ১৪৩১, ২৯ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

ঢাবিতে পরীক্ষার দাবিতে শিক্ষার্থীদের অবস্থান : কর্তৃপক্ষের টালবাহানা

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার : | প্রকাশের সময় : ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১২:০৮ এএম

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের ২০১৭-১৮ ও ১৯-২০ শিক্ষাবর্ষসহ বেশ কিছু শিক্ষাবর্ষের চলমান পরীক্ষা স্থগিত করে ইন্সটিটিউটটি। এর প্রতিবাদে গতকাল বুধবার ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের দাবি- কতৃপক্ষের টালবাহানায় তাদের পরীক্ষা আঁটকে রয়েছে। যেখানে অন্যান্য বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের পরীক্ষা হচ্ছে সেখানে কেন শুধু আমাদের পরীক্ষা হচ্ছে না? গত ২১ জানুয়ারি করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির কারণে সশরীরে ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ ঘোষণা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এরই ধারাবাহিকতায় চলমান পরীক্ষা স্থগিত করে ইন্সটিটিউটটি। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বশেষ নির্দেশনা অনুযায়ী কোন বিভাগ বা ইনস্টিটিউট চাইলে শিক্ষার্থীদের সহযোগিতায় সশরীরে পরীক্ষা নিতে পারবে বলে ঘোষণা করা হয়। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন নির্দেশনা না মেনে শিক্ষার্থীদের দাবি উপেক্ষা করে চলছে ইনস্টিটিউটটি।
জানা যায়, এই ইনস্টিটিউটে ২০১৯-২০ সেশনে যারা প্রথম বর্ষে ভর্তি হয়েছিল তারা ২০২২-এ এসেও প্রথম বর্ষেই রয়ে গেছে। শিক্ষার্থীরা জানান, এখানকার শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের নিয়ে ভাবেন না। তারা শিক্ষার্থী বান্ধব না। তাই অন্যান্য বিভাগে প্রথম বর্ষ শেষ করে দ্বিতীয় বর্ষে ক্লাস করা শিক্ষার্থীদের বন্ধু-বান্ধবরাই এখানে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী, তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা দ্বিতীয় আর চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীরা এখানে তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। বুধবার দুপুর ১২টার দিকে ইন্সটিটিউটের সামনে জড়ো হয়ে শিক্ষার্থীরা আঁটকে থাকা পরীক্ষা ও ক্লাস চালুর দাবি জানান। এসময় তারা তাদের দাবির পক্ষে বিভিন্ন ব্যাচের শিক্ষার্থীদের স্বাক্ষর গ্রহণ করেন। স্বাক্ষর করা শীট, হাতে লেখা পরীক্ষার আবেদন পত্র ও কম্পিউটার প্রিন্ট করা আবেদন পত্র নিয়ে তারা ইন্সটিটিউটের পরিচালক ড. মো. গোলাম আজমের কাছে জমা দেন এবং ইন্সটিটিউটের সামনে অবস্থান করতে থাকেন।
শিক্ষার্থীরা জানান, গত বছরের অক্টোবর থেকে আমাদের(১২ তম ব্যাচ) সকল ধরনের কার্যক্রম বন্ধ আছে। গত কয়েকদিন আগে পরীক্ষা শুরু হলেও একটিমাত্র পরীক্ষা নেয়ার পর আবার বন্ধ করে দেয়া হয়। যেখানে অন্যান্য সব অনুষদের বিভাগ গুলোর পরীক্ষা চলতেছে সেখানে আমাদের পরীক্ষা বন্ধ করে রাখার কোন যৌক্তিকতা দেখি না। আমরা পরচালক স্যারকে লিখিতভাবে জানিয়েছি। তিনি আমাদের বলছেন, আমরা মিটিং করবো তারপর সিদ্ধান্ত দেবো। অথচ পরীক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান স্যার বলছেন কোন মিটিং লাগবে না! এখন আমরা কোথায় যাবো?
ইন্সটিটিউটের ১৪ তম ব্যাচের এক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা তিনবছর ধরে ফার্স্ট ইয়ারে আছি। পাঁচটা কোর্সের মধ্যে তিনটা কোর্সের পরীক্ষা নিয়ে বাকিগুলো বন্ধ করে রেখেছে। বন্ধ হয়ে থাকা পরীক্ষাগুলোর রুটিন দিবে দিবে করে এখনো দিচ্ছে না। আমরা এ অবস্থায় বাড়ি যেতেও পারছি না, পড়াশোনাও ঠিকমতো করেত পারছি না।
এ ব্যাপারের জানতে পরীক্ষা কমিটির প্রধান ড. মোহাম্মদ শাহীন খান বলেন, আমরা (পরীক্ষা আহবায়ক কমিটি) পরীক্ষা নেয়ার জন্য সবসময় প্রস্তুত আছি। ইন্সটিটিউটের পরিচালক আমাদেরকে লিখিত দিলে যেকোন সময় পরীক্ষা নিতে পারবো। পরীক্ষাগুলো কেন নেয়া হচ্ছে না জানতে চাইলে ইন্সটিটিউটের পরিচালক ড. মোহাম্মদ গোলাম আজম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মের বাইরে ইন্সটিটিউট চলে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মানুযায়ীই ইন্সটিটিউট চলে। সেই অনুযায়ী চলছে এবং চলবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যন্য অনুষদের বিভাগ গুলোতে পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে জানালে তিনি বলেন, আমি এসব বিষয় নিয়ে কথা বলতে চাই না।
পরীক্ষা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দেশনার ব্যাপারে পরীক্ষা উপ-নিয়ন্ত্রক রোকনুজ্জামান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বশেষ সার্কুলার অনুয়ায়ী কোন বিভাগ বা ইন্সটিটিউট চাইলে তাদের পরীক্ষা নিতে পারবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান পরীক্ষাগুলো নেয়ার বিষয়ে নির্দেশনা এটাই। যদি ছাত্র-ছাত্রীরা দিতে চায় তাহলে তারা নিতে পারেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ঢাবি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ