পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
জেএসসি পরীক্ষা শেষ হওয়ায় ভাইয়ের মোটরসাইকেলে চড়ে ঢাকায় বেড়াতে যাওয়ার শখ জেগেছিলো ছোট বোন ওমামা জোয়াদ্দারের। ছোট বোনের শখ পূরণে বড় ভাইও পিছপা হননি। গতকাল বোনকে পেছনে বসিয়ে রওনা হয়েছিলেন ঢাকার পথে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার গোবিন্দপুর এলাকায় পৌঁছুলে এক পথচারি মহাসড়ক পার হওয়ার সময় মোটরসাইকেলের ব্রেকে চাপ দিলে ওমামা পেছনে বসা অবস্থা থেকে ছিটকে পড়ে যায়। এ সময় লাল-সবুজ পরিবনের একটি বাস তাকে চাপা দিলে মারাত্মক আহতাবস্থায় চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পর ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন।
এছাড়া ফরিদপুর, বগুড়া, খাগড়াছড়ি, ময়মনসিংহ, কুষ্টিয়ার বিভিন্ন স্থানে প্রাণ হারিয়ে নিহত হয়েছেন ৬ জন ও আহত হয়েছেন ১৭ জন।
কুমিল্লা : নিহত ওমামা জোয়াদ্দার মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলার ষোনটাকা গ্রামের জাহাঙ্গীর জোয়াদ্দারের মেয়ে। জাহাঙ্গীর জোয়াদ্দারের ফিডমিল ব্যবসার সুবাদে কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলায় বর্তমানে তারা বসবাস করছেন।
চান্দিনা থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আরিফুর রহমান বলেন, ঘটনাটি শুনেছি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ফরিদপুর : খুলনাগামী দিগন্ত পরিবহন ও ঢাকাগামী মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে দুইজন নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন আরও দুইজন। গতকাল সোমবার জেলা সদরের মল্লিকপুর এলাকায় এ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন, বোয়ালমারী উপজেলাধীন, ডা. দিলীপ রায় হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের প্রভাষক ডা. সুব্রত কুমার দাস (৩৫)। তিনি বোয়ালমারী উপজেলার গুনবহা ইউনিয়নের হরিহরনগর গ্রামের সুবাস চন্দ্র দাসের ছেলে। অপরজন, দুর্ঘটনায় কবলিত মাইক্রোবাসের চালক মনির হোসেন মঞ্জু (৪০)। সে বোয়ালমারী উপজেলার রূপাপাত ইউনিয়নের কলিমাঝি গ্রামের আ. সালাম মোল্যার ছেলে।
নিহতদের পরিবারিক সূত্রে জানা গেছে, মাইক্রোবাসে করে কয়েকজন যাত্রী বোয়ালমারী থেকে ঢাকায় যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে, ফরিদপুর-খুলনা মহাসড়কের মল্লিকপুর নামক স্থানে পৌছালে বিপরীত দিক থেকে আসা খুলনাগামী দিগন্ত পরিবহনের বাসের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষে ঘটনা ঘটে। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হয় মাইক্রোবাসের চালক এবং একজন হোমিও চিকিৎসক।
মাইক্রোবাসে থাকা আহত অপর দুই যাত্রী হলেন- ডা. দিলীপ রায় হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের প্রিন্সিপাল ডা. প্রণয় কান্তি লস্কর ও আলফাডাঙ্গা কাজী সিরাজুল ইসলাম হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের উপাধ্যক্ষ ডা. সমীর কুমার বালা। তবে তারা আশঙ্কামুক্ত।
জানা যায়, নিহত এবং আহতরা মিলে মাইক্রোবাসে করে হোমিওপ্যাথি কলেজের (শিক্ষকরা) ঢাকায় পরীক্ষার খাতা আনতে যাচ্ছিলেন। এ বিষয়, করিমপুর হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল আল মামুন শাহ বলেন, ঘটনার পরপরই ঘাতক বাসটির চালক পালিয়ে গেছে। আহতদের ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তারা এখন চিকিৎসাধীন আছেন। তবে তারা শঙ্কামুক্ত।
কুষ্টিয়া : কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে অটোরিক্সা উল্টে নিয়াত আলী (৬০) নাম একজন লন্ড্রি ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। নিহত নিয়াত আলীর বাড়ি তারাগুনিয়া শালিমপুর গ্রামে এবং সে পেশায় লন্ড্রি ব্যবসায়ী ছিলেন। সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে দৌলতপুর-তারাগুনিয়া থানামোড় সড়কের সরুপপুর গ্রামে এ দুর্ঘটনাটি ঘটে।
দৌলতপুর থানা পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, করোনার টিকা নিয়ে ব্যাটারী চালিত অটোরিকশায় বাড়ি ফিরছিলেন। দৌলতপুর-তারাগুনিয়া থানামোড় সড়কের সরুপপুর গ্রামে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি দ্রুতগামী মোটরসাইকেলকে সাইডে দিতে গিয়ে অটোরিকশা উল্টে যায়। এতে অটোরিক্সার যাত্রী নিয়াত আলী গুরুতর আহত হন। তাকে উদ্ধার করে দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক নিয়াত আলীকে মৃত ঘোষণা করেন।
দৌলতপুর থানার ওসি (তদন্ত) শফিকুল ইসলাম জানান, তাকে উদ্ধার করে দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে নেয়া হলে কর্তব্যরত ডাক্তার নিয়াত আলীকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় পরিবারের সদস্যদের কোন অভিযোগ ও আপত্তি না থাকায় নিহতের লাশ তাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
বগুড়া : ঢাকায় বিএনপির সমাবেশে যাওয়ার পথে বগুড়ার শেরপুরে বাস-ট্রাক ও মাইক্রোবাসের ত্রিমুখি সংঘর্ষে বিএনপি সমর্থিত সাতজন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যানসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। গুরুতর অবস্থায় তাদের স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গত রোববার মধ্যরাতে পৌরশহরের হাজীপুর নামক স্থানে ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
এদিকে দুর্ঘটনায় দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়া ট্রাক-বাস ও মাইক্রোবাস মহাসড়কের মধ্যে আড়াআড়িভাবে উল্টে পড়ে থাকায় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় মহাসড়কের উভয়পাশে প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকাজুড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে পুলিশ এসে দুর্ঘটনা কবলিত গাড়িগুলো অপসারণ করলে প্রায় দুই ঘণ্টা পর যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
দুর্ঘটনায় আহতরা হলেন- বিএনপির দলীয় সমর্থিত বগুড়া সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আলী আজগর তালুকদার হেনা, জেলার সোনাতলা উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আহসানুল তৈয়ব জাকির, সারিয়াকান্দি উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান হিরু, গাবতলী উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম হেলাল, শাজাহানপুর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান সরকার বাদল, ধুনট উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান তৌহিদুল আলম মামুন, নন্দীগ্রাম উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম ও তাদের বহনকারী মাইক্রোবাসের চালক মো. সুজন মিয়া।
এছাড়া দুর্ঘটনা কবলিত বাস-ট্রাকের চালক ও তাদের সহকারীরাও (হেলপার) আহত হয়েছেন। কিন্তু দুর্ঘটনার পরপরই তারা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে চলে যাওয়ায় তাদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
খাগড়াছড়ি : খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় কাভার্ডভ্যানের চাপায় ওহাব আলী ওরফে বাদশা মিস্ত্রি (৩৫) নামের এক মোটরসাইকেল আরোহীর পা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। গতকাল সোমবার বিকেল সোয়া ৩টার দিকে খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম আঞ্চলিক সড়কে মাটিরাঙ্গার নতুনপাড়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। পা বিচ্ছিন্ন হওয়া ওহাব আলী নোয়াখালী সদর উপজেলা পশ্চিমচর মদুয়া এলাকার নসির আহাম্মদের ছেলে। তিনি খাগড়াছড়ির ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সেলিম অ্যান্ড ব্রাদার্সে কর্মরত ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মোটরসাইকেল যোগে মাটিরাঙ্গা থেকে খাগড়াছড়ি যাচ্ছিলেন ওহাব আলী। খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম আঞ্চলিক সড়কের নতুনপাড়া এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিকে থেকে আসা বেপরোয়া গতির একটি কাভার্ডভ্যান তাকে চাপা দেয়। এসময় তার শরীর থেকে একটি পা পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এসময় তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়। স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় ওহাব আলীকে উদ্ধার করে মাটিরাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল করেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
ময়মনসিংহ : ময়মনসিংহে নিয়ন্ত্রণহীন বাসচাপায় নুরজাহান বেগম (৫৫) নামে এক নারী শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও দুজন। সোমবার দুপুরে সদর উপজেলার ময়মনসিংহ-ফুলপুর মহাসড়কের আলালপুর মোড়ে এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত নুরজাহান বেগম ওই এলাকার ইসাম উদ্দিনের স্ত্রী। তিনি আরিফ অটোরাইস মিলে শ্রমিকের কাজ করতেন।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, হানিফ পরিবহনের একটি বাস ঢাকা থেকে শেরপুর যাচ্ছিল। পথিমধ্যে সদর উপজেলার আলালপুর মোড় নামক স্থানে আসতেই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে এক নারী ও একটি সিএনজিকে চাপা দিয়ে আরিফ অটোরাইস মিলে ঢুকে পড়ে। এতে ঘটনাস্থলেই ওই নারী মারা যান এবং সিএনজির দুই যাত্রী গুরুতর আহত হন। পরে স্থানীয়রা আহত দুইজনকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। এ বিষয়ে কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) ফারুক হোসেন বলেন, বাস জব্দ করা সম্ভব হলেও চালক পালিয়ে গেছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন আছে বলেও জানান তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।