Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পাকিস্তানে শ্রীলঙ্কান নাগরিককে পিটিয়ে হত্যা

আটক ১১২ : ৮০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৫ ডিসেম্বর, ২০২১, ১২:০০ এএম

শিয়ালকোটের ওয়াজিরাবাদ রোডের একটি কারখানায় ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত শ্রীলঙ্কার এক ব্যক্তিকে নির্মমভাবে হত্যা এবং লাশ পুড়িয়ে ফেলার একদিন পর পুলিশ একজন প্রধান সন্দেহভাজনসহ অন্তত ১১২ জনকে গ্রেফতার করেছে এবং সন্ত্রাসবিরোধী আইনে অন্তত ৮০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, মূল সন্দেহভাজন ফারহান ইদ্রিস এবং তালহাকে আটক করা হয়েছে। তারা হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।

পুলিশ জানান, বিদেশি নাগরিক প্রিয়ন্ত কুমারাকে হত্যার সময় কারখানার ভেতরে শত শত মানুষ লাঠিসোঁটা নিয়ে উপস্থিত ছিল। হত্যার পর, জনতা তার লাশ রাস্তায় টেনে নিয়ে যায়। পর্যাপ্ত ফোর্সের অভাবে তারা ভিড় ছত্রভঙ্গ করতে ব্যর্থ হয়েছেন।

প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে পুলিশ জানিয়েছে যে, শ্রীলঙ্কার নাগরিককে বøাসফেমির অভিযোগে হত্যা করা হয়েছে। তারা আরও বলেন, তারা সব দিক থেকে বিষয়টি তদন্ত করছেন।

এদিকে, ঘটনার প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের কাছে জমা দিয়েছে পাঞ্জাব পুলিশ। রিপোর্ট অনুযায়ী, অন্তত ১১২ সন্দেহভাজনকে আটক করা হয়েছে যাদের কারখানার পরিচালকদের সহায়তায় চিহ্নিত করা হয়েছে। উস্কানিদাতাদেরও গ্রেফতার করা হয়েছে। আটক সন্দেহভাজনদের অজানা স্থানে সরানো হয়েছে, তদন্ত এখনও চলছে।

পৃথকভাবে আইনি প্রক্রিয়ার জন্য নিহতের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এক বিবৃতিতে আলেম মুফতি তাকি উসমানি ধর্ম অবমাননার অভিযোগে বিদেশী নাগরিকের হত্যার নিন্দা করেছেন। তিনি বলেন, ব্লাসফেমি একটি ‘গুরুতর অপরাধ’, কিন্তু ব্লাসফেমির অভিযোগ অবশ্যই সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হতে হবে। তিনি যোগ করেন, শিয়ালকোটের ঘটনা সারা বিশ্বে পাকিস্তান ও মুসলমানদের ভাবমর্যাদা ক্ষুন্ন করেছে। তিনি পাকিস্তানের সহিংস অবস্থার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, বল প্রয়োগের পরিবর্তে সরকারের উচিত এ জাতীয় সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য সংসদের সামনে বিষয়টি উপস্থাপন করা। তিনি জাতীয় সম্পত্তি ধ্বংস ও সহিংসতা না করে শান্তিপূর্ণ উপায় অবলম্বন করার জন্য আন্দোলনকারীদের প্রতি আহ্বান জানান।

‘ব্লাসফেমির’ অভিযোগে মারধর
শুক্রবার শিয়ালকোটে শ্রীলঙ্কার একজন নাগরিককে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা এবং জনতা তার শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়ায় জাতি বিস্মিত এবং বিরক্ত। বেসামরিক এবং সামরিক নেতারা এটিকে ‘ভয়াবহ’ ‘লজ্জাজনক’ এবং ‘বিচারবহির্ভূত ঘটনা’ হিসাবে নিন্দা করেছেন। এ মর্মান্তিক ঘটনাটি জাতিকে ক্ষুব্ধ করেছে।

প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি বলেছেন যে, সংঘবদ্ধ হামলার সাথে ধর্মের কোন সম্পর্ক নেই, অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন দায়ীদের ‘আইনের আওতায় কঠোরভাবে শাস্তি’ দেওয়ার।

শিয়ালকোটের ওয়াজিরাবাদ রোডে ঘটনাটি ঘটেছে, যেখানে বেসরকারি কারখানার কর্মীরা শ্রীলঙ্কার নাগরিককে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করে। সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা বেশ কিছু ভয়ঙ্কর ভিডিও ক্লিপে দেখানো হয়েছে যে, জনতা বøাসফেমির বিরুদ্ধে সেøাগান দেওয়ার সময় ভিকটিমকে মারধর করছে। অন্যান্য ক্লিপগুলোতে তার শরীরে আগুন লাগা, সেইসাথে ধ্বংসাবশেষ দেখানো হয়েছে যাকে তার গাড়ি বলা হচ্ছিল।

ভিড়ের মধ্যে অনেকেই তাদের পরিচয় গোপন করার কোনো চেষ্টা করেনি এবং কেউ কেউ জ্বলন্ত লাশের সামনে সেলফি তুলেছে। পুলিশ দাবি করেছে যে, মর্মান্তিক ঘটনাটি ফ্যাক্টরি চত্বরের ভিতরে ঘটে এবং সেই সময়ের আগে এটি সম্পর্কে জানার কোন উপায় ছিল না। সূত্র : এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।



 

Show all comments
  • Mohammad Sirajullah, M.D. ৫ ডিসেম্বর, ২০২১, ৫:৫৮ এএম says : 1
    Blasphemy laws can not be applicable to no-Moslims. If it is applicable then all non-muslims in Pakistan Muslim be officially killed.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: হত্যা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ