পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পিলখানা বিডিআর বিদ্রোহে সেনা কর্মকর্তা হত্যা মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হয়নি ১৪ বছরেও। বিচারিক আদালত বহু আগে রায় দিলেও আপিলে ঝুলছে সেই রায়। ফলে দণ্ডাদেশ কার্যকর হয়নি এখনও। কবে কার্যকর হবে, সেই অপেক্ষার প্রহর গুণছেন হত্যাকাণ্ডের শিকার সেনা কর্মকর্তাদের পরিবার। অন্যদিকে সাজার মেয়াদ শেষ হওযায় মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছেন এ মামলায় বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত অন্তত ৩০০ ব্যক্তি। কবে তারা ছাড়া পাবেন, বলতে পারছেন না কেউ। এ অবস্থায় অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিনউদ্দিন জোর আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন যে, চলতি বছরই আলোচিত এ মামলা চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হবে।
আদালত সূত্র জানায়, ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন বিডিআর সদর দফতরে ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জনকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় ওই বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি লালবাগ থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে পৃথক ২টি মামলা হয়। পরে মামলা নিউমার্কেট থানায় স্থানান্তরিত হয়। বিচার হয় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার সংলগ্ন আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত অস্থায়ী এজলাসে। ঘটনার ৪ বছর পর ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর ঢাকা মহানগর তৃতীয় বিশেষ আদালতের বিচারক মো. আখতারুজ্জামান রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে বিডিআরের সাবেক ডিএডি তৌহিদসহ ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। এছাড়া বিএনপি দলীয় সাবেক এমপি নাসিরউদ্দিন আহমেদ পিন্টু (বর্তমানে মৃত) ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা তোরাব আলীসহ ১৬০ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়। এছাড়া ২৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় বেকসুর খালাস দেয়া হয় ২৭৭ জনকে। এ ঘটনায় বিস্ফোরক আইনে দায়ের করা মামলাটি এখনও বিচারিক আদালতে চলমান।
প্রথম মামলায় রায় অনুযায়ী মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য বিচারিক আদালত ২০১৩ সালে রায়ের নথি রেফার করে (ডেথ রেফারেন্স) হাইকোর্টে। পক্ষান্তরে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন দণ্ডিতরা। ২০১৫ সালে হাইকোর্টে শুনানি শুরু হয়। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে রায় দেন হাইকোর্ট। এতে বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১৫২ জনের মধ্যে ডিএডি তৌহিদসহ ১৩৯ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ৮ জনকে সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়। খালাস দেয়া হয় ৪ জনকে। যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ১৬০ জনের মধ্যে ১৪৬ জনের সাজা বহাল রাখা হয়। বিচারিক আদালতে যাবজ্জীবন পাওয়া আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড নেতা তোরাব আলীসহ ১২ জনকে খালাস দেন আদালত। এ সংক্রান্ত দেয়া ২৯ হাজার ৫৯ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হয় ২০২০ সালের ৭ জানুয়ারি। বলা হয়, পৃথিবীর ইতিহাসে এটি অন্যতম বৃহৎ মামলা।
কেন মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হচ্ছে না; প্রশ্ন করা হলে অ্যাটর্নি জেনারেল এম এম আমিনউদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, আশা করছি এই বছরই এই মামলাটির শুনানি করতে পারব। গতবছর আমরা চেষ্টা করেছিলাম। আসামিপক্ষ মামলার আপিলের সারসংক্ষেপ জমা না দেয়ায় শুনানি শুরু করা যায় নি। তাদের সারসংক্ষেপ জমা দেয়ার জন্য আমরা আবেদন করেছি। আদালতের কাছে চাইব, তাদের যেন একটা সময় দেয়া হয়। ওই সময়ের মধ্যে তারা যদি আপিলের সারসংক্ষেপ না দেন তাহলে আদালত যেন আসামিপক্ষের আবেদন ডিসমিস করে দেয়ার আবেদন জানাব।
অন্যদিকে আসামি পক্ষের কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, আশা করছি এক মাসের মধ্যে আপিলের সারসংক্ষেপ জমা দিতে পারব। ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট শাখা থেকে সারসংক্ষেপ জমা দিতে আপিলকারীদের নোটিশ দেয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ড ও যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত বাদে বিভিন্ন মেয়াদে দণ্ডিত অনেকের সাজাভোগ শেষ হয়েছে। কিন্তু বিস্ফোরক মামলার বিচার শেষ না হওয়ায় তারা কারামুক্তি পাচ্ছেন না। বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে করা মামলায় দ্রুত নিষ্পত্তি করতে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো উদ্যোগ দেখিনি। হত্যা মামলা থেকে ২৬৯ জন আসামি বিভিন্নভাবে খালাস পেয়েছেন। এই মামলায় দেড়শ’র মতো আসামিকে ১০ বছরের সাজা দেয়া হয়েছিল। ইতোমধ্যে তাদের সাজা শেষ হয়েছে। ফলে এখন ৩০০ জনের মতো মানুষ কারামুক্তির অপেক্ষায়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।