Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পাকিস্তানের চোখে এই বাংলাদেশ লড়াকু

বিতর্ক এড়িয়ে প্রশংসিত মাহমুদউল্লাহ

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৩ নভেম্বর, ২০২১, ১২:০২ এএম

শেষ ওভারে জয়ের জন্য দরকার ৮ রান। উইকেটে হায়দার আলী ও সরফরাজ আহমেদ। দুজনই স্বীকৃত ব্যাটসম্যান। শেষ ওভার করতে এলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। অবাক করে দেওয়ার জন্য এটুকুই যথেষ্ট। নিয়মিত কোনো বোলার হাতে না থাকায় মাহমুদউল্লাহর এ ছাড়া উপায়ও ছিল না। কিন্তু খÐকালীন এ স্পিনারই শেষ ওভারে পাকিস্তানের ঘাম ছুটিয়ে দিয়েছিলেন!
শেষ ওভারের প্রথম তিন বলে কোনো রান আসেনি। এর মধ্যে টানা দুই বলে সরফরাজ ও হায়দার আউট! ম্যাচ বুঝি জিতেই যায় বাংলাদেশ! ইফতিখার আহমেদ এসে পরের বলে ছক্কা মেরে পাকিস্তানের সম্ভাবনাও বাঁচিয়ে রাখেন। পঞ্চম বলে ইফতিখারও আউট! শেষ বলে জয়ের জন্য দরকার ২ রান। সেখানেও নাটক।
ব্যাট করতে প্রস্তুত হওয়ার আগেই মাহমুদউল্লাহ বল করে ফেলায় ‘স্টান্স’ থেকে সরে দাঁড়ান নওয়াজ। মাহমুদউল্লাহও পরের বলটা করতে গিয়ে আর করেননি। এমন চাপের মুহ‚র্তে নওয়াজকে সম্ভবত একটু অপ্রস্তুত করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। শেষ বলে চার মেরে ৫ উইকেটের জয়ে বাংলাদেশকে তিন ম্যাচ সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করা নিশ্চিত করে পাকিস্তান।
এই শেষ ওভারটুকু ছাড়া বাংলাদেশ কি এ ম্যাচে কখনো লড়াইয়ে ছিল? সেভাবে কি চোখে পড়েছে? আগে ব্যাট করে ৭ উইকেটে ১২৪ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। শেরেবাংলার উইকেটে এই রান তাড়া করতেও শেষ ওভার পর্যন্ত খেলতে হয়েছে পাকিস্তানকে। এতটুকুই বোধ হয় এ ম্যাচ থেকে বাংলাদেশের প্রাপ্তি। হারের পর মাহমুদউল্লাহ অবশ্য প্রাপ্তির খাতা খোলেননি। সতীর্থদের প্রশংসা ফুটল তার মুখে, ‘দুই দলের ব্যাটসম্যানরাই ভুগেছে। দ্রæত রান তোলার আগে উইকেটে কিছু সময় থাকতে হবে। নাঈম ভালো ব্যাট করেছে বলে মনে করি। তাসকিন ইনজুরি থেকে যেভাবে সরে এসেছে, সত্যিই প্রশংসা করতে হয়।’
৫০ বলে ৪৭ রান করে আউট হন বাংলাদেশের ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম। ২টি ছক্কা ও ২টি চারে ইনিংসটি সাজান। স্ট্রাইক রেট ৯৪.০০। টি-টোয়েন্টি উইকেটে ‘সেট’ হতে ১০-১৫ বলের বেশি লাগার কথা নয় ওপেনারদের- অন্তত অন্যান্য দেশের ওপেনারদের মানসিকতা এমনই দেখা যায়। নাঈম সেখানে ১৯তম ওভার পর্যন্ত উইকেটে থেকেও দ্রæতগতিতে রান তুলতে পারেননি। একটি প্রান্ত ধরে খেলার চেষ্টা অবশ্য করেছেন। অবশ্য টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থেকেই ভুগছে বাংলাদেশের ব্যাটিং। দ্রæত রান তুলতে গিয়ে টপাটপ সব আউট হওয়া ঝুঁকি না নিতেই সম্ভবত নাঈমের ব্যাটিংয়ের প্রশংসা করেছেন মাহমুদউল্লাহ। কন্ডিশন ও উইকেট যে কঠিন, সে কথা বলেছেন পাকিস্তান দলের ভারপ্রাপ্ত কোচ সাকলায়েন মুশতাকও, ‘বাংলাদেশকে প্রাপ্য প্রশংসাটুকু দিতেই হবে। আরব আমিরাত থেকে এখানকার কন্ডিশন আলাদা।’
তবে শেষ ওভারে দুর্দান্ত বোলিংয়ে কিছুটা রোমাঞ্চ ছড়িয়ে প্রশংসার সাগরে ভাসছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নিজেও। বিশেষ করে শেষ বলে জয়ের জন্য দরকার ২ রান। ব্যাট করতে প্রস্তুত হওয়ার আগেই মাহমুদউল্লাহ বল করে ফেলায় ‘স্টান্স’ থেকে সরে দাঁড়ান নওয়াজ। মাহমুদউল্লাহ বুদ্ধিদীপ্ত বোলিংয়ে বল ছাড়েন উইকেটের বেশ পেছন থেকে। এতেই হয়তো অপ্রস্তুত হয়ে পড়েন মাত্রই উইকেটে আসা ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ নওয়াজ। শেষ মুহ‚র্তে তিনি বল না খেলে ছেড়ে দেন। বল লাগে স্টাম্পে। তবে নওয়াজ দাবি করেন ‘ডেড বল।’ আম্পায়ার তানভির আহমেদ ‘ডেড বল’ সঙ্কেত দেন। মাহমুদউল্লাহ ও বাংলাদেশের ফিল্ডাররা শুরুতে একটু প্রতিবাদ করলেও পরে মেনে নেন। যৌক্তিক ভিত্তি থাকলেও সেসময় বাড়াবাড়ি না করে সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়ায় মাহমুদউল্লাহর স্পোর্টসম্যানশিপের দারুণ প্রশংসা করেন ধারাভাষ্যকাররা।
পরে শেষ বলে বাউন্ডারি মেরে পাকিস্তানকে জিতিয়ে দেন সেই নওয়াজই। ম্যাচের পর মাহমুদউল্লাহ আর এই বিতর্কের গভীরে যেতে চাইলেন না, ‘আম্পায়ারের সঙ্গে আলোচনা... আমি ¯্রফে জিজ্ঞেস করছিলাম, ও (নওয়াজ) অনেক শেষ মুহ‚র্তে সরে গেছে। এই কারণেই জিজ্ঞেস করছিলাম যে, এটা বৈধ বল কী না। ¯্রফে জিজ্ঞেস করছিলাম, এর বাইরে কিছু না। আম্পায়ারের সিদ্ধান্তই চ‚ড়ান্ত এবং আমরা আম্পায়ারদের সম্মান করি।’

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মাহমুদউল্লাহ


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ