Inqilab Logo

শক্রবার ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১, ০৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দক্ষিণাঞ্চলে অস্তিত্ব সংকটে প্রধান বিরোধী দল মহানগরী সহ বরিশালে বিএনপির দুটি সাংগঠনিক জেলার আহবায়ক কমিটি

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৪ নভেম্বর, ২০২১, ৫:০৫ পিএম

গোটা দক্ষিনাঞ্চলে বিএনপি’র অস্তিত্ব সংকট আসন্ন ? এমন প্রশ্ন সাধারন মানুষের মধ্যে যোড়াল হতে শুরু করলেও রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলও বিষয়টির সাথে সম্পূর্ণ দ্বিমত পোষন করছেন না। গত কয়েক বছর ধরেই পটুয়াখালী,ভোলা,পিরোজপুর ও ঝালাঠীতে দেশের প্রধান বিরোধী দলের রাজনৈতিক কর্মকান্ড প্রায় শুণ্যের কোঠায়। ঐসব জেলার ঢাকা প্রবাসী নেতৃবৃন্দ মাঠ কর্মী থেকে শুরু করে এলাকার সাথে অনেকটাই যোগসূত্রহীন। বরগুনায় দলটির অস্তিত্ব অনেক আগে থেকেই ধরে রাখতে পারছেন না বর্তমান নেতৃত্ব।

শুধুমাত্র বরিশাল মহানগর ও দুটি সাংগঠনিক জেলা কমিটি সভা-সমাবেশ সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচী পালন করে এতদিন সাংগঠনিক কর্মকান্ড অব্যাহত রাখলেও বুধবার রাতে সেসব কমিটি বাতিল করে নতুন আহবায়ক কমিটি গঠনের পরে একাধীক রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক দলটির ভবিষ্যত নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করতে শুরু করেছেন। বুধবার রাতে জাতীয় পার্টি থেকে আসা মনিরুজ্জামান ফারুককে আহবায়ক ও নগরীর ১৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মীর জাহীদুল কবির জাহিদকে সদস্য সচিব করে মহানগর কমিটি ঘোষনা করা হয়েছে। কমিটিতে যুগ্ম আহবায়ক করা হয়েছে এ্যাডভোকেট আলী হায়দার বাবুলকে। এর আগে দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মুুজিবুর রহমান সারোয়ার সভাপতি ও জিয়াউদ্দিন সিকদার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ছিলেন মহানগর বিএনপি’র।
অপরদিকে বরিশাল উত্তর জেলা কমিটিও বিলুপ্ত করে দেওয়ান মোহম্মদ শহিদুল্লাহকে আহবায়ক ও মিজানুর রহমান মুকুলকে সদস্য সচিব ঘোষনা করা হয়েছে। একমিটির সভাপতি ছিলেন সাবেক এমপি মেজবাহ উদ্দিন ফরহাদ। দক্ষিণ সাংবাগঠনিক জেলা কমিটির আহবায়ক করা হয়েছে এ্যাডভোকেট মজিবর রহমান নান্টুকে। সদস্য সচিব আকতার হোসেন মেবুল। এতদিন দক্ষিন জেলা কমিটির সভাপতি ছিলেন এবাদুল হক চান, সম্পাদক ছিলেন শাহিন ।
বুধবার রাতে এসব কমিটি ঘোষনার পরে পদ পাওয়া নেতৃবৃন্দ সহ তাদের অনুসারীরা দলীয় কার্যালয়ে মিষ্টি বিতরন সহ আনন্দ উল্লাশ করেছে বরিশাল মহানগরীতে। গত কয়েকমাস ধরেই বরিশাল মহানগর কমিটি বিলুপ্ত করতে কেন্দ্রের ওপর চাপ তৈরী হচ্ছিল। দলের শীর্ষ পর্যায়ের কোন কোন নেতা মুজিবুর রহমান সারোয়ারকে অনেক আগে থেকেই পছন্দ করতেন না, তা অনেকের জানাও ছিল। সে সুযোগকে কাজে লাগাতে অনেক আগে থেকেই তৎপড়তাও ছিল। স্থানীয়ভাবেও দলের ভেতরে প্রতিপক্ষরা পদ পেয়ে এখন বেজায় খুশি।
কিন্তু রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলে ইতোমধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে ‘কেন্দ্রের শীর্ষ পর্যায়ের অজানা অপছন্দের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে যে আহবায়ক কমটি গঠন করা হল, তারা কতদিনে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করবেন ? আর ততদিন মহানগরী সহ বরিশালে দেশের প্রধান এ বিরোধী দলের রাজনৈতিক কর্মকান্ড অব্যাহত রাখা সহ সংগঠন সমৃদ্ধ না হোক বর্তমান অবস্থা ধরে রাখতে সক্ষম হবেন তো ?
গত ১২ বছর ধরে দক্ষিণাঞ্চল সহ সারা দেশে বিরোধী দলহীন গনতান্ত্রিক ব্যবস্থার সংস্কৃতির যে বিস্তৃতি ঘটেছে, সে ক্ষেত্রে প্রধান বিরোধী দলের শক্তিশালী সাংগঠনিক কাঠামোর কোন বিকল্প নেই বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল। কিন্তু গনতন্ত্রের অত্যন্ত দূর্বল ও নাজুক সময়ে সাংগঠনিক কাঠামোকে শক্তিশালী করার পরিবর্তে বরিশাল মহানগর সহ দুটি সাংগঠনিক জেলা কমিটি বিলুপ্ত করে নতুন আহবায়ক কমিটি গঠন করল বিএনপি। তারা সংগঠন সহ মাঠ কর্মীদের জন্য কতটুকু কি করতে পারবেন, তা নিয়ে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলে সংশয় রয়েছে ।
তবে নতুন আহবায়ক কমিটি সহ তাদের অনুসারীরা যথেষ্ঠ অশাবাদী। খুশি মুুুজিবুর রহমান সারোয়ার-এর নিজ দলীয় প্রতিপক্ষরাও। আর দলটির রাজনৈতিক প্রতিপক্ষও এ কমিটি নিয়ে সুন্তুষ্ট। কারণ বর্তমান দূর্বল গনতান্ত্রিক ব্যবস্থায় শক্তিশালী রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের চেয়ে মেরুদন্ডহীন বিরোধী দলই আশা করেন অনেকে।
কারণ, ১৯৭৩ সালের পরে সবগুলো নিরপেক্ষ নির্বাচনেই দক্ষিণাঞ্চলের প্রাণকেন্দ্র বরিশাল সদর আসনটি ছিল বিএনপি’র দখলে ।
তবে এসব বিষয়ে কোন মন্তব্য করেন নি বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও অধুনালুপ্ত মহানগর কমিটির সভাপতি মুজিবুর রহমান সারোয়ার। ৪-১১-২০২১.



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রাজনৈতিক


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ