বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
যশোরে আগুনে পুড়ে শিরিন আক্তার (২৮) নামে এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। তিনি যশোর সদর উপজেলার আরবপুর মাঠপাড়ার জুয়েল সরদারের স্ত্রী। তবে এই মৃত্যুকে ঘিরে পরস্পর বিরোধী বক্তব্য পাওয়া গেছে। নিহতের পিতার দাবি, শিরিনকে তার স্বামী গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। কিন্তু নিহতের শ্বশুর বাড়ির লোকজনের দাবি, ওই গৃহবধূ স্বামীর উপস্থিতিতে নিজের শরীরে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। আর পুলিশের দাবি উভয় ঘটনা শুনেছে। তবে বিষয়টি প্রকৃত তদন্ত না করে কিছুই বলা যাচ্ছেনা।
যশোর কোতয়ালি থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) শেখ তাসমীম আলম এলকাবাসির উদ্ধৃতি দিয়ে জানান, প্রায় তিন বছর আগে ওই এলাকার মিজানুর রহমানের ছেলে জুয়েল সরদারের সাথে ঝিকরগাছা উপজেলার কায়েমকোলা গ্রামের খলিলুর রহমানের মেয়ে শিরিন আক্তারের বিয়ে হয়। দাম্পত্য জীবনে তাদের সংসারে সাকিব (দেড় বছর) একটি সন্তান আছে। উভয়ের এটি দ্বিতীয় বিয়ে। প্রায় সময় তাদের দাম্পত্য কলহ বাঁধে। এক পর্যায়ে গৃহবধূ শিরিন গ্যাসের চুলা থেকে নিজের শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। সে সময় তার স্বামী জুয়েল বাড়িতে ছিলেন। শিরিন ছোটাছুটি করতে থাকলে জুয়েল পানিয়ে দিয়ে শরীরের আগুন নিভিয়ে দেয়। এ সময় চিৎকার চেচাঁমেচির খবর শুনে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে আসে। পরে শিরিনের দুই দেবর ও শাশুড়ি এগিয়ে এসে তাকে দ্রুত যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। কিন্তু হাসপাতাল থেকে তাকে খুলনায় রেফার্ড করা হলে তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানকার চিকিৎসকরা তাকে ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে রেফার্ড করেন। তাকে একটি গাড়িতে করে ঢাকায় নেয়া হচ্ছিল। পথিমধ্যে ফুলতলা এলাকায় পৌছালে তার মৃত্যু হয়।
পুলিশ পরিদর্শক তাসমীম আলম জানিয়েছেন, গৃহবধূর মৃত্যু হলে জুয়েল ও তার দুই ভাই এবং মা সরাসরি যশোর কোতয়ালি থানায় লাশ নিয়ে আসে। পরে পুলিশ লাশ যশোর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। জুয়েলের মা আমেনা বেগম, ভাই রমজান ও সানা উল্লাহ গৃহবধূর পিতার বাড়ি কায়েমকোলায় যায়। ওই সময় পুলিশের কাছে সংবাদ আসে ওই তিনজনকে আটকে রাখা হয়েছে। পরে পুলিশ তাদের ওই বাড়ি থেকে নিয়ে আসে।
এদিকে গৃহবধূর মৃত্যু সম্পর্কে নিহতের পিতা খলিলুর রহমান জানিয়েছেন, তার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে। জুয়েলের সাথে বিয়ের পর থেকে তার মেয়ে শিরিনকে তার স্বামী জুয়েল নির্যাতন করতো। জুয়েলকে অনেক টাকা সোনার গহনা ও মালামাল দেয়া হয়। কিন্তু তারপরও নির্যাতন করা হয়। জুয়েল তার মেয়ের শরীরের পেট্রোল ঢেলে শরীরের আগুন জ্বালিয়ে দিয়ে পালিয়ে গেছে।
অপরদিকে, জুয়েলে মা আমেনা জানিয়েছেন, তিনি অন্য বাড়িতে থেকেন। শিরিন অনেক জেদি মেয়ে। শুনেছেন-গন্ডোগোলের পর শিরিন নিজের শরীরে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। ওই সময় জুয়েল পানি ঢেলে আগুন নিভিয়ে হাসতাপালে নিয়ে বাঁচানোর চেষ্টা করেছে।
ঘটনাস্থলে যাওয়া পুলিশ কর্মকর্তা এসআই আনছারুল হক সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ঘটনাস্থলে গিয়ে তিনি আশেপাশের লোকজনের কাছে ঘটনা শুনেছেন। তাতে মৃত্যুর ঘটনাটি রহস্যজনক। ঘটনা তদন্ত না করে কিছু বলা যাচ্ছে না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।