মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
আইএসআইএস-এর সাবেক নেতা আবু ওমর খোরাসানীর মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়েছে বলে ঘোষণা করেছে তালেবান। তিনি আফগানিস্তানের দায়েশ স্পিøন্টার সেলের একজন প্রধান ব্যক্তিত্ব ছিলেন - যা গতমাসে কাবুল বিমানবন্দরে বোমা হামলার পেছনে ছিল। গত মাসের ওই হামলায় অন্তত ১৮০ জন নিহত হয়েছিল। খোরাসানির ভাগ্য অনিশ্চিত থেকে যায় যখন তালেবানরা ক্ষমতায় আসে এবং রাজধানীতে বন্দী পল-ই-চরখি কারাগারটি দখল করে।
কিছু রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে যে, দেশটিতে বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে পড়ায় তিনি হাজার হাজার অন্যান্য বন্দির সাথে মুক্তি পেয়েছেন। কিন্তু ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানিয়েছে, তাকে আটজন লেফটেন্যান্টসহ গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। লেবাননের টিভি স্টেশন আল-মায়াদীন জানায়, সপ্তাহান্তে তালেবান নিশ্চিত করেছে যে, তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। জিয়াউল হক নামেও পরিচিত খোরাসানি তালেবানদের গ্রীষ্মকালীন দখলের আগে থেকেই মৃত্যুদÐে ছিলেন। তাকে ২০২০ সালের মে মাসে কাবুলের বাইরে একটি বাড়িতে মার্কিন ও আফগান বাহিনী ধরে নিয়ে গিয়েছিল এবং তাকে মৃত্যুদÐ এবং ৮০০ বছরের কারাদÐ দেওয়া হয়েছিল বলে জানা গেছে।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল বলেছে, তারা আগস্টের মাঝামাঝি সময়ে মৃত্যুর দুই দিন আগে কারাগারে খোরাসানীর সাক্ষাৎকার নিয়েছিল। যদিও তার গোষ্ঠী তালেবানদের সাথে যুদ্ধে রয়েছে, তিনি তাদের অগ্রযাত্রাকে আমূল পরিবর্তনের আশ্রয়দাতা হিসাবে প্রশংসা করেছিলেন এবং ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন যে তারা তাকে ছেড়ে দেবে। খোরাসানি বলেন, ‘তারা যদি ভালো মুসলমান হয় তবে তারা আমাকে ছেড়ে দেবে’।
রিপোর্ট বলছে, তাকে কারাগার থেকে নিয়ে গিয়ে গুলি করা হয়েছিল। তার লাশ দেখানোর জন্য একটি যাচাই না করা ছবি পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা হয়েছিল। তার মৃত্যুদÐ একটি শক্তিশালী সঙ্কেত যে, তালেবান আইএসআইএস সন্ত্রাসীদের সাথে কাজ করবে না, যারা আফগানিস্তানে একটি নতুন ঘাঁটি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেছে।
একসময় আল-কায়েদার দখলকৃত ভ‚মি দখল করে আইএসআইএস-কে ২০১৫ সালে গঠিত হয়েছিল এবং ইরাক ও সিরিয়ায় স্বঘোষিত খেলাফতের পতন থেকে পালিয়ে আসা বিদেশী জিহাদিদের দ্বারা উৎসাহিত হয়েছিল।
২০১৭ সালের এপ্রিল মাসে তার পূর্বসূরী আব্দুল হাসিব লোগারি নিহত হওয়ার পর খোরাসানী নেতা হন। সপ্তাহ খানেক পরে, সন্ত্রাসীরা গর্ব করে বলে, তারা তোরাবোরা পাহাড়ে ওসামা বিন লাদেনের ‘দুর্ভেদ্য’ গুহা দুর্গ দখল করেছে। এরপর থেকে আইএসআইএস-কে জিহাদিরা আফগান ও ন্যাটো সেনাদের ওপর অসংখ্য হামলা চালিয়েছে এবং তালেবানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধও করেছে। গত বছর একটি অসুস্থ হামলায় বন্দুকধারীরা একটি প্রসূতি হাসপাতালে হামলা করে এবং নবজাতক, মা এবং নার্সসহ ১৬ জন নিরীহকে হত্যা করে।
গত মাসে আইএসআইএস-কে কাবুল বিমানবন্দরে হতাশ অভিবাসীদের ভিড় লক্ষ্য করে একটি আত্মঘাতী বোমা হামলার দায় স্বীকার করে। এতে ১৩ মার্কিন সেনাসহ শতাধিক ব্যক্তি মারা গিয়েছিল। পেন্টাগন ধারাবাহিক ড্রোন হামলা চালিয়ে বলেছে যে, এই নৃশংসতার সাথে জড়িত বেশ কয়েকজন সন্ত্রাসীকে নির্মূল করা হয়েছে। কিন্তু আইএসআইএস-কে অমানবিক নেতারা এখন তালেবানের বিরুদ্ধে একটি ভয়াবহ নতুন গেরিলা যুদ্ধের জন্য এশিয়া জুড়ে ধর্মান্ধদের নিয়োগ করছে বলে জানা গেছে। তারা ব্রিটিশ জিহাদিদের পশ্চিমে নতুন সন্ত্রাসের ঢেউ আনার জন্য নিয়োগ দিচ্ছে বলেও জানা গেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গোষ্ঠীটি তালেবানকে ‘খুব মধ্যপন্থী’ বলে মনে করে এবং মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়ায় নতুন খিলাফত প্রতিষ্ঠার উচ্চাকাক্সক্ষা রয়েছে।
হেনরি জ্যাকসন সোসাইটির রিসার্চ ফেলো ডা. রাকিব এহসান দ্য সান অনলাইনকে বলেন, ‘আইএসআইএস-কে তালেবানদের থেকে ভিন্ন প্রাণী। ‘তাদের চ‚ড়ান্ত লক্ষ্য হল একটি বৈশ্বিক ইসলামী খেলাফত প্রতিষ্ঠা করা এবং তালেবানরা শুধুমাত্র আফগানিস্তানে শরিয়া আইন বাস্তবায়নে মনোনিবেশ করেছে’।
‘আইএসআইএস-কে বিশ্বাস করে যে, তালেবান একটি সংস্কারবাদী আন্দোলন যা ইসলামের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে এবং তারা বিভ্রান্ত (প্রাক্তন সদস্য) যারা এ মতামতটি শেয়ার করে নিয়েছে। ‘ইসলামিক স্টেট পশ্চিমা সভ্যতা ধ্বংসের দিকে মনোনিবেশ করেছে’।
আফগানিস্তানে আইএসআইএস-কে-এর প্রায় ২,২০০ সদস্য রয়েছে। এদের বেশিরভাগই পূর্ব নাঙ্গাহর প্রদেশে, অন্যদিকে তালেবানের শক্তিশালী সদস্য সংখ্যা কমপক্ষে ৭৫ হাজার।
তালেবান ‘বিপথগামী’ আইএসআইএস-কে’র হুমকি প্রত্যাখ্যান করে দাবি করেছে যে, বিশাল সংখ্যক চরমপন্থীরা আফগান জনগণের দ্বারা ব্যাপকভাবে ‘ঘৃণিত’। কিন্তু কিছু বিশেষজ্ঞ মনে করেন যে, প্রদেশে হাজার হাজার তালেবান কট্টরপন্থী প্রতিদ্ব›দ্বী গোষ্ঠীর প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করতে পারে, যেসব নীতি তারা খুব নরম বলে মনে করে, যেমন মেয়েদের স্কুলে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া। সূত্র : দ্য সান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।