Inqilab Logo

শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

তেঁতুলিয়ার চরে বিরল প্রজাতির মৃত ডলফিন

বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি | প্রকাশের সময় : ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ২:৫৭ পিএম

পটুয়াখালীর বাউফলের তেঁতুলিয়ার চরে ভাসছে মৃত ডলফিন। নদী বেষ্টিত উপজেলার মুলভূখন্ড বিচ্ছিন্ন চন্দ্রদ্বীপের কৃষক খলিলুর রহমান, ছালাম মৃধা, জামাল হোসেনসহ কয়েকজন জানায়, বৃহস্পতিবার রাতে তেঁতুলিয়া থেকে উঠে আসা খালের বাকে চরধানদী এলাকায় কয়েকজন মৃত ভাসতে দেখে ডলফিনটি। এরই মধ্যে পচন ধরলেও ডলফিনটির ছাই রঙা পিঠ, সাদা বুক ও পেট স্পস্ট বোঝা যাচ্ছিল। ডলফিনটির ঠোট বাঁশির মত। আর ঠোটের দু’পাটিতে আছে অসংখ্য দাত। লম্বায় স্থানীয় মাপের প্রায় পৌঁনে পাঁচ হাত। অনুমানিক ৬০-৬২ কেজির মতো ওজন হবে। পছন লেগে র্দুগন্ধ ছড়াতে শুরু করলেও ছেজা শরীরে রোদের ঝিলিক। তবে উপায় না দেখে চর ধানদী এলাকার সোহাগ মাতবর নামে একজন মৃত ডলফিনটিকে বাড়ি নিয়ে যায় পঁচিয়ে গাছের সার হিসেবে ব্যাবহারের জন্য। এ সময় প্রতিবেশি ও বাড়ির লোকজন ভিড় করে ডলফিনটি এক নজর দেখতে। বাঁশি ঠোটি বিরল প্রজাতির এই মৃত ডলফিনটি স্থানীয়দের কাছে ছটকা নামে পরিচিত। মোহাম্মদ আলী নামে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক কর্মচারির মাধ্যমে খবর পেয়ে দিদ্দিকুর রহমান নামে এক মাছ ব্যাসায়ির ট্রলারে তেঁতুলিয়া পাড়ি দিয়ে সোহাগ মাতবরের বাড়িতে পৌঁছে আমাদের বার্তার এই প্রতিবেদক স্থানীয়দের কাছে ছটকা নামে পরিচিত বিরল প্রজাতির বাঁশি ঠোটি মৃত ডলফিনটি দেখতে পায়। এ সময় পঁচন ধরে গন্ধ ছড়াতে শুরু করেছে ডলফিনটি। আর বাঁশি ঠোটের দাঁতের সঙ্গে পলিমারের রশি বেঁধে বাড়ি লাগোয়া খাল পথে টেনে নিয়ে ধান ক্ষেতের পাশে ফেলে রাখছিল সোহাগ মাতবর নামে স্থানীয় একজন। প্রস্তুতি নিচ্ছিল মাটি চাপা দিতে।

‘সেভ দি বার্ড এ্যান্ড বি’ নামে পরিবেশ আন্দোলনের পরিচালক মন্ডলীর একজন শামসুল নাহার বলেন, ‘বৈশ^য়িক আবহাওয়া পরিবর্তণের বিরুপ প্রভাব আজ জলে-স্থলে সর্বত্র। আবার মানুষ তার আবাসস্থল বাড়াতে গিয়ে বাদ-বিচার না করে হানা দিচ্ছে প্রাণীকুলের ওপর। একই সঙ্গে আবার প্রাণীকুলও হচ্ছে বিপর্যস্ত। ১০-১২ বছর আগে তেঁতুলিয়ার স্বচ্ছ জলে এ ধরণের ডলফিন প্রায়ই খেলা করতে দেখা যেত। আর জেলেরা শুশুক নামে জানত। মিঠা পানির এই ডলফিনের মৃত্যুর খবর পরিবশ-প্রকৃতির জন্য অশনিসংকেত। প্রাণ-প্রকৃতি-প্রতিবেশ ভাল রাখতে এসব বিরল প্রজাতির ডলফিন নিয়ে গভেষণাসহ এদের প্রতি যতœবান হতে হবে।’

এ ব্যাপারে কালিশুরী ডিগ্রি কলেজের জীব বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক তাসলিমা বেগম জানান, জলবায়ূ পরিবর্তণের বিরুপ প্রতিক্রিয়ায় লবন পানির হানা, নদীতে চর জেগে ওঠা, অনিয়ন্ত্রিত কীটনাশকের ব্যাবহার, নদীতে অবৈধ জালের ব্যাবহারসহ মানুষের অনাচারে তেঁতুলিয়ায় আর আগের মতো ডলফিনের দেখা মেলে না। বিরল এসব প্রাণীদের প্রতি সবার অনুকুল দৃষ্টিভঙ্গি থাকা উচিত।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ডলফিন

২৪ জানুয়ারি, ২০২২
১৯ অক্টোবর, ২০২১

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ