পবিত্র লাইলাতুল বরাত
আজ দিবাগত রাত পবিত্র লাইলাতুল বরাত। পরম করুণাময় আল্লাহতায়ালা তার বান্দাদের গুনাহ মাফ, বিপদমুক্তি ও
দীর্ঘকালের ভয়াবহ যুদ্ধে আফগানিস্তান প্রায় বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। দেশটির মানুষ চরম দুর্দশায় নিপতিত হয়েছে। বিশ্বব্যাংক বলেছে, ‘আফগানিস্তানের ভঙ্গুর অর্থনীতি এগিয়ে চলেছে মূলত সাহায্যের ওপর ভিত্তি করে’। বর্তমানে দেশটির ৭০% মানুষ দরিদ্র ও ৪০% বেকার। মুদ্রার মান কমেছে অনেক, মুদ্রাস্ফীতি বেড়েছে ব্যাপক, বৈদেশিক মুদ্রার মজুদও নগণ্য। পরপর দু’বছর তীব্র খরায় চরম খাদ্য সংকট চলছে। মানুষ জীবন নির্বাহের জন্য পুরানো জিনিসপত্র বিক্রি করে দিচ্ছে। ইউএনডিপি বলেছে, ‘আফগানিস্তানে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক যে সংকট চলছে তাতে দ্রুতই ৯৭% আফগান দরিদ্র হবে’। ইউনিসেফ বলেছে, ‘আফগানিস্তানে চলতি বছর অন্তত ১০ লাখ শিশু তীব্র অপুষ্টিতে মারা যেতে পারে’। এ অবস্থায় তালেবানের বিজয়ের পর দেশটির সাড়ে ৯শ’ কোটি ডলার জব্দ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এছাড়া, সব ধরনের সহযোগিতা স্থগিত করেছে আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংক। সাবেক আফগান ক‚টনীতিক রোয়া রহমানি বলেছেন, ‘দুর্নীতিগ্রস্ত নেতারাই আফগানিস্তানকে ডুবিয়েছে। ঘানি সরকারের সীমাহীন দুর্নীতিই দেশটিতে তালেবানের পুনরুত্থানের পথ প্রশস্ত করেছে’। রাশিয়া বলেছে, ‘আফগানিস্তানে মার্কিন সেনাদের দুই দশকের দখলদারিত্বের কারণে দেশটিতে দুঃখ-দুর্দশা ও সন্ত্রাস বেড়েছে’। আমেরিকার ব্রাউন ইউনিভার্সিটির এক গবেষণা প্রতিবেদন মতে, ‘গত দুই দশকে আমেরিকার সরাসরি আগ্রাসনে নিহত হয়েছে প্রায় ১০ লাখ মানুষ। এ সময় প্রায় ৮০টি দেশে আমেরিকা বোমা হামলা ও গোলাবর্ষণ করেছে অথবা সরাসরি যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়েছে। এতে আমেরিকার খরচ হয়েছে আট ট্রিলিয়ন ডলার। ২.৩ ট্রিলিয়ন ডলার খরচ হয়েছে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে আগ্রাসন পরিচালনায়’। এছাড়া, GRAVITAS টিভির প্রতিবেদন মতে, ‘আফগানিস্তানে ২০০১-২০২১ সময়ে আমেরিকা সর্বমোট ২.২৬ ট্রিলিয়ন ডলার খরচ করেছে, যার মোস্ট অব মানি আমেরিকানদের হাতেই ফিরে এসেছে ডিফেন্স কোম্পানি ও কনট্রাক্টরদের মাধ্যমে। কারণ, আফগানিস্তানের যুদ্ধ ও পরিকাঠামোর সবকিছুই করেছে আমেরিকানরা। তারাই অস্ত্র, যানবাহন, গোলাবারুদ ও বিমান দিয়েছে ও আফগান সৈন্যদের প্রশিক্ষণ দিয়েছে। আফগানিস্তানের জনগণ সে টাকার ভাগ পায়নি!’ উল্লেখ্য যে, দীর্ঘ চার দশকব্যাপী ভয়াবহ যুদ্ধে দেশটির প্রায় এক কোটির মতো মানুষ বিভিন্ন দেশে শরণার্থী ও অভ্যন্তরীণ উদ্বাস্তু হয়েছে। প্রায় দুই লাখ মানুষ নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে তার চেয়ে অধিক। তাই সম্প্রতি অনুষ্ঠিত জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের অধিবেশনে চীন বলেছে, ‘যুক্তরাষ্ট্রসহ সংশ্লিষ্ট দেশের সেনারা আফগানিস্তানে সাধারণ মানুষ হত্যা করেছে ও নির্যাতন চালিয়েছে। তাদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের অপরাধের ন্যায্য তদন্ত ও দোষীদের বিচার করা উচিত’। একই দাবি করেছেন মার্কিন কংগ্রেস সদস্য ইলহান ওমরও।
আফগানিস্তান এখন পূর্ণ স্বাধীন। গত ৩০ আগস্টে আমেরিকার সর্বশেষ সেনা চলে যাওয়ার পর থেকেই দেশটি বিদেশি দখলদারমুক্ত হয়ে পূর্ণ স্বাধীন হয়েছে। তালেবান মার্কিন নেতৃত্বাধীন ন্যাটো বাহিনীর বিরুদ্ধে দীর্ঘ ২০ বছর যুদ্ধ করে ন্যাক্কারজনকভাবে পরাস্ত করেই এই অবিস্মরণীয় বিজয় অর্জন করেছে। ফলে আর কোন আগ্রাসী শক্তি আফগানিস্তানে আগ্রাসন চালানোর সাহস পাবে না। সুদূর অতীতে মঙ্গোলিয়া ও ব্রিটেনের লজ্জাজনক পরাজয়ের কথা বাদ দিলেও নিকট অতীতে তথা গত চার দশকের মধ্যে দু’টি পরাশক্তি-সোভিয়েত ইউনিয়ন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লজ্জাজনক পরাজয়ের পর আর কোন ইতিহাস সচেতন শক্তির সাহস হবে না আফগান বীরদের মৃত্যুকুপে পা ফেলা। বিজয়োত্তর তালেবান গত ৭ সেপ্টেম্বর মোল্লা হাসান আখুন্দকে প্রধানমন্ত্রী করে ৩৩ সদস্য বিশিষ্ট অন্তর্বর্তীকালীন অস্থায়ী সরকার গঠন করেছে। উপরন্তু গত ২১ সেপ্টেম্বর বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠির ১৭ জনকে মন্ত্রী পরিষদে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। কোন নারীকে মন্ত্রী করা হয়নি। তবে প্রধান মুখপাত্র জাবিউল্লাহ বলেছেন, ‘আমরা মন্ত্রিসভাকে আরো শক্তিশালী করার চেষ্টা করছি এবং ইনশাল্লাহ প্রয়োজনীয় বিভাগগুলোর সুনির্দিষ্ট পদে নারীদেরকে নিয়োগ দেয়া হবে’। তালেবান সরকার নিয়মিত কর্ম পরিচালনা করছে। জাতিসংঘের চলতি সাধারণ অধিবেশনে অংশগ্রহণ ও তাদের স্থায়ী প্রতিনিধি নিয়োগ করতে চিঠি দিয়েছে। এছাড়া, তালেবানের বিজয়ের দু’তিন দিন পর থেকেই দেশের সব কিছু স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। অফিস, ব্যাংক, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বাজার, মার্কেট, যানবাহন ইত্যাদি স্বাভাবিকভাবে চলছে। স্বল্প আকারে নারীরা তাদের কাজকর্মে অংশগ্রহণ করছে। নারীদের শিক্ষা ও কাজের ক্ষেত্রে নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য বিশেষজ্ঞরা কাজ করছেন। প্রধানমন্ত্রী মোল্লা আখুন্দ কাবুলে পাকিস্তান, চীন ও রাশিয়ার প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। চুরি, ডাকাতি ও দুর্নীতি প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। তবে, সন্ত্রাস কিছু আছে! সকলকে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করায় পুলিশ সদস্য ও পাইলটরা কাজে ফিরেছে। কাতার ও তুরস্কের কারিগরি সহায়তায় বিমান বন্দর চালু হয়েছে। স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল করছে। ইরান জ্বালানি তেল সরবরাহ করছে। দুর্দশাগ্রস্ত আফগানদের সহায়তার জন্য পাকিস্তান ৩০ টন খাদ্য ও চিকিৎসা সামগ্রী, সংযুক্ত আরব আমিরাত বিভিন্ন ধরনের সহায়তা, হু চিকিৎসা সামগ্রী ও ইরান এক বিমান ভর্তি ত্রাণ সামগ্রী পাঠিয়েছে। চীন খাদ্য সামগ্রী ও করোনার টিকাসহ ৩.১০ কোটি মার্কিন ডলার সহায়তার এবং পুনর্গঠনের অর্থ প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। ইন্দোনেশিয়াও ৩০ লাখ ডলার সাহায্য ও ২৮.৫০ লাখ ডলার উন্নয়ন সহায়তার ঘোষণা দিয়েছে। পাকিস্তান আফগান সেনাবাহিনীকে পুনর্গঠনে সহায়তা করার ঘোষণা করেছে। ইইউ, ওআইসিসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখার কথা বলেছে। ইইউ প্রধান বোরেল বলেছেন, এখন তালেবানের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করা ছাড়া এই জোটের সামনে বিকল্প কোনো পথ নেই। কিন্তু এত কিছুর পরও দেশটিতে আরও ব্যাপক সাহায্য প্রয়োজন। নতুবা দেশটিতে চরম মানবিক সংকট দেখা দেবে।
এই অবস্থায়, জাতিসংঘের উদ্যোগে আফগান বিষয়ে এক জরুরী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় গত ১৩ সেপ্টেম্বর জেনেভায়।তাতে সংস্থার মহাসচিব বলেন, ‘আফগানিস্তানে বিপর্যয় ঠেকাতে ৬০ কোটি মার্কিন ডলার প্রয়োজন। এজন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসতে হবে। এই অর্থের এক তৃতীয়াংশ দরকার জরুরি খাদ্য সহায়তা খাতে’। সভায় যুক্তরাষ্ট্র ৬.৪০ কোটি ডলার,জার্মানি ১০ কোটি ইইরো ও ফ্রান্স ১১.৮০ কোটি ডলারসহ মোট ৪০টি দেশের প্রতিনিধি ১শ’ কোটি ডলার সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু প্রতিশ্রুতি দিয়েই ক্ষান্ত হলে চলবে না, সেটা খুব দ্রুত দিতে হবে। নতুবা দেশটিতে অনেক মানুষের অকালে প্রাণ ঝরে পড়বে। দ্বিতীয়ত: জাতিসংঘ আফগানদের রক্ষা করার জন্য বিশ্ববাসীর কাছে সাহায্য চেয়েছে। অথচ তারই অঙ্গ প্রতিষ্ঠান বিশ্ব ব্যাংক ও আইএমএফ সহায়তা স্থগিত রেখেছে, যা অযোক্তিক। তাই উক্ত সংস্থা দু’টির উচিৎ অবিলম্বে উক্ত স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করা। যা’হোক, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে আফগান মিশন- ইউএনএএমএ অব্যাহত রাখার প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছে গত ১৭ সেপ্টেম্বর। সে মতে দেশটিতে বেসামরিক নাগরিক রক্ষা, মানবিক সহায়তা সমন্বয় করা ও নারী অধিকার রক্ষা করা হবে।আফগান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জাতিসংঘ মিশনের প্রধানের সাথে আলোচনায় বলেছেন, জাতিসংঘের কর্মীরা কোনো বাধা ছাড়াই আফগান জনগণকে গুরুত্বপূর্ণ সহায়তা প্রদান ও তাদের কাজ পরিচালনা করতে পারবেন।কাবুলে আফগান প্রধানমন্ত্রীর সাথে হু’র মহাপরিচালক সাক্ষাৎ করেছেন। তখন হুর মহাপরিচালক বলেছেন, হু আফগানিস্তানের স্বাস্থ্যব্যবস্থায় অব্যাহত সমর্থন দেবে এবং অনুদান বাড়াবে, যাতে দেশটিতে মানবিক বিপর্যয় এড়ানো যায়। যেসব দেশ ও সংস্থা এখনো আফগানিস্তানে সহায়তার ব্যাপারে নিশ্চুপ রয়েছে, তাদের উচিৎ জাতিসংঘের আহবানে দ্রুত সাড়া দিয়ে আফগানদের সহায়তা করা। এটা মানবিক দায়িত্ব। এ ক্ষেত্রে ওআইসি ও ধনী মুসলিম দেশগুলোর বিশেষ দায়িত্ব রয়েছে। সেই সাথে বিশ্ববাসীরও। ইতোমধ্যেই আফগান শরণার্থীদের সহায়তার এক প্রচেষ্টায় অংশগ্রহণ করেছেন মার্কিন সাবেক তিন প্রেসিডেন্ট ও ফাস্টলেডি। তারা হলেন- বুশ ও লরা বুশ, ক্লিনটন ও হিলারি ক্লিনটন এবং ওবামা ও মিশেল ওবামা। এ উদ্যোগে আরও খ্যাতিবানদের শরীক হওয়া প্রয়োজন। এদিকে, চীন ও রাশিয়া বলেছে, আফগানিস্তানকে সংকট থেকে বেরিয়ে আসার জন্য উপযুক্ত সহায়তা দেয়ার দায় পশ্চিমা দেশগুলোর। আফগান শরণার্থীবিষয়ক মন্ত্রী উদ্বাস্তুদের জন্য জরুরি ত্রাণ-সহায়তা প্রদানের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।
ধ্বংসস্তূপে সুখের নীড় গড়তে হবে আফগানদের। সে লক্ষ্যে সন্ত্রাস, দুর্নীতি ও মাদক নির্মূল এবং রাস্তা-ঘাট ও স্থাপনা পুনর্গঠন, শরণার্থীদের দেশে ফেরত আনা এবং তাদের ও অভ্যন্তরীণ বাস্তচ্যুতদের পুনর্বাসন করতে হবে। এসবের জন্য বিপুল অর্থ দরকার। তাতে বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর পর্যাপ্ত ঋণ ও সহায়তা প্রয়োজন। কিন্তু সেসবের জন্য এবং দেশটির ও সরকারের মর্যাদা বৃদ্ধির জন্য বিশ্ববাসীর স্বীকৃতি দরকার। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মুত্তাকি সে আহবানও জানিয়েছেন বিশ্ববাসীর প্রতি। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত দুশানবেতে সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার সম্মেলনের অবকাশে এক বৈঠকে অংশগ্রহণমূলক সরকার গঠনের জন্য তালেবানের প্রতি আহবান জানিয়েছেন ইরান, পাকিস্তান, চীন ও রাশিয়ার পররাস্ট্রমন্ত্রীরা। এছাড়া, সম্মেলনোত্তর সংবাদ সম্মেলনে রুশ প্রেসিডেন্ট বলেছেন, তালেবান প্রশাসনের সঙ্গে সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার একটি যোগাযোগ গ্রুপ গঠন করা দরকার। এর পরপরই পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী সংস্থাটির পক্ষ থেকে আফগান সরকারে যাতে তাজিক, উজবেক ও হাজারাসহ সংখ্যালঘুদের প্রতিনিধিত্ব থাকে সে লক্ষ্যে তালেবানের সাথে আলোচনা শুরু করেছেন। উপরন্তু পাক প্রধানমন্ত্রী বিবিসিক বলেছেন, অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার, মানবাধিকার ও নারী অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং সন্ত্রাস দমন হলে পার্শ্ববর্তী সব দেশ একসাথে তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দিবে।সউদী পররাষ্ট্রমন্ত্রীও বলেছেন, তালেবানের দায়িত্ব আফগানিস্তানে স্থিতিশীল ও অন্তর্ভুক্তিমূলক শাসন ব্যবস্থা। আরও অনেক দেশ ও সংস্থা একই আহবান জানিয়েছে। তাই এদিকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া দরকার তালেবানের। কারণ, বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন থেকে তার চলতি সংকট নিরসন এবং শান্তি ও সার্বিক উন্নতি সম্ভব নয়। দেশটির দারিদ্র ও বেকারত্ব দূর করতে এনজিও’র কার্যক্রম ও ক্ষুদ্র ঋণ ব্যাপক সহায়ক হবে। এটা বাংলাদেশসহ বহু দেশে প্রমাণিত হয়েছে। শ্রমঘন গার্মেন্ট চালু করতে পারলে স্বল্প পুঁজিতেই স্বল্প সময়ের মধ্যে কয়েক লাখ প্রান্তিক মানুষের কর্মসংস্থান হবে।রফতানিও বাড়বে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, তালেবান কালো তালিকাভুক্ত কয়েকজনকে মন্ত্রী করায় সমালোচনা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে পশ্চিমা দেশগুলো অগ্রগামী। কিন্তু আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কিংবা পরাধীনতার জিঞ্জির ছিন্ন করে মাতৃভূমিকে স্বাধীন করার জন্য যারাই যুদ্ধ করে, তারাই প্রতিপক্ষের শত্রুতে পরিণত হয় এবং অনেকেই কালো তালিকাভুক্ত হয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাক হানাদার বাহিনী অনেক মুক্তিযোদ্ধাকে ধরিয়ে দেওয়ার জন্য পুরস্কার ঘোষণা করেছিল। তাদের অনেকেই স্বাধীনতাত্তোর সরকার কর্তৃক মুক্তিযোদ্ধা পদক পেয়েছেন। পরবর্তীতে অনেকেই এমপি, মন্ত্রী, বড় রাজনীতিবিদ হয়েছেন। বিশ্বের বেশিরভাগ মিডিয়া অনবরত তালেবান বিরোধী মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছে। তালেবান সরকারের প্রধানমন্ত্রী আখন্দু নিহত ও উপ প্রধানমন্ত্রী মোল্লা বারাদার অপহৃত, তালেবান চরম দ্বন্দ্বে লিপ্ত, তালেবান নারীর শিক্ষা ও কর্ম বন্ধ করে দিয়েছে ইত্যাদি ধরনের মিথ্যাচার করা হচ্ছে লাগাতার। অথচ, টাইম ম্যাগাজিনের ২০২১ সালের বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী ১০০ জন ব্যক্তিত্বের তালিকায় মোল্লা বারাদার যে স্থান পেয়েছেন, সে খবরটি তেমন প্রচার করা হয়নি। তালেবানের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালোনা, তাদের হেয় প্রতিপন্ন করা, ইসলাম ও মুসলিম বিদ্বেষেই পরিচায়ক বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন।
লেখক: সাংবাদিক ও কলামিস্ট।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।