Inqilab Logo

শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

প্রায় চার দশক পর নতুন স্টুডিও অ্যালবাম নিয়ে ‘অ্যাবা’

বিনোদন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১০:৪৮ এএম | আপডেট : ১০:৫৩ এএম, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১

সর্বকালের অন্যতম সফল সংগীত ব্যান্ড ‘অ্যাবা’ নতুন স্টুডিও অ্যালবাম নিয়ে প্রায় ৪০ বছর পর ফিরে আসার ঘোষণা দিয়েছে। ইউনিভার্সাল মিউজিক গ্রুপের ক্যাপিটল লেবেলের মাধ্যমে “ভয়েজ” অ্যালবাম বিশ্বব্যাপী ৫ নভেম্বর মুক্তি পাবে। সদ্য প্রকাশিত দুটি গান "আই স্টিল হ্যাভ ফেইথ ইন ইউ" এবং "ডোন্ট শাট মি ডাউন" গ্রুপটি স্টকহোমের এন্ডারসনের রিক্সমিক্সিংসভার্কেট স্টুডিওতে রেকর্ড করেছে এবং উভয়ই কনসার্টে থাকবে। ১৯৮২ সালের ডিসেম্বরে "আন্ডার অ্যাটাক" একক প্রকাশের পর গানগুলি ‘অ্যাবা’ থেকে নতুন উপহার, যদিও সদস্যরা, এখন তাদের ৭০-এর দশকে, বেশ কয়েকটি একক গান প্রকাশ করেছে।

ঘোষণা অনুযায়ী, ‘অ্যাবা’- এর ডিজিটাল সংস্করণগুলি তৈরি করা হয়েছে "জর্জ লুকাস প্রতিষ্ঠিত কোম্পানির চার ব্যান্ড সদস্য এবং ইন্ডাস্ট্রিয়াল লাইট অ্যান্ড ম্যাজিকের শক্তিশালী দল নিয়ে" কয়েক সপ্তাহ এবং কয়েক মাস ধরে মোশন-ক্যাপচার এবং পারফরম্যান্স কৌশল নিয়ে "।

২৭ মে লন্ডনের কুইন এলিজাবেথ অলিম্পিক পার্কে অবস্থিত ৩০০০ ধারণ ক্ষমতার অত্যাধুনিক আখড়া অ্যাবা এরেনা খোলা হবে।

এরআগে টিকিটের প্রাক-নিবন্ধন বৃহস্পতিবার (২ সেপ্টেম্বর) বিকালে abbavoyage.com- এ সহ ৭ সেপ্টেম্বর থেকে সাধারণ টিকেট বিক্রির জন্য খোলা হয়।
উলভিয়াস এবং অ্যান্ডারসনের নতুন সংগীত সম্পর্কে সাড়ে তিন বছর ধরে ঘোষণার পরে-প্রথম দুটি গান, তারপরে ছয়টি, ভার্চুয়াল পারফরম্যান্সের কিছু প্রস্তুতি চলছে। ২০১৯ সালে এই জুটি বলেছিল যে কনসার্টের প্রস্তুতি সম্পন্ন হওয়ার সময় সংগীত বিলম্বিত হবে এবং অবশেষে গত সপ্তাহে সোশ্যাল মিডিয়ায় "অ্যাবা ভয়েজ" সম্পর্কে একটি গোপন বার্তা পোস্ট করা হয়েছিল।

সত্তরের দশকে বিশ্বজুড়ে পপ গান হয়ে ওঠে সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। মানুষের মুখে মুখে ফিরত সে সময়ের পপ কিংবদন্তিদের গান। আমেরিকান কিংবা ইংলিশ ব্যান্ডগুলোর জনপ্রিয়তাই ছিল শীর্ষে। এর মধ্যেও একটি সুইডিশ ব্যান্ড গড়ে নিয়েছিল তাদের রাজত্ব। অ্যাগনেথা ফেলেৎসকোগে, বিয়র্ন উলভিয়াস, বেনি অ্যান্ডারসন এবং অ্যানি ফ্রিদ-লিংস্তা—এ চারের নামের প্রথম অক্ষর দিয়ে রাখা হয়েছিল ব্যান্ডটির নাম ‘অ্যাবা’। ‘মানি মানি মানি’ কিংবা ‘মামা মিয়া’ মুক্তির এত বছর পরও হয়ে রয়েছে পপ কালচারাল আইকন, এখনো অনেক তরুণের হেডফোনে বাজে অ্যাবার গান।

শুরুতে ‘অ্যাবা’ দলটির নাম ছিল ‘বেনি অ্যান্ড বিয়র্ন’। কারণ তখন দলে শুধু ছিলেন বেনি অ্যান্ডারসন আর বিয়র্ন উলভিয়াস। পরে যোগ দেন অ্যাগনেথা ও অ্যানি। মূলত ‘নো ডক্টর ক্যান হেল্প উইথ দ্যাট’ ও ‘ইমাজিন ইফ আর্থ ওয়ার ইয়ং’ গান দুটি সুইডেনে জনপ্রিয়তা পাওয়ার পর তাদের আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। পাকা জহুরির মতো দেশটির বিখ্যাত ‘পোলার মিউজিক’-এর মালিক স্টিগ অ্যান্ডারসন তাদের পৃষ্ঠপোষকতা শুরু করেন। তিনি বলেছিলেন, ‘একদিন সারা বিশ্ব তোমাদের গান শুনবে।’

ব্যান্ডে তখন সমান গুরুত্বের চার সদস্য থাকায় ‘বেনি অ্যান্ড বিয়র্ন’ থেকে পরিবর্তন করে নতুন নাম দেওয়া হয় ‘বিয়র্ন অ্যান্ড বেনি, অ্যাগনেথা অ্যান্ড অ্যানি ফ্রিড’। নাম পরিবর্তনের পর জনপ্রিয়তাও যেন বাড়তে থাকে। ১৯৭২ সালে মুক্তি পাওয়া ‘পিপল নিড লাভ’ প্রথমবারের মতো জায়গা করে নেয় আমেরিকার টপ চার্টে। জনপ্রিয়তার পাল্লা বাড়ার সঙ্গে নামটা নিয়েও যেন শুরু হয় বিভ্রান্তি। শ্রোতাদের দেওয়া বিভিন্ন নামে বিরক্ত হয়েই নিজেদের নামের প্রথম অক্ষর দিয়েই অ্যাবা রাখা হয় ব্যান্ডের নাম।

বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয়তার জন্য তাদের মিউজিক ভিডিওগুলোও বানাতে হতো খুব সাবধানে। তবে বিভিন্ন দেশকে প্রতিনিধিত্ব করলেও চিত্রায়ণ কিন্তু করতেন সুইডেনেই, কারণ বিয়র্ন ও অ্যাগনেথার দুই সন্তান এবং অ্যাগনেথা নিজেই যে ভয় পেতেন উড়োজাহাজ যাত্রাকে।

প্রায় ১২ বছর বিশ্ব শাসনের পর ১৯৮২ সালে ভেঙে যায় ব্যান্ডটি। পাশাপাশি বিচ্ছেদও হয় দুটি বিবাহিত জুটির। ব্যান্ডটি গড়া ও ভাঙার পেছনে সদস্যদের ব্যক্তিগত সম্পর্কের প্রভাব ছিল স্পষ্ট। তাদের মধ্যে সম্পর্কের টানপড়েনগুলো টের পাওয়া যেত গানের কথায়। শুরুতে গানের কথা অনেক বেশি ঝলমলে ও আনন্দমুখর থাকলেও দিন যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হয়ে উঠতে থাকে বিষণ্ন। পরে ব্যান্ডের সদস্যরা নিজ নিজ ক্যারিয়ারে মনোনিবেশ করলেও কখনোই ফিরে আসেনি সেই জাদু। ব্যান্ড সদস্যদের কাছের বন্ধুদের মতে, খ্যাতির চাপ সইতে না পেরেই ভেঙে যায় ‘অ্যাবা’।

১৯৭২ থেকে ১৯৮২ সাল নাগাদ মাত্র এক দশকের পথচলায় অ্যাবা’র বিলিয়ন ডলারের উপরে ব্যবসায়িক সফলতা বিশ্বের আর কোনো পপ সঙ্গীত দলের নেই। তেমনি আজও দলটির ইংরেজি অ্যালবাম ‘অ্যাবা গোল্ড’ কিংবা ইউরোপের স্পেন থেকে দক্ষিণ আমেরিকার সকল স্প্যানিশভাষীদের জন্য ‘অ্যাবা ওরো’ প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের মানুষের কাছে এখনো অমলিন।

ব্যান্ডের সেই স্বর্ণযুগে ‘অ্যাবা’ ছিল যেন এক কিংবদন্তির নাম। ব্যান্ডের সদস্যরা সেই কিংবদন্তির চরিত্রে। না হলে বেনি ও বিয়র্ন আসলে একই ব্যক্তি, যাঁরা জাদুবলে চোখে ধোঁকা দিয়ে মঞ্চে গান করে—এমন মিথ কি আর এমনি এমনি ছড়ায়। অ্যাবার ‘ওয়াটারলু’ গানটি ১৯৭৪ সালে ইউরোভিশন সং কনটেস্টে জয়ী হয়। ১৯৭০-এর দশকে ‘ডান্সিং কুইন’সহ তাদের অনেকগুলো গান সুপারহিট হয়। ১৯৮২ সালে তারা ব্যান্ড থেকে আলাদা হয়ে যান। ১৯৮১’র ‘দ্য ভিজিটর্স’-এর পর অ্যাবার নতুন কোনও অ্যালবাম মুক্তি পায়নি এবং ১৯৭৯-৮০’র ‘অ্যাবা : দ্য ট্যুর’-এর পর তারা সফরও করেননি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সঙ্গীত


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ