মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
সর্বশেষ রয়েল এয়ার ফোর্সের ট্রান্সপোর্টার চলে গেছে এবং ব্রিটিশরাও চলে গেছে। তাদের সাথে নিয়ে গেছে ১৫ হাজার লোক এবং ১৭৩ বিড়াল এবং কুকুর। ফরাসিরা তাদের তেরঙা নামিয়ে প্রায় ৩ হাজার মানুষকে সরিয়ে নিয়ে প্রস্থান করেছে। জার্মানি ছাড়ার আগে আরো ৫ হাজার ১শ’ জনকে বের করে নিয়ে গেছে। জাতিগতভাবে ন্যাটো শক্তি যারা আফগানিস্তানে আমেরিকার সাথে লড়াই করে ২০ বছর কাটিয়েছে তারা গত কয়েকদিন ধরে তাদের মিশন শেষ করার জন্য দৌড়ঝাঁপ করেছে।
ইউএস সেন্ট্রাল কমান্ডের প্রধান জেনারেল কেনেথ ম্যাকেনজি ৩০ আগস্ট পূর্ব সময় বিকাল সাড়ে ৩টায় আফগানিস্তান থেকে আমেরিকার প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন, যা কাবুলে ৩১ আগস্টের ভোরের দিকে ছিল: ঠিক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সময়সূচিতে। সর্বশেষ লুম্বারিং সি -১৭ কার্গো প্লেনটি কাবুল বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়ন করে হিন্দু কুশের চ‚ড়ার ওপর দিয়ে অতিক্রম করে দিগন্তে অদৃশ্য হয়ে গেল। পেছনে ফেলে গেল তাদের ব্যর্থতার সাক্ষী। দেশকে পুরোপুরি তালেবানদের নিয়ন্ত্রণে রেখে গেল। এবং মাঝে মাঝে ইসলামিক স্টেট খোরাসান (আইএসকেপি) জঙ্গিদের হামলার শঙ্কা।
একটি পৃথক শটে, একটি আমেরিকান ড্রোন গত ২৯ আগস্ট বিকেলে কাবুলের বিমানবন্দরের কাছে একটি সন্দেহজনক গাড়ি বোমায় উড়িয়ে দেয়। স্থানীয়রা জানায়, শিশুসহ বেশ কয়েকজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে। একটি আমেরিকান বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে, গাড়িটি একই আইএসকেপি জঙ্গিদের কাছ থেকে আসন্ন হুমকি সৃষ্টি করেছিল যারা ২৬ আগস্ট কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে জনতার উপর আত্মঘাতী বোমা হামলা করেছিল। এ হামলায় ১৭০ আফগান এবং ১৩ আমেরিকান সেনা নিহত হয়।
তালেবানদের প্রতিশোধের আশঙ্কায় হাজার হাজার মানুষ কাবুল বিমানবন্দরে ভিড় করলে বিশ্ব হতাশ হয়ে পড়ে। হতাশায় তারা বিমানের যে কোন অংশ ধরে দেশত্যাগ করতে চায়। সমস্ত দুর্দশার মধ্যে, ক‚টনীতিকরা তাদের নিজের নাগরিকদের পাশাপাশি স্থানীয় কর্মচারী, দোভাষী এবং অন্যান্য দুর্বল আফগানদেরকে যতটা সম্ভব সরিয়ে নিয়েছে।
শেষ বিমানগুলো বের হয়ে গেলেও নীতিনির্ধারকদের চিন্তাভাবনা এখন ভবিষ্যতের দিকে এবং আফগানিস্তানের নতুন বাস্তবতাকে কীভাবে মোকাবেলা করতে হবে তার দিকে ফিরে যেতে হবে। পাশ্চাত্যের জন্য তার ক্ষত চাটানো, দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করা এবং এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা প্রলুব্ধকর হতে পারে। সেই অপমানের স্থপতি: তালেবানকে বিচ্ছিন্ন এবং প্রান্তিক করাও প্রলুব্ধকর হতে পারে।
পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মুঈদ ইউসুফ যুক্তি দেন যে, এটি একটি বিপর্যয় হবে। সোভিয়েত প্রত্যাহারের পর আমেরিকা আফগানিস্তানকে পরিত্যাগ করলে ভুলগুলোর পুনরাবৃত্তি করবে। তার উপদেশ আতঙ্কে ভরা। জনাব ইউসুফ ১৯৯০-এর দশকের সাথে উদ্বেগজনক সমান্তরাল দেখেন, যখন গৃহযুদ্ধ, তালেবানদের উত্থান এবং আল-কায়েদাসহ সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর আশ্রয়স্থল হিসেবে আফগানিস্তান চ‚ড়ান্ত মর্যাদা পায়। জনাব ইউসুফ বলেন, যদি বিশ্ব আবার দেশটি থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়, সেখানে আরো শরণার্থীদের ঢেউ আসবে, আরেকটি নিরাপত্তা শূন্যতা এবং একটি মানবিক সঙ্কট হবে।
আফগানিস্তানের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠভাবে সংযুক্ত প্রতিবেশী হিসাবে পাকিস্তানও এ ফলাফলে সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত হবে। ১৯৮০-এর দশকে সোভিয়েত দখলের চূড়ান্ত পর্যায়ে পাকিস্তানের সীমানার মধ্যে ৫০ লাখ আফগান শরণার্থী ছিল; যাদের অনেকেই রয়ে গেছে। রাজনীতিবিদরা আবারও তা হতে না দিতে বদ্ধপরিকর। ইউসুফ যুক্তি দেন, এ ধরনের দৃশ্য কেবল আফগান জনগণের জন্যই বিপর্যয় সৃষ্টি করবে না এবং পাকিস্তানের ভঙ্গুর রাষ্ট্রের ওপর চাপ সৃষ্টি করবে, কিন্তু অভিবাসন ও সন্ত্রাসের ঢেউ আবার ইউরোপ এবং তার বাইরেও পৌঁছাবে।
তিনি বলেন, তালেবানদের সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ার জন্য অর্থ ও স্বীকৃতির তার ব্যবহারকে বিশ্ব আরো ভালো করবে, এমন আচরণকে উৎসাহিত করার চেষ্টা করবে যা এই ধরনের সঙ্কট থেকে বেরিয়ে আসবে। বেশিরভাগ দেশ বলেছে যে, তারা আফগানিস্তানের নতুন শাসকদের সাথে মিত্রতা করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে তারা কীভাবে তালেবান শাসন করে তা দেখার জন্য অপেক্ষা করবে। ইউসুফ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন যে, খুব দেরি হতে পারে। ‘আমরা বিশ্বকে বলছি: আপনারা স্বার্থপরতার সাথে আফগানিস্তানে জড়িত থাকুন’। সূত্র :
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।