মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পর দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর দ্রুত পতন ঘটে। এ অবস্থায় কয়েকশ কোটি ডলারের মার্কিন অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম তালেবানের কব্জায় আসে। এসব অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জামের মধ্যে ব্ল্যাক হক হেলিকপ্টার থেকে শুরু করে এ-২৯ সুপার টুকানো বিমানও রয়েছে।
আফগানিস্তান দখলের পর তাদের তালেবান যোদ্ধাদের হাতে বহুল ব্যবহৃত একে-৪৭ রাইফেলের পরিবর্তে মার্কিন নির্মিত এম-৪ কারবাইন এবং এম-১৬ রাইফেল দেখা গেছে। এছাড়া, তাদের মার্কিন হামভি ও মাইন প্রতিরোধক অ্যামবুশ প্রটেক্টেড গাড়িতেও দেখা গেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, তালেবানের হাতে মার্কিন অস্ত্র থাকার অর্থ হচ্ছে মনস্তাত্ত্বিকভাবে তারা বিজয়ী।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্র দাবি করেছে, আফগান নিরাপত্তা বাহিনীকে প্রশিক্ষণ ও অস্ত্রসজ্জিত করতে গত ২০ বছরে দেশটি আট হাজার কোটি ডলার খরচ করেছে। কিন্তু তাদের এই প্রশিক্ষণ ও অস্ত্র তালেবানের হামলার ঠেকাতে পারেনি। উল্টো মার্কিন সেনাদের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ পাওয়া আফগান নিরাপত্তা বাহিনীর অনেক সদস্য তালেবানে যোগ দিয়েছে।
মার্কিন গভর্নমেন্ট একাউন্টিবিলিটি অফিসের ২০১৭ সালের তথ্য অনুসারে- আমেরিকা আফগানিস্তানকে ৭৫,৮৯৮টি গাড়ি; ৫,৯৯,৬৯০টি অস্ত্র; ১,৬২,৬৪৩টি যোগাযোগের সরঞ্জাম, ২০৮টি বিমান ও হেলিকপ্টার এবং ১৬,১৯১টি গোয়েন্দা ও নজরদারি সরঞ্জাম দিয়েছে। ২০০৩ সাল থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে এসব অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম দেওয়া হয়।
এছাড়া, ২০১৭ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত আফগানিস্তানকে ৭,০৩৫টি মেশিনগান; ৪,৭০২টি হামভি গাড়ি; ২০,০৪০টি হ্যান্ড গ্রেনেড; ২,৫২০টি বোমা ও ১,৩৯৪টি গ্রেনেড লাঞ্চার দিয়েছে ওয়াশিংটন।
আফগানিস্তানকে দেওয়া বিমান ও হেলিকপ্টারের ৪৬টি এখন উজবেকিস্তানে রয়েছে। তালেবানদের কাবুল দখলের পর এসব এয়ারক্রাফট ব্যবহার করে প্রায় ৫০০ আফগান সেনা উজবেকিস্তানে পালিয়ে যায়। বাকিগুলো তালেবানের হাতে রয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, এক মাস আগে আফগান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া নতুন সাতটি হেলিকপ্টারের ছবি দিয়েছিল সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে। কিন্তু এর কয়েক সপ্তাহ পরে আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেয় তালেবান। ফলে সেইসব হেলিকপ্টারও এখন তালেবানের জিম্মায়। তবে কী পরিমাণ যুদ্ধের সরঞ্জাম তালেবানের হাতে পড়েছে, তার সঠিক হিসাব এখনো পাওয়া যায়নি।
এদিকে তালেবান যোদ্ধাদের হাতে আমেরিকান অস্ত্র পৌঁছে যাওয়াকে আমেরিকা ও তার মিত্রদের জন্য হুমকি হিসেবে দেখছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদের পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটির সদস্য মাইকেল ম্যাককউল।
এক পরিসখ্যানে দেখা যায়, ২০০২ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানের সামরিক বাহিনীকে ২৮০০ কোটি টাকার সমরাস্ত্র দিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বন্দুক, রকেট, নাইট-ভিশন গগলস, গোয়েন্দা নজরদারি চালানোর জন্য ড্রোন। তবে উপহারের তালিকায় সবকিছুর উপরে ছিল ব্ল্যাকহক হেলিকপ্টার। তালেবানের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আফগান সেনাদের এটা বেশ এগিয়ে রাখত।
তবে, ২০১৬ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত আফগানিস্তানে মার্কিন অভিযানের নেতৃত্বদাতা অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল জোসেফ ভোটেল বলছেন, যে সমরাস্ত্রগুলো তালেবানের হাতে গেছে, সেগুলো স্পর্শকাতর প্রযুক্তি সম্বলিত নয়। তিনি বলেন, বেশিরভাগে ক্ষেত্রে বলা যায়, এগুলো এখন ট্রফি হিসেবে সাজিয়ে রাখার মতো। সূত্র : রয়টার্স।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।