পবিত্র লাইলাতুল বরাত
আজ দিবাগত রাত পবিত্র লাইলাতুল বরাত। পরম করুণাময় আল্লাহতায়ালা তার বান্দাদের গুনাহ মাফ, বিপদমুক্তি ও
একটি সুষ্ঠু সুন্দর সমাজব্যবস্থা বিনির্মাণের জন্য সুস্থ মস্তিস্ক একান্ত কাম্য। মাদক মানুষের বিবেক-বুদ্ধিকে নস্যাৎ করে দেয়। ফলে ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্র তথা গোটা মানব সমাজের অকল্যাণ ও অমঙ্গল সাধিত হয়। মাদকের ভয়াবহ বিস্তার দেখে আজ সবাই বিচলিত, আতঙ্কিত ও দিশেহারা। কারণ, যে তরুণ যুবশক্তি দেশের মেরুদন্ড, নেশার ছোবলে আজ সেই মেরুদন্ড ভেঙ্গে পড়ছে। নেশার ছোবলে মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়ছে লক্ষ প্রাণ, ধ্বংস হচ্ছে পরিবার ও সামাজিক শান্তি। রাষ্ট্র অনিশ্চিত ভবিষ্যতের হাতছানি দেখতে পাচ্ছে। এটি অসংখ্য পাপকার্য, অপরাধ ও অসামাজিক কর্মের মূল। ইউরোপীয় ও পাশ্চাত্য সভ্যতা মদ, নারী ও সম্পদের উপর প্রতিষ্ঠিত। ফলে এ সভ্যতা চরমভাবে বিপর্যস্ত হয়েছে। অথচ, ইসলাম চৌদ্দশত বছর পূর্বেই সমাজকে সুসভ্য করার জন্য মাদক নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। ইসলাম মানুষকে দৈহিক, মানসিক, আধ্যাত্মিক, সামাজিক ও নৈতিক অধঃপতন থেকে বিরত থাকার আহবান জানিয়েছে। ইসলাম মানুষের বিবেক-বুদ্ধিকে হেফাযতের জন্য মাদক বিরোধী আইন রচনা করেছে। আর আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের প্রভূত উন্নতি সাধিত হওয়ার কারণে মাদকের মারাত্মক ক্ষতি সর্বজন স্বীকৃত।
মাদকের করাল থাবায় যে একবার পড়েছে তার আর রক্ষা নাই। একটি পরিবার ধ্বংস করতে একজন মাদকসেবী যথেষ্ট। মাদাকাসক্ত ১৫ বছর বয়সী কিশোর ওয়াজির নিজের মা-বাবার সামনেই আত্মহত্যা করেছে। মাদাকাসক্ত এক তরুণের অত্যাচার সইতে না পেরে তাকে ভাড়াটিয়া খুনী দিয়ে খুন করিয়েছে তার গর্ভধাররিণী মা। আমাদের সমাজের জন্য এ এক বিরাট অশনি সংকেত। মাদকের ভয়াল গ্রাস থেকে সমাজের কোনো শ্রেণিই আজ নিরাপদ নয়। মাদক ব্যবসায়ী এবং এর সাথ জড়িত গোষ্ঠির এখনই প্রতিরোধ করা না গেলে একদিন পুরো দেশ এদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়বে। এ সময়ে মাদক নির্মূলের অঙ্গীকার সাধুবাদ পাওয়ার দাবি রাখে। তবে প্রশ্ন উঠে, নির্মূলের ধরন নিয়ে। অন্য সব উপকরণ ছাড়া প্রতিদিন শুধুমাত্র পঞ্চাশ লক্ষ ইয়াবার চাহিদা রয়েছে। পুলিশের সাঁড়াশি অভিযানে ধরা পড়ছে কিঞ্চিৎ মাত্র। পার্শবর্তী প্রতিবেশী দেশ থেকে বানের পানির মতো মাদক আসে। নিত্য নতুন কৌশল নিয়ে হাজার হাজার মানুষ এ পেশায় জড়িয়ে পড়ছে। বলাবাহুল্য, এর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ বহুল আলোচিত চিহ্নিত গডফাদারদের হাতে। তাদের নিয়ে শত শত ধারাবাহিক প্রতিবেদন মিডিয়ায় আসে। আইনের ফাঁক গলে এসব রাঘব বোয়াল বরাবর ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়। খুচরো বিক্রেতা বা পাইকারদের ওপর কঠোর হয়ে আদৌ কি মাদকমুক্ত সমাজ গড়া সম্ভব? টেকনাফসহ সব সীমান্ত পথে আসা মাদক নামমাত্র মূল্যে বহন করার জন্য বিপুল সংখ্যক লোক জড়িয়ে পড়ছে। বেঁচে থাকার তাগিদে রোহিঙ্গাসহ দরিদ্র স্থানীয়রাও এ পেশায় জড়িত। টেকনাফ, উখিয়া, রামু, কক্সবাজার, ধুমধুমসহ সব সীমান্ত পথে রমরমা মাদক বাণিজ্য। স্থানীয় অনেক জনপ্রতিনিধি শত শত কোটি টাকার মালিক। সীমান্ত পেরিয়ে ঢোকার সাথে সাথে প্রশাসনের আনুকূল্য। ঢাকা চট্টগ্রামসহ দেশের সব বড় বড় বস্তিতে প্রতি রাতে কোটি কোটি টাকার ব্যবসা। এ বিপুল পরিমাণ অর্থের হাতছানি উপেক্ষা করা দুঃসাধ্য। নগর ও গ্রামের অলি-গলি সর্বত্র সহজলভ্য। মাদকের সব রুট, সব আখড়া পুলিশ প্রশাসনের জানা। তাদের অগোচরে কোন অবৈধ ব্যবসা চলতে পারে না। এ এমনি ভয়াবহ চক্র যাতে সবাই জড়িয়ে আছে।
বিজ্ঞানী গবেষক ও চিকিৎসকরা মাদকদ্রব্য বা নেশার আসক্তির যে কারণগুলো চিহ্নিত করেছেন, তন্মধ্যে ১. সঙ্গীদের চাপ এবং বন্ধুদের কাজ সমর্থনের চেষ্টা, ২. নেশার প্রতি কৌতূহল, ৩. সহজে আনন্দ লাভের বাসনা, ৪. প্রথম যৌবনের বিদ্রোহী মনোভাব, ৫. মনস্তাত্ত্বিক বিশৃঙ্খলা, ৬. প্রতিকূল পারিবারিক পরিবেশ, ৭. ধর্মীয় অনুভূতির অভাব, ৮. মাদকের সহজলভ্যতা ইত্যাদি বিশেষভাবে উল্লেকযোগ্য।
এইডস, ক্যান্সার ও হৃদরোগের মতো মাদকাসক্তিও ভয়াবহ রোগ। মাদকাসক্তির ফলে শরীর ও মন এমন অবস্থায় পৌঁছে যে মাদক না নিলে প্রত্যাহারজনিত কারণে আসক্তের শরীরে নানারকম উপসর্গ দেখা দেয়। মাদকের আসক্তি মানুষের জীবনে শারীরিক, মানসিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক, পারিবারিক, অধ্যাত্মিক বিভিন্ন ধরণের কুফল দেখা দেয় নিন্মে বিশদভাবে বর্ণনা করা হলো।
সাধারণভাবে তামাক বা সিগারেটের মাধ্যমে মাদকাসক্তের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি পরিলক্ষিত হয়। একজন ধূমপায়ী নিজের ও অধুমপায়ীদের নানা শারীরিক সমসন্যা ও জটিল রোগের কারণ হতে পারে। ধূমপানের মাধ্যমে যে ক্ষতিকর দিকগুলো সমীক্ষায় উঠে এসেছে তা হলো: ১. একটি সিগারেটের ধোয়ায় ১৫ বিলিয়ন পদার্থের অণু থাকে, যা সব মানুষের জন্যেই ক্ষতিকর। ২. একটি সিগারেট সেবনের ফলে একজন ধূমপায়ীর ৫.৫ মিনিট আয়ু কমে যায়। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। ৩. ধূমপায়ীদের মধ্যে পুরুষত্বহীনতা, গর্ভের সন্তান বিকলাঙ্গ বা অন্ধ হতে পারে, স্ট্রোক ও হৃদরোগের মতো জটিল রোগ হতে পারে। ৪. বিশ্বে প্রতি বছর ১০ লাখ মানুষ ধূমপানের কারণে ক্যান্সরে আক্রান্ত হয়। ৫. এছাড়া হাঁড় ও দাঁতের মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতিসহ বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিকল হয়ে যেতে পারে। এছাড়া অন্যান্য মাদক যেমন: হেরোইন, গাঁজা, মদ, আফিম, পেথেডিন প্রভৃতি মাদক গ্রহণে কর্মক্ষমতার অবনতি, ক্ষয় রোগ, স্নায়ুবিক দুর্বলতা, যকৃতের তীব্র প্রদাহ, রক্ত দূষণ, এইডস ও প্রজননতন্ত্রের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ও রোগে ভোগে মাদকাসক্তরা।
মাদকের কালো থাবা এমনভাবে মানুষকে গ্রাস করে যাতে মানসিক উচ্ছৃঙ্খলা, অবসাদন্ন তায় ভোগে আসক্তরা। নেশার ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাকে নেশাগ্রহণ করতে হয়। মাদকদ্রব্য ক্রয় করতে প্রয়োজনীয় অর্থ সংগ্রহের জন্যে অপরাধ জগতে সে নিজেকে সমর্পণ করে। ড্রাগ নেয়ার স্বার্থপরতা, প্রতিশোধ স্পৃহা, রাগ, ভয়, লজ্জা, হিংসা, ঘৃণা, সংকোচ, হতাশা, আত্মদুঃখ, একাকিত্ব ইত্যাদি নেতিবাচক পরিবর্তন তার আচরণের মধ্যে পরিলক্ষিত হয়।
কোনো পরিবারের ছেলে, স্বামী, মেয়ে যে কোনো সদস্য মাদকাসক্ত হলে সমগ্র পরিবার সমাজে হেয়প্রতিপন্ন হয়। সমাজে সবাই এদের অপরাধী মনে করে এবং সে নজরেই দেখে। কারণ নেশার পয়সা জোগাড় করতে এ ব্যক্তিরা নানা অসামাজিক কাজে জড়িয়ে পড়ে। আত্মীয়স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী কারো কাছে মান সম্মান থাকে না। সমাজে এরা অবহেলিত, অযাচিত।
নেশার টাকা যোগানোর জন্য চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই অপকর্ম ছাড়াও ঘরবাড়ি হতে আসবাবপত্র ও তৈজসপত্র বিক্রি করে মাদকাসক্তরা নিজে সর্বশান্ত হচ্ছে, পরিবারকেও পথে বসাচ্ছে। এমনও ঘটনা আছে যে, নেশার টাকা না দিতে পারায় মাদকসক্তরা খুন পর্যন্ত করছে পরিবারের সদস্যকে। কারণ, তখন বাবা-মা, ভাই-বোন সম্পর্কে হিতাহিত জ্ঞান থাকে না।
পরিবারের কোনো সদস্য মাদকাসক্ত হলে সে পরিবারের অশান্তি আর ভোগান্তির সীমা থাকে না। মাদকাসক্তি কেবল নিজেকেই ক্ষতিগ্রস্থ করে না। তার পরিবারের সকল সদস্যদের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। কত ঘর ভেঙ্গে গিয়েছে। বিকশিত হবার আগেই হারিয়ে যায় কত উদীয়মান প্রতিভা। বিধবা হয় কত নারী, কত শিশু এতিম হয়।
মাদকের প্রতিকার করতে হলে নিম্নলিখিত বিষয়াদি কার্যকর করা একান্ত প্রয়োজন। ১. পরিবার থেকেই শুরু করতে হবে মাদক বিরোধী অভিযান। এক্ষেত্রে মা-বাবা কিংবা বড় ভাই-বোন মাদকের কুফল ও ভয়াবহতা সম্পর্কে পারিবারিক আলোচনা ও তা থেকে বিরত থাকতে পরিবারের সদস্যদেরকে উৎসাহিত করবে। ২. পিতা-মাতাকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে তার সন্তান কোথায় যাচ্ছে, কাদের সাথে মিশছে। কারণ, ছেলে মেয়েদের সঠিক তথ্য জানানোর দায়িত্ব স্কুল ও অভিভাবকের উপর। তা না হলে ভুল মাধ্যমে তারা বিষয়টিকে সঠিকভাবে বুঝতে নাও পারে। ৩. সর্বোপরি পরিবারে সদস্যদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থাকতে হবে। ৪. সাংস্কৃতিক দিক হতে তরুণদের আকর্ষণযোগ্য আদর্শিক কার্যক্রম তাদের সামনে তুলে ধরতে হবে, যা তাদের গতানুগতিক ব্যস্ত জীবন থেকে স্বস্তি ও বিনোদন দেবে। ৫. ধূমপানসহ অন্যান্য মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার দমন আইন ও ধারাসমূহ কঠোর হস্তে বাস্তবায়ন করতে হবে। ৬. মানবিক ও নৈতিক মূল্যবোধ গঠনে ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলতে হবে। ৭. বেকার যুবকদের জন্যে কর্মসংস্থান বা আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে। ৮. শিক্ষা কার্যক্রমে মাদক বিরোধী সচেতনতামূলক পাঠ অন্তর্ভুক্তি, প্রচার মাধ্যম, টেলিভিশন, বেতার ও পত্র-পত্রিকায় মাদক ও মাদকাসক্তদের ভয়াবহ অবস্থার কথা প্রচার করতে হবে যাতে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে এ ব্যপারে অনুৎসাহিত মনোভাব গড়ে ওঠে।
পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হচ্ছে, ‘হে ঈমানদারগণ! নিশ্চয়ই মদ, জুয়া, মূর্তি এবং ভাগ্য নির্ধারণের জন্য তীর নিক্ষেপ- এ সবগুলোই নিকৃষ্ট শয়তানি কাজ। কাজেই এসব থেকে সম্পূর্ণভাবে বিরত থাক, যাতে তোমরা মুক্তিলাভ ও কল্যাণ পেতে পার। শয়তান মদ ও জুয়ার দ্বারা তোমাদের মধ্যে পারস্পরিক শত্রুতা-তিক্ততা সৃষ্টি করে থাকে; আর আল্লাহর স্মরণ এবং নামাজ থেকে তোমাদের বিরত রাখাই হলো শয়তানের একান্ত কাম্য; তবুও কি তোমরা তা থেকে বিরত থাকবে না?’ উক্ত আয়াত দ্বারা মদকে সর্ম্পূণরূপে হারাম করা হয়েছে। চূড়ান্ত পর্যায়ে কঠোরভাবে হারাম ঘোষণার পর নিষিদ্ধতার আইনকানুন শক্তভাবে জারি করাও বিজ্ঞতারই পরিচায়ক। এ জন্য রাসূলে করিম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসল্লাম) মদ সম্পর্কে কঠোর শাস্তির ভয় প্রদর্শন করেছেন। হযরত আনাস বিন মালিক রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন, হুযূর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসল্লাম মদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখে এমন দশ শ্রেণির লোকের প্রতি লানত করেছেন। যথা- ১. যে লোক মদের নির্যাস বের করে, ২. যে তা প্রস্তুত করে, ৩. যে তা পান করে, ৩. যে পান করায়, ৪. আমদানিকারক, ৫. যার জন্য আমদানি করা হয়, ৬. বিক্রেতা, ৭. ক্রেতা, ৯. সরবরাহকারী এবং ১০. এর লভ্যাংশ ভোগকারী।
মাদক নিয়ন্ত্রণ করতে হলে কয়েকটি বিষয় বিবেচনায় আনা জরুরি। প্রথমত, সন্ত্রাসের মতো মাদকও একটি আন্তঃরাষ্ট্রীয় সমস্যা, যা কোনো একটি দেশের পক্ষে একা মোকাবিলা বা নির্মূল করা সম্ভব নয়। সংশ্লিষ্ট অন্যান্য দেশকে নিয়ে মাদকের উৎপাদন ও পাচার নির্মূলের চেষ্টা করতে হবে। যেমন ইয়াবা বাংলাদেশ-মিয়ানমার ও থাই-মিয়ানমার সীমান্তে তৈরি হয় এবং সেটি বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডে পাচার হয়। কিন্তু দুই দেশের কেউই তাদের অভিযানে মিয়ানমারকে সম্পৃক্ত করেনি বা করতে পারেনি। তবে বাংলাদেশ কয়েকবার মিয়ানমার সরকারকে ইয়াবা কারখানা বন্ধের আহবান জানিয়েছে। মিয়ানমার সরকার কারখানা বন্ধের আশ্বাস দিলেও এখনো বন্ধ হয়নি। অন্যদিকে, বাংলাদেশ বার বার অনুরোধ করার পরেও ভারত তার সীমান্তে অবস্থিত ফেনসিডিলের কারখানাগুলো বন্ধ করেনি। তাই ফেনসিডিল নিয়ন্ত্রণ করাও সম্ভব হয়নি।
দ্বিতীয়ত, কোনো দেশের বৃহৎ জনগোষ্ঠী যদি মাদকাসক্ত হয়, তাহলে সেখানে মাদকের চাহিদা থাকবে। যেভাবেই হোক, মাদকসেবীরা মাদক পেতে চাইবে আর পাচারকারীরাও মাদক সরবরাহ করার চেষ্টা করবে। কিন্তু উৎপাদন ও চাহিদা বন্ধে কার্যকর কোনো উদ্যোগ বাংলাদেশ নিতে পারেনি। তাছাড়া মাদকাসক্তদের নিরাময় ও পুনর্বাসনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থাও নেই, যেটি মাদক নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে অন্যতম অন্তরায় বলে সমাজবিদ ও মনস্তত্ববিদরা মনে করেন।
তৃতীয়ত, মাদকাসক্তির কারণ খুজে বের করা জরুরি। মানুষ কেন মাদকাসক্ত হচ্ছে, এর সামাজিক, অর্থনৈতিক ও মনস্তাত্ত্বিক কারণগুলো কী কী এবং কী ধরনের পদক্ষেপ নিলে তাদের ফেরানো সম্ভব, তা গবেষণা করে বের করা দরকার। প্রয়োজন একটি মাদকবিরোধী সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা এবং সবাইকে সেই আন্দোলনে সম্পৃক্ত করা।
লেখক: আরবী প্রভাষক, প্রাবন্ধিক ও গবেষক।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।