Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মাদক নিরাময় কেন্দ্রে অনিয়ম

দেশে যত্রতত্র গড়ে উঠেছে সাইনবোর্ড সর্বস্ব অসংখ্য কেন্দ্র অভিযোগের পাহাড়ে রাজধানীর ২২টি মাদক নিরাময় কেন্দ্র সিলগালা

হাসান-উজ-জামান | প্রকাশের সময় : ৩০ অক্টোবর, ২০২২, ১২:০০ এএম

রোগীদের শারীরিক নির্যাতন, প্রয়োজনের অতিরিক্ত সময় ভর্তি রেখে অর্থ আদায়, অনৈতিক কাজে বাধ্য করা, ব্যক্তি স্বার্থে সুস্থ ব্যক্তিকে মাদকাসক্ত বলে অপহরনের পর মুক্তিপণ আদায়সহ মাদক ব্যবসার অভিযোগ রয়েছে বিভিন্ন মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রের বিরুদ্ধে। চিকিৎসার নামে অপচিকিৎসা ও নির্যাতনে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। আবার কোনো কোনো নিরাময় কেন্দ্রে চিকিৎসার নামে রোগীকে আটকে রেখে এমনভাবে নির্যাতন করা হয় যে, মুক্তির পর রোগীকে সেই নির্যাতনের ক্ষত বহুদিন বয়ে বেড়াতে হয়। এছাড়াও মাদক নিরাময় ও পুনর্বাসন কেন্দ্রের আড়ালে সরকারি অনুদান আত্মসাৎ, কেন্দ্রের নামে জুয়ার বোর্ড বসানোসহ অসামাজিক কর্মকাণ্ডের প্রমাণ মিলেছে অনেক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। অভিযোগ রয়েছে, মাদকদ্রব্য অধিদফতরের এক শ্রেণির কর্মকর্তাদের ‘ম্যানেজ করেই’ বছরের পর বছর এ ধরনের ঘটনা ঘটে চলছে।

কয়েক মাসের ব্যবধানে মাদক নিরাময় কেন্দ্রে নির্যাতনে যুবকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার, পুলিশ কর্মকর্তার মৃত্যু এবং একজন অভিনেতাকে শারীরিক নির্যাতনের বিষয়টি প্রকাশ্যে এলে দেশব্যাপী সমালোচিত হয়। একটি প্রতিষ্ঠানের নারী কর্ণধারের বিরুদ্ধে সেখানে চিকিৎসা নিতে আসা সুদর্শন যুবকদের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কে জড়াতে বাধ্য করারও বিষয়টি ভাবিয়ে তুলছে চিকিৎসা নিতে হবে এমন যে কোনো মাদকাসক্ত পরিবারের সদস্যদের। অভিযোগ রয়েছে, প্রভাবশালী ও স্থানীয় মাস্তানদের সহযোগিতায় চিকিৎসার নামে চলছে মাদকাসক্ত নিরাময় ও পুনর্বাসন কেন্দ্রগুলো। নিরাময় কেন্দ্রেগুলোতে শুধু মাদকাসক্ত রোগী ভর্তির নির্দেশ থাকলেও টাকার লোভে মাদকাসক্তদের সাথে মানসিক রোগীও ভর্তি করা হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, দেশে মাদকাসক্ত রোগী আছে প্রায় ৭০ লাখ। অথচ সরকারিভাবে মাদকাসক্তি নিরাময় ও পুনর্বাসন কেন্দ্র রয়েছে মাত্র ৫টি। এছাড়া গত মে মাস পর্যন্ত বেসরকারি পর্যায়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর থেকে লাইসেন্সপ্রাপ্ত মাদকাসক্তি চিকিৎসা ও পুনর্বাসন কেন্দ্র রয়েছে ৩৬২টি। বেড সংখ্যা মাত্র ৪ হাজার ৭৫৬টি। মাদকাসক্তের তুলনায় নিরাময় কেন্দ্রের আসনের সংখ্যা একেবারেই নগণ্য। আর এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে স্বেচ্ছাচারিতায় জড়িয়েছে মাদক নিরাময় কেন্দ্রের দুষ্ট চক্র।

প্রতিটি মাদক নিরাময় কেন্দ্রে সার্বক্ষণিক চিকিৎসক, মনোবিদ, নার্স, ওয়ার্ড বয় ও সুইপার থাকা বাধ্যতামূলক। থাকতে হবে রোগীদের সরবরাহ করা খাবারের তালিকা, মানসিক বিনোদনের প্রয়োজনীয় উপকরণ, পর্যাপ্ত আলো-বাতাসের সুবিধা, প্রয়োজনীয় শৌচাগার, অত্যাবশ্যকীয় ওষুধ, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, প্যাথলজিক্যাল ল্যাবরেটরি এবং রোগীদের কাউন্সেলিংয়ের জন্য ক্লাসরুম। অথচ বাস্তব চিত্র হচ্ছে একেবারেই উল্টো।

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, একদিকে ঘটছে মাদকের ভয়াবহ বিস্তার। তেমনি বাড়ছে মাদকাসক্তের সংখ্যা। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে বেসরকারি পর্যায়ে দেশের যত্রতত্র গড়ে উঠেছে মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্র। কোথাও অনুমোদন নিয়ে আবার কোথাও মাদকাসক্তি নিরাময় ও পুনর্বাসন কেন্দ্রের নামে শুধু আবেদন করেই চিকিৎসার জন্য রোগী ভর্তি করে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে অনেক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে।
আশ্চর্য্যজনক হলেও সত্য, বেসরকারি পর্যায়ে গড়ে ওঠা এসব মাদক নিরাময় কেন্দ্রের কয়েকটিতে কারো ব্যক্তি স্বার্থ রক্ষার্থে মাদকসেবী না হয়েও কাউকে অপহরণের পর টর্চার সেলে নির্যাতন ও আটকে রেখে মুক্তিপণের আদলে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। প্রমান সাপেক্ষে এ সব অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করেছেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের কর্মকর্তারা।

নিরাময় কেন্দ্রগুলোর এসব অনিয়ম প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদফতরের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন-২) কাসফিয়া আলম ইনকিলাব বলেন, বিধিমালা অনুযায়ী সব কিছু হচ্ছে। নিরাময় কেন্দ্রের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে নিয়ম মেনে ব্যবস্থা নেয়া হয়।

সূত্র মতে, ঢাকা মেট্রো উপঅঞ্চলের উত্তর ও দক্ষিণে গড়ে ওঠা মাদক নিরাময় কেন্দ্রে রোগীদের নির্যাতন, নিরাময় কেন্দ্রের আড়ালে মাদক ব্যবসা, কোনো চিকিৎসক না থাকা, কোথাও কোথাও আসনের বিপরীতে দ্বিগুণ রোগীর অবস্থানসহ বিভিন্ন্ন অনিয়মের কারনে কয়েক মাসের ব্যবধানে ২২টি মাদক নিরাময় কেন্দ্র সীলগালা করা হয়েছে। এর মধ্যে ডিএনসি’র ঢাকা উত্তরের ১৮টি এবং দক্ষিণের ৪টি নিরাময় কেন্দ্র সীলগালা করা হয়। গত সপ্তাহে সীলগালা করা হয় মালিবাগের হলি মাইন্ড মাদক নিরাময় কেন্দ্রটি। বর্তমানে ঢাকা দক্ষিণে ২৭টি এবং ঢাকা উত্তরে ৬৩টি নিরাময় কেন্দ্র চালু রয়েছে।

সূত্র বলছে, দেশে যতগুলো মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র গড়ে উঠেছে এগুলোর মধ্যে কয়েকটির সরকারি নিবন্ধন থাকলেও বেশির ভাগের অনুমোদন নেই। অনেক নিরাময় কেন্দ্র গড়ে তুলেছেন মাদকাসক্ত ব্যক্তিরাই। ফলে চিকিৎসা নিতে আসা মাদকাসক্ত ব্যক্তির স্বজনদের বিপুল অঙ্কের টাকা ব্যয় হওয়ার পরও কোনো লাভ হচ্ছে না।
গাজীপুরের ভাওয়াল মাদকাসক্তি পুনর্বাসন কেন্দ্র থেকে গত ৪ জানুয়ারি র‌্যাবের অভিযানের মাধ্যমে চলচ্চিত্র অভিনেতা অনিক রহমান অভিকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় দেশব্যাপী তোলপাড় হয়। অভিসহ ওই কেন্দ্রে অবস্থানরত সেবা প্রত্যাশিরা নিয়মিত শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন। চলচ্চিত্র অভিনেতা অভিকে ওই কেন্দ্র থেকে উদ্ধার করতে গিয়ে ভয়ঙ্কর ঘটনা উদঘাটিত হয়। একই সময় সেখানে আটকে রাখা ২৮ জনকে উদ্ধার করে র‌্যাব। এ ঘটনায় ওই পুনর্বাসন কেন্দ্রের মালিক ফিরোজা নাজনীন বাধনসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়। সেখান থেকে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়। কেন্দ্রটি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর সিলগালা করে দিয়েছে। উদ্ধার হওয়া একাধিক যুবক জানান, সেখানে চিকিৎসার নামে বিত্তশালী পরিবারের সন্তানদের মাদক সেবনের সুযোগ দেওয়া হতো। নিরাময় কেন্দ্রের মালিক ফিরোজা নাজনীন বাধন চিকিৎসাধীন পছন্দের যুবকদের দিয়ে নিজের অনৈতিক চাহিদা মেটাতে বাধ্য করাতেন। কেউ রাজী না হলে তাকে নিয়ে যাওয়া হতো টর্চার সেলে। ওই কেন্দ্রের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও ছিলেন মাদকাসক্ত।

চলতি বছরের মার্চে ময়মনসিংহ নগরীর সানকিপাড়া এলাকার প্রাপ্তি মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্র থেকে অমিত দেবনাথ নামে এক যুবকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এর আগে ২০২০ সালের ৯ নভেম্বর রাজধানীর আদাবরের মাইন্ডএইড হাসপাতালের স্টাফদের নির্যাতনে মারা যান পুলিশ কর্মকর্তা আনিসুল করিম।
মালিবাগে হলি লাইফ মাদক নিরাময় কেন্দ্রে একই বছরের ২ মার্চ ইয়াসিন নামে এক যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু হয়। আর মাঝে মধ্যেই নিরাময় কেন্দ্রে নির্যাতনে মৃত্যুর ঘটনা ঘটছেই।

গত বছরে রংপুরের একটি বিশেষায়িত মাদকাসক্তি নিরাময় ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে গভীর রাতে রোগীর গলা ফাটানো কান্নায় ঘুম ভাঙে স্থানীয়দের। পরে পুলিশ অভিযান চালালে বেরিয়ে আসে এটি মাদকাসক্তদের চিকিৎসার নামে ছিল একটি টর্চার সেল। নির্যাতন করাই ছিলো কেন্দ্রের প্রধান চিকিৎসা।
অভিযোগ রয়েছে টাকা দিলে সবই করানো সম্ভব মাদক নিরাময় কেন্দ্রে। কেন্দ্রগুলোতে নিরাপদে মাদক বিক্রি ও সেবন ছাড়াও নারীদের দিয়ে অসামাজিক কর্মকাণ্ড চালানো হচ্ছে। জীবনে মাদকের ধারে কাছেও যায়নি এমন ব্যক্তিদের মিথ্যা মাদকাসক্তের অভিযোগে কমান্ডো স্টাইলে হাতে হ্যান্ডকাপ পরিয়ে ধরে নিয়ে বন্দি করা হচ্ছে।
সম্প্রতি রাজধানীর উত্তরায় দুই স্ত্রীর বিরোধে এক জনের পক্ষে তাদের সুস্থ স্বামী ফিরোজ আহমেদকে রাজধানীর উত্তরায় রেইনবো মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রে মাদকাসক্ত আখ্যা দিয়ে ২২ দিন আটকে রেখে নির্যাতনের গুরুতর অভিযোগও উঠেছে।

ভুক্তভোগীর পরিবারের অভিযোগ, ফিরোজের প্রথম স্ত্রী আকলিমা ও তার স্বজনরা বোরহান দেওয়ান নামে এক ব্যক্তির যোগসাজশে গত ১৩ সেপ্টেম্বর তাকে রেইনবো মাদকাসক্ত পুনর্বাসন কেন্দ্রে ভর্তি করেন। এর আগে ১২ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় ঢাকার সাভারে দ্বিতীয় স্ত্রীর বাসা থেকে বের হলে তিনি নিখোঁজ হন। স্বামীর খোঁজ না পেয়ে ১৯ দিন পর ফিরোজের দ্বিতীয় স্ত্রী নাজমা সাভার থানায় জিডি করেন।

ফিরোজের মা জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, তার ছেলে কখনো মাদক সেবন করেননি। তাকে নির্মম নির্যাতন করা হয়েছে। তার ছেলের প্রথম স্ত্রী আকলিমার সন্তান না হওয়ায় গত ১০ বছর আগে ফিরোজ দ্বিতীয় বিয়ে করেন। এ নিয়ে প্রথম স্ত্রীর পরিবার আগেও ফিরোজকে আটক করে সাড়ে আট লাখ টাকা আদায় করেছে। গত ১ সেপ্টেম্বর ফিরোজের দ্বিতীয় স্ত্রী জানতে পারেন যে, উত্তরায় মাদকাসক্তি নিরাময়কেন্দ্রে তার স্বামীকে আটকে রাখা হয়েছে। বিষয়টি তার পরিবার র‌্যাবকে জানায়। র‌্যাব যোগাযোগ করলে নিরাময়কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ জানায়, ফিরোজকে বোরহান নামে এক ব্যক্তি নিয়ে গেছেন।

প্রথম স্ত্রীর পরিবার আশুলিয়ায় প্রভাবশালী। তারাই ফিরোজকে মাদকাসক্ত সাজিয়ে রেইনবো মাদকাসক্ত নিরাময়কেন্দ্র উত্তরার ৩ নম্বর সেক্টরের ৪ নম্বর সড়কে ভর্তি করেন। এই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ এবারই প্রথম নয়, এর আগে ২০১৯ সালে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে এক ব্যক্তিকে আটকে রাখার অভিযোগ রয়েছে। আর প্রভাবশালী বোরহান দেওয়ান রেইনবো মাদকাসক্ত পুনর্বাসন কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন বলে জানিয়েছেন রেইনবোর পরিচালক এফ এম কাউসার।

রাজধানীতে সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, আমরা মাদকের ভয়াল থাবা থেকে যুব সমাজকে রক্ষা করতে চাই। আমাদের এই প্রজন্ম যদি পথ হারিয়ে ফেলে তাহলে দেশের স্বপ্ন শেষ হয়ে যাবে। মাদক নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে আমরা বাঁচাতে পারবো না। দেশে ৬০ থেকে ৭০ লাখ মানুষ মাদকাসক্ত আর তাদের জন্য ভালো হাসপাতাল নেই। আমাদের মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রগুলোতে অভিজ্ঞ ডাক্তার নেই, সাইকিয়াট্রিস্ট নেই। তেজগাঁও সরকারি মাদক নিরাময় কেন্দ্রে উচ্চ ও মধ্যবিত্তের কেউ যায় না। বেসরকারি খাতে মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র চালুর জন্য আমরা সরকারিভাবে সহায়তা দেবো।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সহকারি পরিচালক (ঢাকা উত্তর) মেহেদী হাসান বলেন, রেইনবো মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর থেকে লাইসেন্স নেওয়া একটি প্রতিষ্ঠান। যদি কোনো অনিয়ম করে থাকে, তাহলে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে সংশ্লিস্ট সূত্র মতে, কোনো নিরাময় কেন্দ্রে আসার পর একজন মাদকাসক্তকে ২৮ দিনের বেশি রাখার নিয়ম নেই। অথচ কেন্দ্রের মালিকরা বছরের পর বছর ধরে চিকিৎসার নামে অর্থ হাতিয়ে নেয়। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসার ক্ষেত্রে সরকারিভাবে কোনো ফি নির্ধারিত নেই। ফলে চিকিৎসা বাবদ রোগীদের কাছ থেকে ইচ্ছে মতো মোটা অঙ্কের অর্থ আদায় করা হয়। এতে অসহায় পরিবারগুলোও চিকিৎসার জন্য কেন্দ্রগুলোর চাহিদা অনুপাতে টাকা পরিশোধ করতে বাধ্য হয়।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের লাইসেন্সপ্রাপ্ত বেসরকারি নিরাময় কেন্দ্রগুলো সরকারি আর্থিক সহায়তা পেয়ে থাকে। তবে সরকারি অনুদান পেতে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারি শর্ত মেনে চলছে কি না তা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার রিপোর্টের ওপর নির্ভর করে। এ ক্ষেত্রে অধিদফতরের কর্মকর্তারা তাদের পছন্দের ব্যক্তিদের এ সুবিধা পাইয়ে দিতে অনৈতিকতার আশ্রয় নেন।

নিরাময় কেন্দ্র পরিদর্শনের সঙ্গে যুক্ত একাধিক কর্মকর্তা বলেছেন, মাদকাসক্তির জন্য চিকিৎসাধীন রোগীর ৯০ শতাংশই ইয়াবা আসক্ত। অন্যরা হেরোইন, ফেনসিডিলসহ অন্য মাদক গ্রহণ করেন। মাদক গ্রহণ না করলেও মানসিক রোগে আক্রান্ত হওয়ায় পরিবার নিরাময় কেন্দ্রে ভর্তি করে। আর নিরাময় কেন্দ্রগুলোকে অনেকেই মানসিক হাসপাতাল বলে মনে করেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মাদক নিরাময় কেন্দ্রে অনিয়ম
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ