পবিত্র লাইলাতুল বরাত
আজ দিবাগত রাত পবিত্র লাইলাতুল বরাত। পরম করুণাময় আল্লাহতায়ালা তার বান্দাদের গুনাহ মাফ, বিপদমুক্তি ও
চীনের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিসি), ১৯২১ সালের পহেলা জুলাই’য়ে স্বল্প সংখ্যক সদস্য নিয়ে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করে, বর্তমানে এটি বিশ্বের বৃহত্তম রাজনৈতিক সংগঠনগুলির অন্যতম। গণচীনের সার্বিক উন্নয়নে দলটির ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চীনের ভূখন্ডে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বহু পূর্বে শুরু হলেও সাম্প্রতিক সময়ে সব ক্ষেত্রেই এই উন্নয়ন ও আধুনিকতার ছোঁয়া এতটায় বেশি দৃশ্যমান যেটা পুরো বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দেয়। এর বেশিরভাগটাই সম্ভবপর হয়েছে একজন উচ্চশিক্ষিত ও উপযুক্ত, বিশ্বনেতার আসনে অধিষ্ঠিত, বলিষ্ঠ নেতৃত্ব, সিপিসি’র প্রধান দলনেতা, সর্বজন স্বীকৃত গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং দেশ পরিচালনা করার সুনিপুণ দক্ষতার কারণে।
‘জ্ঞান অর্জনের জন্য প্রয়োজনে সুদূর চীন দেশে যাও’ ছোট থেকে মহানবী সা.-এর এই উক্তিটি শুনে আসছি। কিন্তু তার বাস্তবতা পুরোপুরি অনুধাবন করেছি বা প্রতিনিয়ত করছি, চীনে আসার পরে। প্রযুক্তির ছোঁয়া চীনাদের সব ক্ষেত্রে বিদ্যমান। সিপিসি’র শততম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে চীনা প্রযুক্তি ও উন্নয়ন এবং এই উন্নয়নের পিছনে সিপিসির ভূমিকা, বিশেষ করে আমার দেখা ফুজিয়ান প্রদেশের ফুজো শহরের অতি সাম্প্রতিক কিছু নজরকাড়া উন্নয়নের বিষয় সংক্ষেপে তুলে ধরছি।
অবকাঠামোগত উন্নয়ন: ফুজিয়ান প্রদেশের ‘ফুজো’ শহরের ‘মিনহউ’ কাউন্টির একেবারে শেষ প্রান্তেই আমাদের বসবাস। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে প্রথম যখন মিনহউতে এসেছিলাম তখনকার পরিবেশ এবং তার দুই বছরের পরের পরিবেশের ভিতর আকাশ পাতাল পার্থক্য দেখা যায়। এই পার্থক্য তৈরির প্রধান কারণ চীনের উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডের ত্বরিৎ গতি। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ক্যাম্পাসেই মূলত আমার কলেজ। শাখা ক্যাম্পাসটি মিনহউ কাউন্টিতে অবস্থিত। প্রথম যেদিন এই ক্যাম্পাসে এসেছিলাম সেদিন এখানকার রাস্তাঘাট, আশপাশের পরিবেশ দেখে একটু অবাকই হয়েছিলাম। কেননা, চীনের অন্যান্য জায়গার উন্নয়নের তুলনায় আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য নির্মাণকৃত ক্যাম্পাসটির আশপাশ ছিল বেশ অনুন্নত। রাস্তা প্রশস্ত থাকলেও অন্যান্য সব রাস্তার মতো আলাদাভাবে পায়ে হাঁটার লেন, সাইকেল বা ই-বাইকের লেনে বিভক্ত ছিল না। তাই হঠাৎ করে উন্নত চীনের ভিতর এমন পরিবেশ দেখে মনে মনে একটু অখুশি হয়েছিলাম। প্রধান ক্যাম্পাস থেকে শাখা ক্যাম্পাসে আসার জন্য ব্যবহৃত রাস্তাটিরও বেশ বেহাল অবস্থা ছিল। মাঝেমধ্যে খেয়াল করতাম এসব রাস্তা মেরামত কাজ চলত কিন্তু মেট্রোরেল প্রকল্পের কাজ চলমান থাকায় মেরামতে বেশ ধীর গতি লক্ষ করতাম। পথিমধ্যে প্রায় তিন কিলোমিটার দীর্ঘ একটা ব্রিজ ছিল। সেটাও অন্যান্য ব্রিজের থেকে বেশ পুরাতন ছিল। বছর ঘুরতেই না ঘুরতে সবকিছুতে এতটা আমূল পরিবর্তন হয়েছে যেটা অবিশ্বাস্য। অর্থাৎ এক বছর আগে আমাদের চারপাশ এবং বর্তমানে আমাদের চারপাশ নতুন কোনো আগন্তুক দেখে পুরোপুরি অবাক হবে সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না।
মেট্রোরেলের কাজ অতিদ্রুত শেষ হওয়ার সাথে সাথে সকল রাস্তা নতুন করা হয়েছে। পুরানো ব্রিজের পরিবর্তে বানানো হয়েছে আট লেনের অত্যাধুনিক ব্রিজ। ব্রিজের উভয় পাশের সংযোগ সড়কগুলো করা হয়েছে উড়াল সেতুর আঙ্গিকে। পথচারীর যাতায়াত ঠিক রেখে আশপাশে বসবাসকৃত জনসাধারণের বাড়তি কোন বিড়ম্বনা বা ভোগান্তি ছাড়াই অতি অল্প সময়ে এমন পরিবর্তন শুধুমাত্র চীনাদের প্রযুক্তি দ্বারাই সম্ভব বলে আমার কাছে মনে হয়েছে। প্রতিটি রাস্তা অতি মাত্রায় প্রশস্ত করে তার পাশ দিয়ে করা হয়েছে কৃত্রিম বনায়ন। রাতারাতি বিশালাকৃতি বিল্ডিং বাড়ি চোখের নিমিষে ভেঙে সেখানে তৈরি করা হয়েছে নান্দনিক বনায়নের সাথে মানুষের বিনোদনের স্থান। ওইসব বিল্ডিংগুলোতে বসবাসকৃতদের আগেই অত্যাধুনিক ফ্ল্যাট বাড়িতে পুনর্বাসন করা হয়েছে। সদ্য নির্মাণকৃত রাস্তার পাশে অল্প দূরত্ব পর পর ওইসব বিনোদন কেন্দ্রের আঙ্গিকে তৈরি স্থানগুলো শিশুদের খেলা এবং সকাল সন্ধ্যায় অন্যান্যদের হাঁটার কাজে হর হামেশায় ব্যবহৃত হয়।
চীনের ফুজিয়ান প্রদেশের অধিকাংশ স্থান সুউচ্চ পাহাড়ে ঘেরা। আর সেই সুউচ্চ পাহাড়ের নিচ দিয়ে তৈরি মাইলের পর মাইল দীর্ঘ টানেলের হাইওয়ে, ট্রেন লাইন সবাইকে বেশ ভাবিয়ে তোলে। নদীর তলদেশের টানেল দিয়ে আবাধে মেট্রোরেলের যাতায়াত যেন এক স্বপ্ন পুরির মতো অনুভূতি এনে দেয়। একদিন পথে যেতে যেতে দেখলাম, পাহাড়ের তলদেশে ডিনামাইটের বিস্ফোরণ। এক মাসের ভিতর সেই সুউচ্চ পাড়ার কেটে সেখান দিয়ে সমতল আটলেনের রাস্তা বানানোর কাজ শেষ। প্রযুক্তিতে কত বেশি উন্নত হলে আশপাশের স্থাপনা ঠিক রেখে কংক্রিটের পাথর কেটে বা মাটির নিচ দিয়ে অত্যাধুনিক এসব যোগাযোগ ব্যবস্থা বানানো সম্ভব সেটা ভাববার বিষয়। আমাদের দেশের সাথে চীনের উন্নয়নের চিত্র মেলাতে গেলে অনেকটা বোকামি হবে। তারপরেও দেখেছি দেশের কোন রাস্তায় কোন মেরামতের কাজ চলে তখন পথচারীসহ আশপাশের জনগণের ভোগান্তির সীমা থাকে না। কিন্তু চীনাদের সবকিছু প্রযুক্তিনির্ভর হওয়ায় সেধরনের অসুবিধার সম্মুখীন হতে এখানকার কাউকে কখনো দেখিনি। আমাদের দেশে যখন নদীর উপর একটা ব্রিজ বানাতে বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে হয়, সেখানে চীনে সব নদীর উপরে প্রায় তিন মাইল পরে পরে আছে অতি আধুনিক মানের ব্রিজ। যেগুলোর দুই প্রান্তের সংযোগ সড়কগুলোকে যুক্ত করেছে সর্পিলাকারের আঁকাবাঁকা এক অতি সুন্দর ধাঁচে। যেখান দিয়ে চলাচলে সকলকে এক অসাধারণ অনুভূতি এনে দেয়। চীনাদের অবকাঠামোগত উন্নয়নের সবগুলোই কাজ দেখেছি পুরোপুরি প্রযুক্তিনির্ভর এবং পরিবেশবান্ধব। আমাদের আশপাশে এক বছরেরও কম সময়ে সদ্য নির্মাণকৃত সুউচ্চ ফ্ল্যাটবাড়িগুলো তারই ইঙ্গিত বহন করে।
সবুজ বনায়নের অপরূপ শহর: পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় বনায়নের ভূমিকা অপরিসীম। সেই ক্ষেত্রেও আছে ফুজিয়ান প্রদেশের বিশেষ সুনাম। প্রাকৃতিক বনায়নের পাশাপাশি কৃত্রিম বনায়ন ফুজিয়ান প্রদেশের, বিশেষ করে ফুজো শহরের চিত্রে অনেকটা বৈচিত্র্য এনে দিয়েছে। তাইতো ‘সুপার এয়ার কোয়ালিটি’ সমৃদ্ধ ফুজিয়ান প্রদেশের ফুজো শহরের মতো এমন সবুজ অরণ্য, এমন গ্রিন সিটিতে বসবাস সত্যিই অকল্পনীয় ব্যাপার। আমরা যখন দূরে কোথাও ভ্রমণে যাই তখন সমস্ত পথ জুড়ে ফুজিয়ান প্রদেশের প্রাকৃতিক দৃশ্য বিশেষ করে কৃত্রিম বনায়নের সবুজ অরণ্য, প্রাকৃতিক বনায়নের মাঠের পর মাঠ বিশালাকৃতি সবুজের সমারোহ এবং সবুজে বেষ্টিত আকাশসম সুউচ্চ পর্বত মালা আমাদেরকে বিমোহিত করে।
চীনাদের কৃত্রিম বনায়নের ক্ষেত্রে দেখা যায় আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে বিশালাকৃতি গাছ মুহূর্তের মধ্যে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে উঠিয়ে নিয়ে নতুনভাবে রোপণ করা হয়। উপযুক্ত পরিবেশে পরিচর্যায় সেসব গাছে যখন অল্প কিছু দিনের ভিতর নতুন করে প্রাণ ফিরে পায়, তখন কারও বোঝার সাধ্য নেই যে, ১৫ দিন আগে গাছটির আদি অবস্থান সেখানে ছিল না। সবকিছু প্রযুক্তিনির্ভর হওয়ায় মুহূর্তের মধ্যে যেকোন স্থানে কৃত্রিম বনায়ন সৃষ্টি মাঝেমধ্যে আমাদের নিজেদের চোখকে বিশ্বাস করাতে কষ্ট হয়। এছাড়াও শহরের সব রাস্তার দুইপাশ, হাইওয়ের দুই পাশ দিয়ে লাগানো বিভিন্ন ঋতুতে হরেক ফুলের সমারোহ সত্যিই মনোমুগ্ধকর। মাঝমধ্যে মনে হয় রাস্তা নয়, হয়তো আমরা ফুলের বাগানের ভিতর দিয়ে যাচ্ছি। ফুজিয়ান প্রদেশ ছাড়াও চীনের বেশ কিছু প্রদেশের কিছু শহর আমার ঘোরার সৌভাগ্য হয়েছে। সবখানেই বনায়নের এই বিষয়টা আমার বেশ চোখে পড়েছে। শহরের ভিতরের সব জায়গার রাস্তা, হাইওয়েগুলো এই বনায়নের আওতায় পড়ে।
পরিবহন অবকাঠামো: আয়তনে চীন বিশ্বের বৃহত্তর দেশগুলোর প্রথম সারির দিকে অবস্থিত হওয়ায় চীনের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে পাড়ি জমাতে জনগণকে অতিক্রম করতে হয় হাজার হাজার মাইল দূরত্ব। কিন্তু যোগাযোগ ব্যবস্থার আধুনিকতার ছোঁয়ায় সেই দূরত্ব যেন কোন রকম বাড়তি বিড়ম্বনা ছাড়াই চোখের নিমিষেই অতিক্রম করে চীনারা। আকাশ পথ, স্থল পথ এবং মাটির নিচ দিয়ে তৈরি নিরবিচ্ছিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থা চীনাদের জীবনে এনে দিয়েছে অবিশ্বাস্য গতি। হাই স্পিড ট্রেন দিয়ে মানুষ যেখানে ঘণ্টায় পাড়ি দিচ্ছে ২০০ থেকে ৩০০ কি.মি. সেখানে হাজার হাজার মাইল পাড়ি দেওয়া সত্যিই খুবই সহজ ব্যাপার। গণপরিবহনের কথা বলতে গেলে প্রথমেই চীনাদের বাস সার্ভিসের কথা বলতে হয়। কোন রকম ঝক্কি-ঝামেলা ছাড়াই অত্যাধুনিক এই বাস সার্ভিস এককথায় অসাধারণ। যেটা শহরের অলিগলি থেকে শুরু করে প্রতিটি আনাচে কানাছে বিরতিহীনভাবে সেবা দিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া দ্রুত গতিতে গন্তব্যে পৌঁছাতে মেট্রো রেলের জুড়ি মেলা ভার। যার মাধ্যমে জনগণ নিশ্চিন্তে নির্দিষ্ট সময়ের ভিতর নির্বিঘ্নে নিজেদের গন্তব্যে যাতায়াত করে। চীনের মেট্রোরেল সেবা এতটাই উন্নত যেটা স্বচক্ষে দেখা ছাড়া বিশ্বাস করার নয়। মিলিয়ন মিলিয়ন মানুষ তাদের কর্মক্ষেত্রে যাওয়ার জন্য দ্রুত, সাশ্রয়ী, নিরাপদ, নির্ভরযোগ্য এই পরিবহনটি সবার আগে বেছে নেয়। বড় বড় শহরগুলোতে মেট্রোরেলের অনেক বেশি লাইন আছে। প্রতিটি লাইনে প্রতি পাঁচ মিনিট পর পর মেট্রোরেলগুলো রাউন্ড দিয়ে যাত্রীদের গন্তব্যে ছুটে নিয়ে চলে। এসব মেট্রোরেলের লাইন পরিবর্তনের উদ্দেশ্যে ধাপে ধাপে চলন্ত সিঁড়ি বেয়ে শত শত মিটার মাটির নিচে প্রবেশের অনুভূতি সত্যিই চীনাদের প্রযুক্তির তারিফ করতে হয়।
চীনে আসার পরে বেশ কিছু বিমানবন্দর আমার দেখার সুযোগ হয়েছে। আমার দেখা কিছু প্রদেশসহ কিছু বড় বড় শহরে বিমানবন্দরগুলো এতটাই আধুনিক, দৃষ্টিনন্দন এবং এতটা ব্যস্ত, যেটা বিশ্বের যেকোন প্রধান বিমান বন্দরের সাথে তুলনাযোগ্য। বেশিরভাগ বিমানবন্দরেই একের অধিক টার্মিনাল আছে। সব বিমানবন্দরে যাত্রীদের সুযোগসুবিধার কোনরকম কমতি নেই। মাঝেমধ্যে দেখা যায়, চীনাদের এক প্রদেশ থেকে অন্য প্রদেশে ভ্রমণের ক্ষেত্রে বিমান ভাড়া অন্যান্য পরিবহনের চেয়ে সাশ্রয়ী হওয়ায় অনেকেই বিমানকে তাদের ভ্রমণের মাধ্যম হিসেবে অহরহ বেছে নেয়। যোগাযোগ ব্যবস্থায় চীন এতটাই উন্নত যে, সর্বাধিক জনসংখ্যার দেশ হয়েও চীনা জনগণ পরিবহন সংকটে পড়ে তাদের নির্ধারিত গন্তব্যে যথাসময়ে পাড়ি দিতে পারেনি এমনটি কারো থেকে কোনদিন শোনা যায় না। নির্দিষ্ট সময়ে, সাশ্রয়ী খরচে, বিনা ঝুঁকিতে যত্রতত্র ভ্রমণ চীনাদের নিত্যদিনের সঙ্গী।
সার্বিক উন্নয়নে সিপিসির ভূমিকা: ‘প্রশাসনের জন্য জনগণ এবং জনগণের জন্য প্রশাসন’ এই নীতিকে মূল প্রতিপাদ্য ধরে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির যে যাত্রা সেটিকে সকল চীনা জনগণ স্বাগত জানায়। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, রাজনীতিবিদদের স্বদিচ্ছা যেকোন দেশের সার্বিক ও তড়িৎ উন্নয়নের প্রধান নিয়ামকগুলোর অন্যতম। সেইসাথে, যেকোন দেশের উন্নয়নে সে দেশের সরকার প্রধানদের দীর্ঘমেয়াদী ক্ষমতায় উপবেশন, উন্নয়নমূলক যেকোন রূপরেখা ও প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রধান ভূমিকা রাখে বলে আমার মনে হয়। সিপিসি ওই স্বদিচ্ছা বা স্থিতিশীলতাসহ অন্যান্য সকল গুণেই গুণান্বিত, যার প্রতিফলন আমরা চীনের সার্বিক উন্নয়নের রূপরেখায় যত্রতত্র দেখতে পাই। জনগণের সেফটি এবং সিকিউরিটির দিক দিয়ে বিশ্বের এক নম্বরে চীনকে স্থান দেওয়া যেতে পারে। যেখানে ধনি-গরীব, ভিআইপি-নন ভিআইপি, ছোট-বড় ভুলে গিয়ে প্রাধান্য দেওয়া হয় একজন মানুষকে। তাইতো সব ধরনের সুযোগ-সুবিধার আওতায় আনা হয় সকলকে। এর ফলে বিশ্বের সর্বাধিক জনসংখ্যার এই দেশের মুষ্টিমেয় জনগণ সরকার প্রধানদের মান্য করে।
যেকোন দেশের সরকার যদি সেদেশের সাধারণ জনগণের সকল মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করে সেফটি, সিকিউরিটির নিরাপত্তা দিতে পারে তাহলে সেই দেশের জনগণই সবচেয়ে সুখী। চীনা জনগণের ভিতরে এমনটা খেয়াল করেছি। তাদের সবার ক্ষেত্রে প্রতিটা দিন শুরু হয় অতি সাধারণভাবে। দিনের শুরুতে সবাই যার যার কর্মক্ষেত্রে বের হয়ে কাজ শেষে বাসায় ফেরার নিশ্চয়তা নিয়ে। কিন্তু বেশিরভাগ দেশে এই নিশ্চয়তা দিতে সেদেশের সরকার প্রধানরা ব্যর্থ। সেই সাথে সেখানে বাড়তি উপদ্রব হিসেবে যুক্ত হয় চুরি, ছিনতাইসহ নানান ধরনের অনৈতিক কাজ। ঘুষ, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি যেকোন দেশের উন্নতির প্রধান অন্তরায়। চীনে এই ধরনের কর্মকান্ড এবং সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয়ের সাথে সম্পর্কিত কর্মকান্ড শুনতে পাইনি। যেগুলো চীনা প্রশাসন নিয়ন্ত্রণে রেখেছে শিক্ষিত-অশিক্ষিত, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলের উপযুক্ত মাত্রায় কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে। এছাড়াও প্রশাসনের তত্ত্বাবধায়নে চীনের সকল মানুষের চলাচল সার্বক্ষণিক অত্যান্ত সুচারুভাবে পর্যবেক্ষণ করা হয়। যেটা চীনাদের যেকোন অপকর্মকে অর্থাৎ অপরাধমূলক কর্মকান্ডের প্রধান অন্তরায় বলে মনে হয়।
লেখক: গবেষক, ফুজিয়ান এগ্রিকালচার এন্ড ফরেস্ট্রি ইউনিভার্সিটি, ফুজো, ফুজিয়ান, চীন।
[email protected]
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।