Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আশ্রয়ণে নিম্নমানের কাজ,অনেক সাধের উপহারের ঘরে শঙ্কায় বসবাস

ফুলবাড়ীতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিদর্শন টিম

মাহফুজুল হক আনার/আবু শহীদ | প্রকাশের সময় : ১০ জুলাই, ২০২১, ৭:৩০ পিএম

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন ভূমিহীন পরিবারগুলিকে মালিকানা দিয়ে সুন্দর ঘরে বসবাসের সুযোগ করে দেয়া। বিশ্বের অনেক উন্নত দেশের সরকার প্রধানরা যা করতে পারেননি বাংলাদেশের মত দারিদ্র পীড়িত উন্নয়নমুখী একটি দেশের কোটি কোটি জনগোষ্ঠির মধ্যে লক্ষ লক্ষ ঠিকানাবিহীন মানুষগুলিকে ঠিকানা দেয়ার। সারি সারি ঘর হয়েছে। ঘর পেয়ে ভূমিহীনেরা উচ্চছিত হয়েছে। কিন্তু কিছু কিছু এলাকায় ব্যাপক দূর্ণীতি ও সেচ্ছাচারিতার কারনে ভাল এবং বহুল প্রসংখিত আশ্রায়ন নামক প্রকল্পটি প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে। সামান্ন বৃষ্টিতে সদ্য তৈরী করা ঘর ভেঙ্গে পড়েছে। আবার কোথায় কোথায় খালের মাঝে প্রকল্প প্রতিষ্ঠা করায় ঘর পাওয়া মানুষগুলি পথহীন হয়ে পড়েছে। প্রধান মন্ত্রী’র স্বপ্নের প্রকল্প নিয়ে দূর্ণীতি’র ঘটনা প্রকাশ হওয়ায় মর্মাহত হয়েছেন প্রকল্পের স্বপ্নদ্রষ্টা প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা। নিজ কার্যালয় অর্থাৎ প্রধান মন্ত্রীর কার্যালয় থেকে সঠিক একটি পরিদর্শন টিম পাঠানো হয় আশ্রায়ন প্রকল্পসমূহে। শুক্রবার সন্ধার সামান্ন আগে দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার দুটি প্রকল্প এলাকায় নিয়ে যাওয়া পরিদর্শন টিমকে। টিমের সদস্যরা হলেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) আবু তাহের মোঃ মাসুদ রানাসহ প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের উপ-প্রকল্প প্রকৌশলী মোঃ আনোয়ার হোসেন ও মনিটরিং অফিসার গোলাম মবিন মোঃ মাহতাবুল । কিন্ত অজ্ঞাত কারনে প্রথম পর্যায়ের অত্যন্ত নি¤œমানের কাজ করা ঘরগুলি দেখানো হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। কেননা নষ্ট হয়ে পড়া অনেক ঘর বসবাসের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে। ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টিতে আসার কারনে অযোগ্য হয়ে ঘরগুলি মেরামতের কাজ শুরু করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। অবশ্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, দেরীতে আসায় দুটি প্রকল্প এলাকায় যেতেই সন্ধা হয়ে যাওয়ায় পরিদর্শন টিমকে সবগুলি প্রকল্প দেখানো সম্ভব হয়নি।

জানা গেছে, মুজিববর্ষ উপলক্ষে ‘আশ্রয়ণের অধিকার, শেখ হাসিনার উপহার’ শীর্ষক প্রতিপাদ্যে দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে প্রথম ধাপে ৭শত ৬৯টি ২য় পর্যায়ে ২শ ৩০টি এবং উপজেলা পর্যায়ের দুটিসহ মোট ১ হাজার ১টি বাড়ি নির্মাণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে প্রথম ধাপে নির্মিত বাড়িগুলোর নাম দেওয়া হয়েছে ‘জয় বাংলা পল্লী’। এই ধাপে ফুলবাড়ীতে ৭শ ৬৯টি বাড়ি নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে।
দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলায় প্রধানমন্ত্রীর উপহারের আশ্রয়ণ প্রকল্পে নি¤œমানের কাজ হওয়ায় উপকারভোগীদের বসবাস নিয়ে শঙ্কা আশংকার শেষ নেই। ভিত মজবুত না থাকায় সামান্য ঝড়েই ঘরগুলো উড়ে যাবার আংশকা থাকলেও অনেকেই বুকভরা স্বপ্ন নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ঘরে বসবাস করতে গিয়ে পড়েছে নতুন নতুন সমস্যায় । নেই রাস্তা,ঘরের মেঝে ফাঁটা,ওয়াল ফাঁটা,নেই জানালা কোথাও কোথাও ঘরগুলো দেবেও গেছে। এর আগে সামান্য ঝড়ে ভেঙে পড়ে আলাদীপুর ইউনিয়নের বাসুদেবপুরের ‘জয়বাংলা পল্লীর’ বেশ কয়েকটি ঘরের বর্গা, ধসে পড়ে আধাপাকা বারান্দার পিলার। ওই ঘটনার পর থেকে ফুলবাড়ীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের সুবিধাভোগীদের অভিযোগ, বেশিরভাগ ঘরের নির্মাণ কাজে চুড়ান্ত অনিয়ম হয়েছে, ব্যবহার করা হয়েছে নিম্নমানের সামগ্রী। কোনো কোনো ঘরে ব্যবহার করা হয়েছে আগে ব্যবহৃত পুরনো ইট। ফলে বেশীরভাগ বাড়িই ব্যবহারের অনুপোযোগী হয়ে পড়ায় নতুন করে কাজ করতে দেখা গেছে। অথচ প্রতিটি ঘর নির্মাণে যে বরাদ্দ তাতে বেশ ভালো মানের কাজ করা সম্ভব ছিল বলে দাবি তাদের। এর মধ্যে বেশীরভাগ বসবাসকারী ঘরগুলোর নির্মাণ কাজ নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন সেইসাথে ঝড়সহ প্রাকৃতিক দূর্যোগের ভয়ে এখন ওসব বাড়িতে থাকতে চাচ্ছেননা অনেকেই।
ফুলবাড়ী উপজেলায় উপহারের ঘর পাওয়া আনজুআরা বেগম বলেন, ‘সামান্য ঝড়ের বাতাসে ঘরের চালা উড়ে যায়। রাস্তা নেই,পায়খানার ওয়াল ফাঁটা,মেঝে ফাঁটা । একই কথা বলেন,মুন্সিটুডু,কুশলপুর আশ্রয়ন প্রকল্পের মিনারা বেগমসহ একাধিক বসবাসকারী। তারা বলেন, এর আগে ‘সামান্য ঝড়ে ঘরের চাল সব উড়ায় নিয়ে গেছে। একেতো নিম্নমানের কাজ হয়েছে, তার উপর কোন কোন ঘরে জানালা নেই,নেই সুপেয় পানি ও বিদ্যুতের ব্যবস্থা। জমির মাঝখানে ঘরবাড়িগুলো হলেও মূল রাস্তা থেকে সেখানে যাওয়ার জন্য এখন পর্যন্ত তেমন কোন রাস্তা করা নেই।’
তবে ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিয়াজ উদ্দিন বলেন, মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া উপহারের ঘরগুলোতে প্রথম পর্যায়ে কিছু ত্রুটি বিচ্যুতি হয়েছে,এখন সেগুলো মেরামত করা হচ্ছে। আমরা প্রধানমন্ত্রীর এই উপহারের ঘর ঝকঝকে চকচকে কওে তবেই উপকারভোগীদের কাছে হস্তান্তর করছি। এরপরেও কোন সমস্যার অভিযোগ পেলেই তা সাথে সাথে সমাধানের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

 



 

Show all comments
  • মোঃ মিজানুর রহমান ১০ জুলাই, ২০২১, ১১:১১ পিএম says : 0
    অসাধারন সংবাদ।ইউ এন ও সাহেব জানেন তিনি কতবড় প্রতারণা করেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে!আমি তার কঠিন শাস্তি দাবি করছি। এই উপজেলা পর্যায়ের সর্বোচ্চ কামলার।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আশ্রয়ণ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ