মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকার সরকার দেশটির নারীদের একসঙ্গে একাধিক পুরুষকে বিয়ে করার বিষয়টি বৈধ করার প্রস্তাব দিয়েছে। দেশটির সরকারের গ্রিন পেপার নামে সরকারি নথিতে এই প্রস্তাব অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আর এই বিষয়টি নিয়ে দেশটিতে চরম বিতর্ক লেগে গেছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশটির ক্ষমতাসীন সরকার ১৯৯৪ সালে শ্বেতাঙ্গ সংখ্যালঘুদের শাসনকালের অবসানের পর এই প্রথম দেশটির বিবাহ আইনে বড় ধরনের পরিবর্তন আনার পরিকল্পনা নিয়েছে। নথিটি জনসাধারণের মতামত জানানোর জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে।
বিসিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, দক্ষিণ আফ্রিকায় সাংবিধানিকভাবে নারী সমকামী ও পুরুষ সমকামীদের বিয়ে বৈধ। রয়েছে পুরুষদের বহুবিবাহের বৈধতা।
জানা যায়, নারীদের সমাজই প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে দক্ষিণ আফ্রিকা সরকার। তাই একজন নারী একাধিক বিয়ে করতে পারবে এমন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের পরিকল্পনা নিয়েছে তারা। দক্ষিণ আফ্রিকার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবের অনুমোদন দিয়েছে। দেশটির সরকার বিবাহ আইনে পরিবর্তন আনতে চাচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে এমন প্রস্তাব করেছে তারা।
তবে এই ধরনের প্রস্তাবের পর রক্ষণশীল এবং ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলোর ব্যাপক চাপের মুখে পড়েছে দক্ষিণ আফ্রিকান সরকার। দেশটিতে পুরুষের বহুবিবাহের ক্ষেত্রে কোনও বাধা নেই।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিরোধী নেতা আফ্রিকান ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্রেটিক পার্টির (এসিডিপি) নেতা কেনেথ মেসহোয়ে বলছেন, নারীদের ক্ষেত্রেও এমন অধিকার দেওয়া হলে ‘সমাজ ধ্বংস’ হয়ে যাবে। বেশ কয়েকজন তারকাও এমন প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছেন।
দেশটির রিয়্যালিটি স্টার মুসা এমসেলেকু বলেছেন, এটা আফ্রিকার সংস্কৃতি ধ্বংস করে দেবে। ওই ব্যক্তিদের শিশুদের কি হবে? তারা কিভাবে তাদের পরিচয় জানবে?
এর বিরোধিতা করছেন জনপ্রিয় টিভি ব্যক্তিত্ব ও ব্যবসায়ী মুসা এমসেলেকু, যার ঘরে ৪ জন স্ত্রী রয়েছে। একাধিক স্ত্রীর সঙ্গে সংবাদ বিষয়ক অনুষ্ঠান করে রাতারাতি বিখ্যাত হয়ে উঠেছেন তিনি।
নারীদের বহুবিবাহ হলে আফ্রিকার সংস্কৃতি ধ্বংস হয়ে যাবে উল্লেখ করে মুসা এমসেলেকু প্রশ্ন রাখেন, এদের সন্তানরা কীভাবে জানবে যে, তাদের জন্মদাতা কে?
নারীরা পুরুষের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে পারে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, তাহলে কি এখন পুরুষদের বিয়ে করতে দেনমোহর দেবে মেয়েরা? পুরুষরা কী এখন থেকে নিজের নামের সঙ্গে ওই নারীর পদবি ব্যবহার করবে?
এ রকম নানা প্রশ্ন তুলে দক্ষিণ আফ্রিকার রক্ষণশীল সমাজের অনেকেই বলছেন, শারীরিক গঠন ও প্রকৃতিগত দিক দিয়েই একজন নারী একসঙ্গে একাধিক পুরুষকে বিয়ে করার সক্ষমতা রাখেন না। তা ছাড়া এখন পর্যন্ত এমন ঘটনা কেউ দেখেনি, শোনেওনি কখনো। নারীর বহুবিবাহ হতে পারে না, কোনোভাবেই সম্ভব না। তবে দেশটির সরকারের করা এই প্রস্তাবের পক্ষে অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন ধরনের যুক্তি দেখান খ্যাতিমান শিক্ষাবিদ কলিস মাচোকো। প্রতিবেশী জিম্বাবুয়েতে জন্ম নেয়া এই গবেষক নারীদের বহুবিবাহ নিয়ে কাজ করছেন।
একাধিক স্বামী থাকা অন্তত ২০ জন নারীর সঙ্গে কথা বলেছেন জানিয়ে কলিস মাচোকো বলেন, একাধিক স্বামীর সঙ্গে মিলে স্ত্রীর ঘর করা ৪৫ জন স্বামীর সাথেও কথা হয়েছে। নারীর একসঙ্গে একাধিক পুরুষের বিয়ে নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই তাদের।
অধ্যাপক মাচোকো বলেন, নারীদের বহুবিবাহ প্রথা একসময় চালু ছিল কেনিয়া, কঙ্গো প্রজাতন্ত্র এবং নাইজেরিয়ায়। গ্যাবনে নারীরা এখনো বহুবিবাহ করে, সেটা ওই দেশে আইনসিদ্ধ। সন্তানের পরিচয় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এ ধরনের সংসারে জন্মানো শিশু নিয়ে প্রশ্ন উঠবে কেন? যে শিশু ওই নারীর গর্ভে আসছে, সে তো তার পুরো পরিবারেরই সন্তান।’ সূত্র : বিবিসি, সিএনএন
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।