Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কর্মমুখী শিক্ষা জোরদার করতে হবে

সরদার সিরাজ | প্রকাশের সময় : ২৭ মে, ২০২১, ১২:০১ এএম

উন্নয়নশীল দেশ হওয়ার কার্যক্রম শুরু হবে ২০২৬ সাল থেকে। তখন বিদেশি অনুদান, সহায়তা, ঋণ সুবিধা, বাণিজ্যিক ও মেধাস্বত্ত্ব সুবিধা, ভর্তুকি ইত্যাদি বন্ধ হবে। ফলে কঠিন পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে। বলা বাহুল্য, এসব সত্ত্বে ও আমাদের উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার দিকে এগিয়ে যেতে হবে, যা খুবই চ্যালেঞ্জিং কাজ। অনেক দেশই এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে পারেনি। আবার নিচেও নামতে পারেনি। ফলে তারা ফাটা বাঁশে আটকা পড়েছে। আমাদের যেন তা না হয়, সাফল্য অর্জিত হয়, সেটিই সবার কাম্য। কামনা করে বসে থাকলে তো চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা হবে না। সে জন্য প্রয়োজনীয় কাজ করতে হবে এবং তার প্রস্তুতি নিতে হবে এখন থেকেই। সরকার গত ২৭ এপ্রিল ২২ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে। কমিটি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার প্রস্তুতি, পরিকল্পনা গ্রহণ, বাস্তবায়ন ও তদারকি করবে। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবকে এ কমিটির সভাপতি করা হয়েছে। এছাড়া, ১৬ জন সচিব এবং বিডা, ট্যারিফ কমিশন, এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ঢাকা চেম্বার ও ওষুধ শিল্প সমিতির সভাপতিদের সদস্য করা হয়েছে। কমিটির কার্যপরিধির মধ্যে রয়েছে এলডিসি থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের পর দেশের কোন কোন খাতে কী প্রভাব পড়তে পারে, তা নির্ধারণ করা। হ্যাঁ, এ ধরনের কমিটি করা দরকার। তবে এ কমিটি যেন অতীতের বিভিন্ন কমিটির মতো গতানুগতিক না হয় এবং কমিটির সুপারিশগুলো যেন অকার্যকর হয়ে না পড়ে।

উন্নয়নশীলতার চ্যালেঞ্জ নিয়ে দেশের সব মহলেই ব্যাপক আলোচনা আছে। সকলের এক কথা- উন্নয়নশীলতার চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার জন্য প্রতিটি ক্ষেত্রেই প্রয়োজনীয় দক্ষ লোক দরকার। তবেই উৎপানশীলতা বাড়বে। পণ্যের মূল্য কমবে, মান বাড়বে। প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা যাবে। তাই এ ব্যাপারে খাত ভিত্তিক ব্যাপক আলোচনা হওয়া দরকার। চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় দেশের কৃষিখাতের করণীয় নিয়ে স¤প্রতি বিস্তারিত আলোচনা করেছি এই কলামে। এখন দরকার, শিক্ষা, বিদ্যুৎ, যোগাযোগ, পরিবহন, শিল্প, কর্মসংস্থান, বিনিয়োগ, বাণিজ্য, স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা, পরিবেশ, প্রচার ও প্রকাশনা, সংস্কৃতি ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনা করা। তবে দেশের সব কাজের দক্ষতার সাথে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ যুক্ত। কারণ, উপযুক্ত শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ ছাড়া কোন খাতেই প্রয়োজনীয় দক্ষ লোক তৈরি হয় না। তাই দেশের শিক্ষাখাত নিয়েই আলোচনার শুরু।

দেশের চলতি শিক্ষা ব্যবস্থা মূলত সেকেলে। উপরন্তু শিক্ষার এবং বেশিরভাগ শিক্ষক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মান খারাপ! গবেষণাও তেমন হয় না শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। তাই চলতি শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে মানুষ সম্পদে পরিণত হচ্ছে না। বোঝায় পরিণত হচ্ছে। বেকারত্ব বৃদ্ধি পাচ্ছে ক্রমান্বয়ে। অপরদিকে, দক্ষ লোকের অভাবে বিভিন্ন খাতে ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। তাই দেশের জরুরি কাজগুলো বহু বিদেশী দক্ষ লোক দিয়ে করাতে হচ্ছে। এতে বিপুল অর্থ বিদেশে চলে যাচ্ছে। ওদিকে, অদক্ষতার কারণে আমাদের প্রবাসীদের উপার্জন খুব কম। একই কাজ করে পাকিস্তান ও ভারতের প্রবাসীরা যে বেতন পায়, তার অর্ধেকের মতো বেতন পায় আমাদের প্রবাসীরা। তাই দেশের কর্মক্ষম লোকদের দক্ষ করে গড়ে তোলা আবশ্যক। সে জন্য বিদ্যমান শিক্ষা ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন করে আধুনিক করতে হবে। স¤প্রতি বিবিসির খবরে প্রকাশ, ‘বর্তমানে বিশ্বজুড়ে শিক্ষার যে ধরনটি নিয়ে সবচেয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে, সেটি হলো স্টেম (সায়েন্স, টেকনোলজি, ইঞ্জিনিয়ারিং ও ম্যাথাম্যাটিকস) এডুকেশন। উন্নত দেশগুলো মনে করছে, ভবিষ্যতে তাদের দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি ধরে রাখতে হলে স্টেম এডুকেশন অতি প্রয়োজনীয় বিষয়। যেসব দেশ স্টেম এডুকেশনের উপর জোর দেবে তারাই ভবিষ্যতে এগিয়ে যাবে। স্টেম এডুকেশনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মাঝে জটিল সমস্যা সমাধানের মনোভাব ও দক্ষতা তৈরি হয়। বিজ্ঞান সম্পর্কে তাদের জানাশুনা তৈরি হয় এবং শিক্ষার্থীরা আবিষ্কারক ও উদ্ভাবক হয়ে উঠতে পারে। ভারত ও চীনেও শিক্ষা ব্যবস্থায় স্টেমকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। স্টেম এডুকেশনের মূল লক্ষ্য হচ্ছে, চতুর্থ শিল্প বিপ্লব এবং একুশ শতকের জন্য জনবল গড়ে তোলা’। বিশ্বের সাথে তাল মিলে আমাদেরও চলতে হবে। নতুবা পিছিয়ে পড়তে হবে। দ্বিতীয়ত, বর্তমান যুগ হচ্ছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির যুগ। তাকে অবহেলা করে সামনের দিকে এগুনো সম্ভব নয়। এ ক্ষেত্রে গুরুত্ব দিতে হবে আমাদের। অবশ্য, এই শিক্ষা খুবই ব্যয় বহুল এবং এতে সর্বোচ্চ মেধাবী শিক্ষক ও শিক্ষার্থী দরকার। তাই বাস্তবায়ন কষ্টসাধ্য। কিন্তু কর্মমুখী শিক্ষা সহজ, সরল ও স্বল্প ব্যয়ের। ফলে এটা বাস্তবায়ন সহজসাধ্য। সে কারণে কর্মমুখী শিক্ষার দিকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে যত বিলম্ব হবে ততই ক্ষতি হবে দেশের। অন্যদিকে, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সার্বক্ষণিক পরিবর্তন-পরিবর্ধন হয়ে অত্যাধুনিক হচ্ছে। ফলে দেশ-বিদেশের কাজের ধরনও পরিবর্তন হচ্ছে প্রতিনিয়তই। তাই স্টেম ও কর্মমুখী শিক্ষার পাঠ্যসূচি প্রতি বছরই হালনাগাদ এবং মান বিশ্বমানের করতে হবে।

কর্মমুখী শিক্ষা মানসম্পন্নভাবে বাস্তবায়ন করার জন্য প্রয়োজনীয় উপযুক্ত শিক্ষক দরকার, যা বর্তমানে তেমন নেই। বিষয়ভিত্তিক মেধাবী ও দক্ষ শিক্ষক নিয়োগ করতে হবে সর্বপ্রথম। শিক্ষকদের প্রচলিত বেতন-সুবিধাদি ও মর্যাদা বহাল রেখে মেধাবী ও দক্ষ শিক্ষক পাওয়া যাবে না। কিছু সংখ্যক পাওয়া গেলেও পরবর্তীতে সুযোগ পেলে তাদের অনেকেই অন্য পেশায় চলে যাবে। বিশেষ করে সরকারের ক্যাডার সার্ভিসে। ইতোপূর্বে অনেকেই তা করেছে। তাই শিক্ষকের বেতন-সুবিধা ও মর্যাদা সর্বাধিক করতে হবে। উপরন্তু সব শিক্ষককে পেনশনের আওতায় আনতে হবে, যাতে অবসর জীবনে আর্থিক সংকটে পড়তে না হয়। এসব হলেই দেশের বিষয়ভিত্তিক সেরা মেধাবী ও দক্ষ লোকরা শিক্ষকতায় এগিয়ে আসবে। এমনকি প্রবাসীরাও এগিয়ে আসবে। আর শিক্ষকের বেতন-সুবিধাদি ও মর্যাদা সর্বাধিক করা না হলে বর্তমানের মতো অবস্থায় বহাল থাকবে। ফলে শিক্ষকের মানের কোনো পরিবর্তন হবে না। আর শিক্ষকের মান ভালো না হলে শিক্ষারও মানোন্নয়ন হবে না। তাই দেশের সেরা মেধাবী ও দক্ষদের শিক্ষকতায় নিয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। সর্বাধিক বেতন ও মর্যাদা প্রদান করা হলেই সেটা হবে। শিক্ষকের নিয়োগ প্রক্রিয়া হতে হবে অত্যন্ত নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ। সর্বোপরি সব শিক্ষককেই উপযুক্ত প্রশিক্ষণ প্রদান করতে হবে।

দেশে প্রয়োজনীয় দক্ষ লোকের প্রায় অর্ধেকটাই কারিগরি শিক্ষার সাথে সংশ্লিষ্ট। তাই কারিগরি শিক্ষাকে উন্নত দেশগুলোর ন্যায় কমপক্ষে ৬০-৭০%-এ উন্নীত করা দরকার। তাহলেই দেশের প্রয়োজনীয় দক্ষ লোকের অর্ধেকের বেশি পূরণ হবে এখান থেকেই। তাই নবম থেকে এইচএসসি পর্যন্ত (সমমানেরসহ) কারিগরি শিক্ষার যে কোন একটি ট্রেড বাধ্যতামূলক করা দরকার। এছাড়া, কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছেলে শিক্ষার্থীদের মাসিক বৃত্তি প্রদান করা উচিৎ মেয়ে শিক্ষার্থীদের মতো। এসব হলেই এক দশকের মধ্যেই দেশের শিক্ষার্থীদের অর্ধেকের বেশি কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত হবে।দক্ষতার ঘাটতির বেশিরভাগ দূর হবে। দেশের ভোকেশনাল শিক্ষাও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই এ ক্ষেত্রেও গুরুত্ব দেয়া দরকার। তাহলে দক্ষতার ঘাটতি অনেকটা দূর হবে।

কর্মমুখী শিক্ষা পদ্ধতি ভালভাবে বাস্তবায়ন করার জন্য দেশব্যাপী খাতভিত্তিক প্রয়োজনীয় ও আধুনিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা দরকার। সব প্রতিষ্ঠানেই প্রয়োজনীয় দক্ষ স্টাফ নিয়োগ, আসবাব পত্র সরবরাহ, প্র্যাকটিক্যাল করার জিনিসপত্র সরবরাহ করা দরকার। এছাড়া, প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের খেলা, সংস্কৃতি চর্চা, বিনোদন ইত্যাদির ব্যবস্থা থাকতে হবে। নতুবা শিক্ষার্থীদের শরীর গঠন ও মননশীলতা সৃষ্টি হবে না। শিক্ষা ব্যয় হ্রাস করে গরীব মানুষের নাগালের মধ্যে আনতে হবে। নতুবা সর্বজনীন শিক্ষা নীতি বাস্তবায়িত হবে না। এসব করার জন্য বিপুল অর্থ দরকার। সে জন্য শিক্ষা খাতের ব্যয় বর্তমানের চেয়ে বৃদ্ধি করে জিডিপির ৬% করা আবশ্যক। মনে রাখতে হবে, শিক্ষা খাতের ব্যয় কল্যাণকর। যা ব্যয় করা হয়, তার লক্ষগুণ ফেরত আসে। তাই বিশ্বের বেশিরভাগ দেশে শিক্ষা খাতে সর্বাধিক ব্যয় করা হয়।

উন্নয়নশীলতার চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার জন্য কোন খাতে কত দক্ষ লোক দরকার এবং তা কখন প্রয়োজন, তার সঠিক পরিসংখ্যান দরকার। তৎপ্রেক্ষিতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শিক্ষা প্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে। নতুবা সাফল্য আসবে না। দক্ষতার ঘাটতি থেকেই যাবে। বিশ্বায়নের যুগে মানুষেরও বিশ্বায়ন হয়েছে। অর্থাৎ সকলেই সকলের সাথে সংশ্লিষ্ট হয়ে পড়েছে। তাই আন্তর্জাতিক ভাষা হিসাবে ইংরেজি ভাষার গুরুত্ব ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া, আমাদের কর্মসংস্থানের বিরাট অংশ বিদেশ নির্ভর। তাই তাদের ইংরেজিতে দক্ষ হওয়া অপরিহার্য। উপরন্তু কর্মসংস্থান ও আয় বৃদ্ধির নতুন খাত হচ্ছে আউট সোর্সিং। এই খাতেও সাফল্যের জন্য ইংরেজিতে দক্ষতা আবশ্যক। নতুন শিক্ষা পদ্ধতিতে ইংরেজি ভাষার দিকে গুরুত্ব দিতে হবে। দেশে অবক্ষয়ের সুনামি চলছে। তাই প্রতিটি ক্ষেত্রেই নৈতিকতাহীন কর্ম জ্যামিতিক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।এ থেকে পরিত্রাণ পাওয়া জন্য মানুষের মধ্যে মূল্যবোধ জাগ্রত করতে হবে, যার প্রধান স্থান হচ্ছে পরিবার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। তাই ধর্মীয় শিক্ষাকে গুরুত্ব দিতে হবে। বাংলা মাতৃভাষা। তাই এটা সর্বাধিকারযোগ্য। বাণিজ্যিক শিক্ষায়ও দক্ষতা দরকার। বাকী বিষয়গুলো কম গুরুত্বপূর্ণ। তাই ঐচ্ছিক হিসাবে রাখতে হবে।

যে কোনো কাজ ভালভাবে বাস্তবায়ন করার জন্য অনুক‚ল পরিবেশ দরকার। কিন্তু দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিবেশ অনুক‚ল নয়। চরম প্রতিকূল অবস্থা বিরাজ করছে। জাতীয় রাজনীতির সংশ্লিষ্টতার কারণে এই অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও স্টাফরা এবং পরিচালনা কমিটির লোকরা জাতীয় রাজনীতির সাথে সরাসরি সংশ্লিষ্ট হয়েছে। তাই এ নিয়ে বেশিরভাগ সময়ই চলছে দলাদলি, হানাহানি। উপরন্তু শিক্ষক ও স্টাফ নিয়োগে দুর্নীতি, দলীয়করণ ও স্বজনপ্রীতি ব্যাপকতর। রাবির নিয়োগ কেলেঙ্কারি তার সর্বশেষ প্রমাণ। শিক্ষার্থীদের একটা অংশ ছাত্র রাজনীতির নামে টেন্ডারবাজীসহ নানা অপকর্মে লিপ্ত হয়েছে। এসব মিলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিবেশ ধ্বংস হয়ে গেছে। রাজনৈতিক দলের প্রভাবের কারণেই এটা হচ্ছে। অপরদিকে, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদের নির্বাচন হয় না বহুদিন যাবত। ফলে নেতৃত্ব সৃষ্টি হচ্ছে না। তাই জাতীয় রাজনীতিতে বিরাট শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে। এ সুযোগে জাতীয় রাজনীতিতে ব্যবসায়ী ও মাস্তানরা ঢুকে পড়ে প্রায় দখল করে ফেলেছে। এতে জাতীয় রাজনীতি কলুষিত ও ব্যবসায়িক হয়ে পড়েছে, যার প্রভাব পড়েছে সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রেই।তাই সার্বিক দিক বিবেচনা করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জাতীয় রাজনীতির লেজুড়বৃত্তি নিষিদ্ধ করে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও স্টাফদের নিজস্ব দাবি-দাওয়া ভিত্তিক সংগঠন করার বিধান জারি করে কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। তাহলে শিক্ষার পরিবেশ ফিরে আসবে।

করোনা মহামারির কারণে সারা বিশ্বের ন্যায় এ দেশেরও শিক্ষার মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। গত বছর মার্চ মাস থেকে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ আছে। সেই সাথে আন্তর্জাতিক শিক্ষা কার্যক্রমও বন্ধ আছে। দেশে কিছু কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইন শিক্ষা চালু করা হয়েছে। কিন্তু এতে সামান্য শিক্ষার্থীই সংশ্লিষ্ট হতে পেরেছে। আর বেশিরভাগ শিক্ষার্থীর শিক্ষা বন্ধ হয়ে রয়েছে। উপরন্তু তারা ঘরবন্দি হয়ে বিষন্নতায় ভুগছে। অনেকেই বিপথে ধাবিত হয়েছে। এছাড়া, ঝরে পড়া ও বাল্য বিবাহের হার অনেক বেড়েছে। অন্যদিকে, স্কুল কলেজে অটোপাস ও সিলেবাস শর্টকাট করা হয়েছে গত বছর। সবমিলে শিক্ষার্থীরা বড় একটি গ্যাপে পড়ে গেছে। চলতি বছরেরও প্রায় অর্ধেক হতে চলেছে। তবুও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধই রয়েছে। তাই এ বছরও অটোপাস ও সিলেবাস শর্টকাট করতে হতে পারে। এসব ক্ষতিকর, যা পূরণ হবে না। তাই শিক্ষার ক্ষতি যেন আর বেশি না হয়, সে জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু হওয়ার সাথে সাথে সব শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকে শিক্ষার ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার জন্য একসাথে পদক্ষেপ নিতে হবে।
লেখক: সাংবাদিক ও কলামিস্ট।

 

 

 



 

Show all comments
  • AMIR HOSSAIN ২৭ মে, ২০২১, ৯:৪০ এএম says : 1
    একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশে কর্মমুখী শিক্ষা জোরদার করতে হবে তৃতীয় শ্রেনি থেকে সকল শিক্ষার্থীকে । কর্মমুখী শিক্ষা ছাড়া কোন জাতি অর্থনৈতিক ভাবে এগিয়ে যেতে পারেনা । গতানুগতিক পুথিগত মুখস্থ বিদ্যা একজন শিক্ষার্থী , শিক্ষা জীবন শেষে চাকরীর দারস্ত হতে হয় , তাও আবার থাকতে হবে অভিজ্ঞতা । কোন কাজে সময় দেয়া ব্যাতিত অভিজ্ঞতা অর্জন করা যায় না । তাই ছাত্র জীবন থেকেই কর্মমুখী শিক্ষা অতীব প্রয়োজন ।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কারিগরি


আরও
আরও পড়ুন