বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
করোনাভাইরাসের সংক্রমণরোধে সরকার ঘোষিত স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করায় রাজধানীর নিউমার্কেট ও বসুন্ধরা সিটিতে অভিযান পরিচালনা করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ভ্রাম্যমাণ আদালত। গতকাল সকাল সাড়ে ১১টা থেকে বিকেল পৌনে তিনটা পর্যন্ত এই ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা হয়।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ডা. সঞ্জীব দাশের নেতৃত্বে নিউমার্কেট থানা পুলিশের সহায়তায় নিউমার্কেট ও আশপাশের এলাকায় ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা হয়। এ সময় মাস্ক ব্যবহার না করার অপরাধে মোট ২১ জনকে ৬ হাজার ৫০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
অপরদিকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শেখ রফিকুল হকের নেতৃত্বে তেজগাঁও থানা পুলিশের সহায়তায় বসুন্ধরা সিটিতে মাস্ক ব্যবহার না করার অপরাধে ক্রেতা-বিক্রেতাসহ মোট ১৭ জনকে ৫ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। বসুন্ধরা শপিংমলের পূর্ব পাশে অভিযান শুরুর পরই নাকের নিচে মাস্ক পরে ঘোরাফেরার সময় নিশাদ নামে এক দোকান কর্মচারীকে ২০০ টাকা জরিমানা করা হয়। এরপরই নিচ তলার ওই অংশে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। যদিও তখন শপিংমলের অন্যান্য ফ্লোরে বিদ্যুৎ সংযোগ ছিল। অভিযান চলাকালে দেখা যায়, দোকানের সামনে যাওয়া মাত্রই বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করা হচ্ছিল। এক রকম অন্ধকারের মধ্যেই ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রম পরিচালনা করেন ম্যাজিস্ট্রেট শেখ রফিকুল ইসলাম। অভিযান চলাকালে শাওমির মোবাইল শো রুমে মাস্ক না পরেই কাস্টমারের সঙ্গে কথা বলছিলেন কর্মচারী আহসান। বিষয়টি ম্যাজিস্ট্রেটের নজরে আসায় তাকে ৫০০ টাকা জরিমানার আদেশ দেয় ভ্রাম্যমাণ আদালত। দোকানে কর্মচারী না থাকায় কোরআন শরীফ পড়ছিলেন ইমরান ফ্যাশনসের কর্মচারী আলী হোসেন। তবে তখন তার মুখে মাস্ক ছিল না। অনেক অনুনয়-বিনয় করেও জরিমানা থেকে বাঁচতে পারেননি তিনি। তাকে ১০০০ টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। শুধু বিক্রেতাদের নয়, বসুন্ধরা শপিং সিটি শপিং কমপ্লেক্সে কেনাকাটা করতে এসে হাতে ও থুতনিতে মাস্ক নিয়ে ঘোরাফেরা করায় জরিমানা করা হয় সাত জন ক্রেতাকে। মো. ওয়ারেশ নামে গৃহকর্তা স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে কেনাকাটা করতে আসেন। তার স্ত্রীর মুখে মাস্ক না থাকায় ২০০ টাকা জরিমানা গুণতে হয় তাকে। পরে তার স্ত্রী রোখসানা বলেন, পুরো মার্কেটে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন। ভ্যাপসা গরম। মুখে মাস্ক রাখতে খুব কষ্ট হচ্ছিল।
যখনই মাস্ক খুলে হাতে নিয়েছি তখনই ম্যাজিস্ট্রেট জরিমানা করেছে। দ্বিতীয় তলার হোলসেল মার্কেটে মুখে মাস্ক না পরা ক্রেতাদের ঢুকতে দেয়ার অপরাধে কর্মচারী সাদিক ও একই অপরাধে সোগোর মালিক সাইফুল ইসলামকে ১০০০ টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শেখ রফিকুল ইসলাম বলেন, গত সোমবার থেকে মার্কেটে স্বাস্থ্যবিধি পরিপালনের বিষয়টি কঠোরভাবে মনিটরিং করতে পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশনা দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ সচিবালয়। অভিযানের উদ্দেশ্য জরিমানা নয়, মূলত করোনার সংক্রমণ রোধে সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নই লক্ষ্য। অভিযানে দেখা যায়, অনেকেই মাস্ক পরছেন না, পরলেও কারও নাকের নিচে, কারও থুতনি কিংবা হাতে। এতে করে তারা নিজে যেমন করোনার ঝুঁকিতে পড়ছেন, তেমনি অন্যদেরও ঝুঁকিতে ফেলছেন। সবচেয়ে দুঃখজনক হচ্ছে, খোদ বিক্রেতারাও অনেকে মাস্ক পরছেন না। এজন্য ক্রেতা-বিক্রেতা মিলে ১৭ জনকে দন্ডবিধি ১৮৬০ এর ২৬৯ ধারা অনুযায়ী সাড়ে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
এদিকে, নিউমার্কেটে স্বাস্থ্যবিধি সচেতনতায় অভিযানের অংশ হিসেবে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সচেতন করতে মাইকিং করে মাস্ক পরার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতেও বলা হয়।
উল্লেখ্য করোনা মহামারির বিস্তার ঠেকাতে চলমান বিধিনিষেধ ১৬ মে পর্যন্ত বাড়িয়েছে সরকার। এ অবস্থায় ঈদ সামনে রেখে খোলা থাকা মার্কেট ও দোকানপাটে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানার কথা বলা হলেও অনেকেই তা মানছেন না। এজন্য স্বাস্থ্যবিধি মানাতে অভিযানে নেমেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।