Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মাদারীপুরে ইটভাটা গিলছে চার ফসলি জমি

স্টাফ রিপোর্টার, মাদারীপুর থেকে : | প্রকাশের সময় : ২২ এপ্রিল, ২০২১, ১২:০২ এএম

মাদারীপুরে প্রতি বছর কৃষিজমি দখল করে গড়ে উঠছে নতুন নতুন ইটভাটা। ভাটার আগ্রাসনে হারিয়ে যাচ্ছে চার ফসলি জমি। ফলে দিন দিন উৎপাদন কমছে খাদ্য উদ্বৃত্ত এই জেলার কৃষিখাতে। কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, মাদারীপুর জেলার মোট ১ লাখ ১২ হাজার ৫৭০ হেক্টর জমির মধ্যে ৮০ হাজার হেক্টর জমি কৃষিজমি হিসেবে চিহ্নিত। এর মধ্যে অতি উর্বর এক ফসলি জমি ১০ হাজার ৬৭৯ হেক্টর, দুই ফসলি জমি ৪৯ হাজার ৭২৬ হেক্টর, তিন ফসলি জমি ২০ হেক্টর ১২৪ হেক্টর ও চার ফসলি ২৫০ হেক্টর। কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, প্রতি বছর এই কৃষিজমিতে উৎপাদিত খাদ্যশস্য জেলার বার্ষিক চাহিদা পূরণ করেও অন্যান্য জেলায় সরবরাহ করা হচ্ছে।

মাদারীপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, কৃষি ও কৃষিজমি নষ্টের অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে ইটভাটা। বিগত এক দশকে মাদারীপুরে অতি উর্বর চার ফসলি কৃষিজমিতে গড়ে ওঠা শতাধিক ভাটা প্রত্যক্ষভাবে ধ্বংস করেছে কৃষিজমিকে। এ ছাড়া ভাটার দূষণ ও বিরূপ প্রভাবে আশপাশের জমির ফসলহানি হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতি বছরই বাড়ছে ভাটার সংখ্যা। আর এসব ইটভাটার বেশির ভাগই স্থাপন করা হচ্ছে ফসলি জমি বা এর পাশ ঘেঁষে। ইট প্রস্তুত ও ভাটা নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৩-এর ৮(১) (ঘ)-তে বলা আছে কৃষিজমিতে কোনো ইটভাটা স্থাপন করা যাবে না। শুধু তাই নয়, ওই আইনের ৩ (ক)-তে বলা হয়েছে নির্ধারিত সীমারেখার (ফসলি জমি) এক কিলোমিটারের মধ্যেও কোনো ইটভাটা করা যাবে না। এছাড়া বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ ভাটা মালিকরা লঙ্ঘন করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

এদিকে ইট প্রস্তুতে ফসলি জমির মাটি কেটে ইটভাটায় নেয়ার অভিযোগ রয়েছে। সদর উপজেলার পাঁচখোলা গ্রামের আনোয়ার হোসেন অভিযোগ করে জানান, সম্প্রতি স্থানীয় ইটভাটার মালিক রহিম খান ইট প্রস্তুতের জন্য জোরপূর্বক তাদের জমি থেকে মাটি কেটে নিয়েছেন। ফলে এ বিষয় উল্লেখ করে মাদারীপুর জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করা হলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই ভাটার মালিককে মোটা অঙ্কের আর্থিক জরিমানা করা হয়। এরপরও ফসলি জমি মাটি কেটে মাটি নিচ্ছেন ভাটা মালিক। মাদারীপুরের চার উপজেলায় ৭৪টি ইটভাটার লাইসেন্স থাকলেও অবৈধ ইটভাটা মিলিয়ে শতাধিক ইটভাটা রয়েছে।

এদিকে মাদারীপুর জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন বলেন, পরিবেশ অধিদফতর তদন্ত করে ইটভাটা স্থাপনের ছাড়পত্র দিলে জেলা প্রশাসন সে মোতাবেক লাইসেন্স দেয়। তবু ফসলি জমিতেও অবৈধভাবে ইটভাটা স্থাপনের অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জমি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ