পবিত্র লাইলাতুল বরাত
আজ দিবাগত রাত পবিত্র লাইলাতুল বরাত। পরম করুণাময় আল্লাহতায়ালা তার বান্দাদের গুনাহ মাফ, বিপদমুক্তি ও
আমরা এই সময়ে যে অবস্থায় আছি তা একটি দুঃস্বপ্ন ছাড়া আর কিছুই নয়। কেউ আমরা ভাবতেই পারিনি যে করোনা নামক এই মহামারি আমাদের জীবনে দেবে অন্ধকারের হাতছানি। যার কারণে আমাদের জীবনে নেমে আসবে স্থবিরতা। বর্তমান সময়ের সবচেয়ে ভয়াবহ আতঙ্কের নাম হলো করোনা ভাইরাস। এর ভয়াবহতা উপলব্ধি করতে গেলে আমাদের শুধু চারপাশে একবার চোখ বুলিয়ে দেখতে হবে। তাহলেই দেখতে পাবো ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এমন অসংখ্য উৎস যা করোনার ভয়াবহতা প্রমাণ করতে যথেষ্ট। যতোগুলো উৎস রয়েছে তন্মধ্যে অন্যতম হলো শিক্ষাব্যবস্থা, যা করোনার কারণে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত হচ্ছে। শিক্ষা মানুষের জীবনে কতোটা গুরুত্বপূর্ণ তা বলার অপেক্ষা রাখে না। একটি জাতির উন্নতির মাপকাঠি সে জাতির শিক্ষিত নাগরিক। অথচ, গত বছর ১৭ মার্চ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। মাঝখানে করোনা সংক্রমণ কিছুটা কমতে শুরু করলো। সেই সময় একটু আশার আলো দেখতে পেয়েছিল শিক্ষার্থীরা। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হয়তো আবারও খুলে যাবে সেই আশায় বুক বেঁধেছিল তারা। কিন্তু বিধি বাম। কোভিডের সংক্রমণ নতুন করে আবারও বাড়ছে। প্রতিদিন আক্রান্ত এবং মারা যাওয়ার সংখ্যা ক্রমশ বেড়েই চলেছে। ফলে, আবারও শুরু হয়েছে লকডাউন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলবে কি খুলবে না, পড়াশোনা করতে পারবে কি পারবে না, পারলেও সেটা কবে নাগাদ- এই অনিশ্চয়তার মধ্যেই ডুবে যাচ্ছে শিক্ষার্থীরা। আধুনিকতার ছোঁয়া পেয়ে ইন্টারনেটের কল্যাণে অনলাইনে ক্লাস নেওয়া সম্ভব হচ্ছে হয়তো। তবে সব শিক্ষার্থী যে, সেই সুযোগটা পাচ্ছে এমনটা কিন্তু নয়। এমন অনেক শিক্ষার্থী আছে যাদের পরিবার তাদের এই সুবিধাটুকু দেওয়ার সামর্থ্য রাখে না। তাদের কাছে কম্পিউটার কিংবা ল্যাপটপ তো দূরে থাক, ভালো মোবাইলও নেই। এমনকি ইন্টারনেট ব্যবস্থার সুবিধাও পাচ্ছে না তারা। এখানে আরো একটি বাস্তবিক সত্য আছে। স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে ক্লাসরুমে ক্লাস করা আর ভার্চুয়াল ক্লাস করা- এই দুটোর মধ্যে রয়েছে বিস্তর ফারাক। সে অর্থে ঠিকমতো পড়াশোনা হচ্ছে না সিংহভাগ শিক্ষার্থীর। আর দীর্ঘসময় এভাবে পড়াশোনা থেকে দূরে থাকার কারণে তাদের মধ্যে দেখা দিচ্ছে উদাসীনতা। তাদের শিক্ষাজীবনে ঘটছে ছন্দপতন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সেশনজট বাড়ছে। এমন অনেক শিক্ষার্থী আছে যারা স্বচ্ছল পরিবার থেকে উঠে আসেনি। মেধার জোরে বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সুযোগ পেয়েছে। দ্রুত পড়াশোনা শেষ করে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করবে এবং ভালো চাকরি পেয়ে সংসারের হাল ধরবে- এই স্বপ্ন দেখে তারা পড়তে এসেছিল। তাদের পরিবারও তাদের মুখপানে চেয়ে আছে। পড়াশোনার পাশাপাশি টিউশনি করে অনেকেই নিজের পরিবারে কিছু টাকা পাঠাতো। কিন্তু করোনার প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ায় সেটাও সম্ভব হচ্ছে না। হতাশার বিষাক্ত ছোবলে নিজেদের মানসিক শান্তি হারিয়ে ফেলছে তারা। আর সেই মানসিক শান্তি খুঁজতে অবলম্বন করছে ভুল পথ। জড়িয়ে যাচ্ছে মাদকাসক্তিতে। নিজেদের বিলিয়ে দিচ্ছে নিকোটিনের ধোঁয়ায়। অনেকের শরীরে বাসা বাঁধছে মরণব্যাধি। তাই আমাদের সকলের মনে শুধু এখন একটাই প্রার্থনা সৃষ্টিকর্তার কাছে। পৃথিবী আবারও সুস্থ হয়ে উঠুক।
শিক্ষার্থী, ফার্মেসী বিভাগ, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।