গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
রাজধানীর দক্ষিণখানের আইনুসবাগে আবদুর রশিদ (৩৫) নামের এক ব্যবসায়ীকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা হিসেবে পরিচিত আবদুল হান্নান ওরফে জাপানি হান্নানসহ ৭জনকে গ্রেফতার করেছে। গতকাল বেলা ১২টার দিকে হান্নানের বাসার সামনে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর হান্নানের বাসায় তল্লাশি চালিয়ে একটি শটগান ও একটি পিস্তল উদ্ধার করেছে পুলিশ। এগুলো লাইসেন্স করা কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন উত্তরা বিভাগের দক্ষিণখান জনের এসি বিপ্লব গোস্বামী।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আশকোনায় ময়লার ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ ও এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে রশীদ ও হান্নানের মধ্যে পূর্ব শত্রুতা ছিল। সর্বশেষ বালি রাখা কেন্দ্র করে রশীদের কাছে চাঁদা দাবি করে হান্নান। রশিদ চাঁদা দিতে রাজি না হওয়ায় তাকে হান্নান শটগান দিয়ে ৩ রাউন্ড গুলি করে হত্যা করে। এর আগে জাপানি হান্নান নিজেকে নির্দোষ দাবি করে ফেসবুক লাইভে এসে উত্তেজিত জনতার হামলা থেকে বাঁচতে পুলিশ এবং ফায়ার সার্ভিসের কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন। ফেসবুক লাইভে তিনি অভিযোগ করে বলেন, প্রতিপক্ষরা ক্ষতিসাধন করার জন্য তার বাড়ি ও গাড়িতে হামলা করেছে।
ওই সূত্র আরো জানায়, বিরোধের জের ধরেই গতকাল বেলা ১২টার দিকে হান্নানের বাসার সামনে তাদের কথা-কাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়। এক পর্যায়ে হান্নান তখন বাসা থেকে শটগান এনে রশিদকে খুব কাছে থেকে একাধিক গুলি করেন। পরে আশপাশের বাসিন্দারা তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় কেসি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক তাাকে মৃত ঘোষণা করেন। আবদুর রশিদের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজিত জনতা হান্নানের গাড়ি ও বাড়িতে ভাঙচুর করে। উত্তেজিত জনতা হান্নানের ব্যক্তিগত গাড়ি পুড়িয়ে দেয়।
ডিএমপির উত্তরা বিভাগের দক্ষিণখান জনের এসি বিপ্লব গোস্বামী বলেন, এ ঘটনায় হান্নানসহ ৭জনকে আমরা গ্রেফতার করেছি। ঘটনার পর উত্তেজিত জনতা হান্নানের গাড়ি ও বাড়িতে ভাঙচুর করে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ বিষয়ে দক্ষিণখান থানার এসআই আজিজুল বলেন, আবদুর রশিদের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। আবদুর রশিদ ওই এলাকার আবদুল মালেকের ছেলে। তিনি রড-সিমেন্টের ব্যবসা করতেন।
ব্যবসায়ীকে খুনের পর মেয়েকে দিয়ে ফেসবুক লাইভ করান আওয়ামী লীগ নেতা!
দক্ষিণখানে ব্যবসায়ী আব্দুর রশিদকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে লাইভে আসেন অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা আমিনুল ইসলাম হান্নান ওরফে জাপানি হান্নান। বেলা ১১টা ৩৯ মিনিটে নিজের আইডি থেকে লাইভে আসেন তিনি। তবে লাইভে তিনি সরাসরি যুক্ত ছিলেন না। তার পক্ষে তার মেয়ে লাইভটি করেন। তবে পেছন থেকে মেয়েকে নির্দেশনা দিতে দেখা গেছে জাপানি হান্নানকে। জাপানি হান্নানের শটগানের গুলিতে আব্দুর রশিদ নিহত হন। খবর পেয়ে রশিদের পক্ষের লোকজন জাপানি হান্নানের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর চালান। এসময় তারা একটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন।
লাইভে জাপানি হান্নান তার মেয়েকে বলছেন, আমাদের বাড়িতে হামলা হয়েছে। গাড়িতে আগুন দিয়েছে। বাড়িতে আগুন লাগানো চেষ্টা চলছে। এরপর বাবার নির্দেশনা অনুযায়ী পরিস্থিতির বর্ণনা করেন তার মেয়ে। যে শটগান দিয়ে ব্যবসায়ী আব্দুর রশিদকে গুলি করা হয়েছে লাইভের সময় সেটি বাসার ডাইনিং টেবিলের ওপর রাখা ছিল।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।