বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার জিয়াউর রহমানের ‘বীর উত্তম’ খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি ও বিএনপির সমাবেশে পুলিশের লাঠিচার্জের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি। বুধবার বেলা তিনটার দিকে নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের পেছনে ভাষা সৈনিক সড়কে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
মহানগর বিএনপির সহসভাপতি অ্যাড. জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন সহসভাপতি ফখরুল ইসলাম মজনু, রিয়াজুল ইসলাম আজাদ, অ্যাড. রফিক আহমেদ, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সবুর খান সেন্টু, মহানগর যুবদলের সভাপতি ও নাসিক কাউন্সিলর মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ, মহানগর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক আওলাদ হোসেন, ইসমাইল হোসেন, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান জিয়া প্রমুখ। উপস্থিত ছিলেন বিএনপি নেতা অহিদুল হক খান ছক্কু, মাকিদ মোস্তাকিম শিপলুসহ মহানগর বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের শতাধিক নেতা-কর্মী। সমাবেশ সঞ্চালনা করেন মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবু ইউসুফ খান।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, রণাঙ্গণে মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধ করে এই দেশ স্বাধীন করেছিল। মুক্তিযোদ্ধাদের নেতৃত্ব দিয়েছেন জিয়াউর রহমান। তিনি মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার ছিলেন। আওয়ামী লীগের নেতারা যখন ভারতে বসে ছিলেন তখন জিয়াউর রহমান দেশের মাটিতে বসে যুদ্ধ করেছেন। মুক্তিযুদ্ধে অবদান রাখায় তাকে বীর উত্তম খেতাব দেওয়া হয়। রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য সেই খেতাব বাতিল করতে চায় সরকার। যারা একজন মুক্তিযোদ্ধার খেতাব বাতিল করতে চায় তারা সবচেয়ে বড় রাজাকার। জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের খেতাব সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানান বিএনপি নেতারা। সরকারের উদ্দেশ্যে তারা বলেন, ‘এক মাঘে শীত যায় না। ক্ষমতায় কেউ চিরদিন থাকে না। ইতিহাস কাউকে ক্ষমা করে না। ইতিহাস ভুলে যাবেন না।’
খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে আব্দুস সবুর খান সেন্টু বলেন, ‘দেশের সবজায়গা মানুষ কিন্তু করোনার অজুহাতে স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখা হয়েছে। ছাত্রসমাজকে ধ্বংস করে দেওয়ার পায়তারা করতেছে এই সরকার। প্রতিনিয়ত লাখ লাখ টাকা দুর্নীতির মাধ্যমে বিদেশে পাচার হচ্ছে। মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করা হচ্ছে। প্রতিদিন ডিজিটাল আইনের মাধ্যমে সাংবাদিক-রাজনীতিবিদদের কারাগারে বন্দি করছে। জনতার নিকট জোর দাবি, আপনারা সর্বত্র প্রতিবাদ-প্রতিরোধ গড়ে তুলুন। তা না হলে এই সরকার অন্যায়-অত্যাচার করতেই থাকবে।’ গত ১৩ ফেব্রæয়ারি জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিএনপির প্রতিবাদ সমাবেশে পুলিশের লাঠিচার্জের ঘটনার নিন্দাও জানান মহানগর বিএনপির এই নেতা।
যুবদল নেতা মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ বলেন, ‘শহীদ জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে দল-মত, লবিং-গ্রæপিং বাদ দিয়ে আন্দোলন সংগ্রাম করার প্রত্যয় ব্যক্ত করছি। ফেরাউনের চেয়ে শক্তিশালী কেউ নাই এই দুনিয়ায়। ফেরাউনেরও পতন হয়েছে, এই স্বৈরাচারী সরকারেরও পতন হবে।’
সভাপতির বক্তব্যে অ্যাড. জাকির হোসেন বলেন, ‘জিয়াউর রহমানের কর্মের ফলেই তাকে বীর উত্তম খেতাব দেওয়া হয়েছিল। তার খেতাব ছিনিয়ে নিলে শেখ মুজিবুর রহমানেরও বিচার করতে হবে। আজকে মুক্তিযুদ্ধের কথা বলা শেখ হাসিনার দলে কয়জন মুক্তিযোদ্ধা আছে? আওয়ামী লীগ ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চাচ্ছে। দেশ আজ কীভাবে চলছে সেটা প্রতিবেদন হিসেবে তুলে ধরেছে আল জাজিরা টেলিভিশন। এটা দেখে সরকারের গাত্রদাহ শুরু হয়েছে। ভোটারবিহীন সরকারের উপর জনগণের কোনো আস্থা নাই। দেশের যেই অবস্থা শেখ হাসিনা করেছে তার বিচার এই দেশের জনগণই একদিন করবে। স্বৈরাচারের পতন হবে।’ দেশের সর্বস্তরের জনগণের ঐক্যবদ্ধ গণআন্দোলনই সরকারের পতন ঘটাতে পারবে বলে মন্তব্য করেন জাকির হোসেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।