Inqilab Logo

রোববার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

পরমাণু সমঝোতায় যুক্তরাষ্ট্র ফিরবে কী না এবিষয়ে ইরানের মাথা ব্যথা নেই : খামেনেয়ী

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৮ জানুয়ারি, ২০২১, ৯:৪৮ পিএম

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র পরমাণু সমঝোতায় ফিরবে কী না তা নিয়ে ইরানের কোনো মাথা ব্যথা নেই।১৯৭৮ সালে কোমে সংঘটিত অভ্যুত্থান কোনো আবেগ কিংবা উত্তেজনা ছিল না, এটি ছিল একটি ধর্মীয় অভ্যুত্থান। কোমের গণঅভ্যুত্থান বার্ষিকীতে তিনি বলেন, কোমের গণ অভ্যুত্থান ছিল মার্কিন বৃহৎ মূর্তির ওপর ইব্রাহিমি কুঠারের প্রথম আঘাত। খামেনেয়ী বলেন যারা মনে করে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক সৃষ্টি হলে ইরানের পরিস্থতির উন্নতি হবে তাদের উচিত বিপ্লব পূর্ববর্তীকালের ইরান-মার্কিন সম্পর্কের প্রতি দৃষ্টি দেওয়া। পশ্চিম এশিয়ায় অস্থিতিশীলতা জিইয়ে রাখার ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের স্বীকারোক্তির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ২০০৯ সালে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের অভ্যন্তরে যে পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চেয়েছিল ২০২১ সালে সেই পরিস্থিতি মার্কিন মুলুকেই ঘটেছে। -প্রেসটিভি

তিনি বলেন, ইরানের উপস্থিতিই এ অঞ্চলে স্থিতিশীলতা বয়ে আনবে। সিরিয়া ও ইরাকসহ এ অঞ্চলের বিভিন্ন দেশে তা প্রমাণ হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে পশ্চিম এশিয়ায় অস্থিতিশীলতার মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র সরকার তাদের স্বার্থ সুরক্ষিত দেখতে পায়, অবশ্য যদি তাদের পক্ষে সেরকম নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা সম্ভব হয়। যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান পরিস্থিতির প্রতি ইঙ্গিত করে সর্বোচ্চ নেতা বলেন, কোটি কোটি মার্কিন নাগরিক অভুক্ত, বেকার এবং গৃহহীন। এ পরিস্থিতিতে অবাক হবার কিছু নেই। অবাক হবার বিষয় হলো এখনও অনেকেই যুক্তরাষ্ট্রকে তাদের ক্বেবলা মানে। মার্কিন অবরোধ সম্পর্কে আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী বলেন ইরানের অর্থনীতিকে এমন শক্তিশালী করতে হবে যাতে রাজনৈতিক খেলার কোনো প্রভাব তার ওপর না পড়ে। তিনি বলেন, ইরানের সঙ্গে মার্কিন নেতৃত্বাধীন পরাশক্তিগুলোর বিরোধের কারণ হলো এ অঞ্চলে ইরানের উপস্থিতি এবং ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র শক্তিসহ প্রতিরক্ষা সক্ষমতা ইত্যাদি। এ কারণেই তারা ইরানের ওপর শত্রুতামূলকভাবে অন্যায় অবরোধ আরোপ করে রেখেছে। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা বলেন, পশ্চিমা ফ্রন্ট এবং ইরানের শত্রুদেরকেই ইরানের সঙ্গে তাদের বিশ্বাসঘাতকতাপূর্ণ এবং শত্রুতাপূর্ণ আচরণ অর্থাৎ অবরোধের পরিসমাপ্তি ঘটানোর পদক্ষেপ অবিলম্বে নিতে হবে। অবরোধ না তুলে যুক্তরাষ্ট্র যদি পরমাণু সমঝোতায় ফিরে আসে সেটা আমাদের জন্য ক্ষতির কারণ হবে।

মার্কিন নিষেধাজ্ঞা মোকাবেলায় ইরানের জাতীয় সংসদে ‘স্ট্র্যাটেজিক অ্যাকশন প্ল্যান’ নামে যে বিল পাস করা হয়েছে তাকে সঠিক, সম্পূর্ণ যৌক্তিক এবং বুদ্ধিবৃক্তিক সিদ্ধান্ত বলে উল্লেখ করেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা বলেন, ২০ মাত্রার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরার কাজ শুরু হয়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্র পরমাণু সমঝোতায় কবে ফিরবে, আদৌ ফিরবে কি ফিরবে না-সে ব্যাপারে আমাদের কোনো তাড়াহুড়া কিংবা মাথাব্যথা নেই। করোনা ভ্যাকসিন সম্পর্কে খামেনেয়ী বলেন, ইরানে যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটিশ ভ্যাকসিন আমদানি নিষিদ্ধ। তিনি বলেন যুক্তরাষ্ট্র যদি ভ্যাকসিন তৈরি করতেই পারতো তাহলে তাদের দেশের অভ্যন্তরে একদিনে চার হাজার মানুষ মারা যাবার মতো বিপর্যয় সৃষ্টি হতো না। যুক্তরাষ্ট্রের ওপর আস্থা রাখা কঠিন ব্যাপার, তারা ভ্যাকসিন দেওয়ার নামে বিভিন্ন দেশের মানুষের ওপর এই ভ্যাকসিনের পরীক্ষাও চালাতে পারে। ফার্সি ১৩৫৬ সালের ১৯ দেই মোতাবেক ১৯৭৮ সালের ৯ জানুয়ারিতে কোমে শাহ বিরোধী এক গণ-অভ্যুত্থান হয়। ওই অভ্যুত্থানে শাহী জান্তার গুলিতে মারা যায় বহু মানুষ। ওই ঘটনার জের ধরে অতি দ্রুত স্বৈরাচারী শাহের বিরুদ্ধে গণবিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে সমগ্র ইরানে । তার এক বছর পর গণবিক্ষোভের মুখে ইসলামী বিপ্লব সফল হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইরান


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ