বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
বগুড়ার বিভিন্ন পৌরসভার আসন্ন নির্বাচণে দলীয় মনোনয়ন নিয়ে বিএনপিতে তীব্র অসন্তোষ ও অস্থিরতা বিরাজ করছে বলে দলীয় সুত্রে জানা গেছে । নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ি পৌর নির্বাচনের প্রথম ধাপে বগুড়ায় কোনো নির্বাচন হচ্ছেনা ।
২য় ধাপে আগামী ১৬ জানুয়ারি বগুড়ার সারিয়াকান্দি,শেরপুর ও সান্তাহার এবং তৃতীয় ধাপে ৩০ জানুয়ারি কাহালু পৌরসভায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে । এই ৩ পৌরসভাতেই দলের মনোনয়ন নিয়ে দল সংস্লিষ্টদের মতামতের বাইরে দলের জেলা আহ্বায়ক এবং দলীয় এমপির অভিলাষ অনুযায়ি মনোনয়ন দেওয়ার প্রক্রিয়া নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে অসন্তোষ ও ক্ষোভ । দলীয় কর্মিদের শংকা মনোনয়ন নিয়ে সৃষ্ট ক্ষোভ ও অসন্তোষ ভোটের ফলাফলে বিরুপ প্রভাব ফেলতে পারে
দলীয় সুত্রে জানা যায় , আগামী ১৬ জানুয়ারী অনুষ্ঠিতব্য সারিয়াকান্দি পৌরসভা নির্বাচনে এবার দলে অনেক যোগ্য প্রার্থী থাকা সত্বেও দলের জেলা আহ্বায়ক ও বগুড়া সদও আসনের সংসদ সদস্য জিএম সিরাজের ব্যক্তিগত অভিপ্রায়ে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে সারিয়াকান্দি পৌরসভার সাবেক মেয়র মরহুম টিপু সুলতানের বিধাব পতœী সাবিনা ইয়াসমিন বেবিকে। এই মনোনয়নের ক্ষেত্রে জিএম সিরাজ তার ব্যক্তি অভিপ্রায় চরিতার্থ করতে সারিয়াকান্দি পৌর কমিটির আহ্বায়ক ইকবাল কবীর পলাশ সহ এই কমিটির সুপার ফাইভ সদস্যের কাছে স্বাক্ষর নিয়েছেন জোর করে । এর জেরে ইকবাল কবীর পলাশ দলের মহাসচিব মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কাছে লিখিত ও মৌখিক অভিযোগ দিয়েছেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন ।
অনেকটা একই প্রক্রিয়া অনুসরন করে শেরপুর পৌরসভায় বিএনপির প্রার্থী করা হয়েছে স্বাধীন কুমার
কুন্ডুকে । প্রতিবাদে এখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন ,উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র জানে আলম খোকা । সিট হারানোর শংকায় এখন বগুড়া জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ জানে আলম খোকাকে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াবার জন্য অনুরোধের পাশাপাশি চাপ প্রয়োগের আহ্বান জানাচ্ছেন বলে খোকার পারিবারিক সুত্র নিশ্চিত করেছেন ।
এদিকে সান্তাহার পৌরসভায় এবারও বিএনপির প্রার্থী করা হয়েছে বর্তমান মেয়র তোফাজ্জল হোসেন ভুট্টকে । মজার হচ্ছে এবারের এই নির্বাচনে যিনি আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পেয়েছেন সেই আশরাফুল ইসলাম মন্টু বিএনপি প্রার্থীর অতি ঘনিষ্ট বন্ধু । তাছাড়া এরা দু’জনই একটি জোড়া হত্যা মামলার আসামী । বিষয়টি নিয়ে সান্তাহার পৌরসভায় চলছে মুখরোচক আলোচনা ও সমালোচনা ।
অন্যদিকে আগামী ৩০ জানুয়ারী অনুষ্ঠিতব্য বগুড়ার কাহালু পৌরসভার নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী মনোনয়নের লক্ষ্যে স্থানীয় বিএনপি দলীয় এমপি মোঃ মোশারফ হোসেন কাহালু পৌর কমিটির আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন বাদল, ৪ নম্বর সদস্য হাফিজার রহমান বাবু ও আব্দুল মান্নান ওরফে ভাটা মান্নানের সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে ভাটা মান্নানকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়ার প্রক্রিয়া চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই কমিটিরই যুগ্ম আহ্বায়ক ও কাহালু পৌরসভার বর্তমান কাউন্সিলর এবং দলীয় মনোনয়ন পেতে ইচ্ছুক ফেরদৌস আলম এবং ১ নম্বর সদস্য আনিছার রহমান বলেছেন তারা এমপি মোশারফকে সাদা কাগজে স্বাক্ষর দিতে রাজী না হওয়ায় তিনি মনোক্ষুন্ন হয়েছেন । ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কাহালু পৌর বিএনপির ১নম্বর সদস্য আনিছার রহমান বলেন, স্থানীয় নেতা কর্মিদের মতামতের বাইরে মনোনয়ন দেওয়ায় অতীতে কাহালু পৌরসভায় আওয়ামীলীগ জয় পেয়েছে । এবার তার পুনরাবৃত্তি হোক আমরা তা’ চাইনা । ঘটনা সম্পর্কে জানতে চেয়ে ঢাকায় অবস্থানকারি এমপি মোশারফের মোবাইলে বারবার রিং করা হলেও উরেøখ্য তিনি রিসিভ করেননি ।
উল্লেখ্য বিএনপি নেতা আব্দুল মান্নান ওরফে ভাটা মান্নানে ইটভাটায় মুক্তিপনের দাবিতে অপহ্যত স্কুল ছাত্র নাইমের পোড়া লাশ উদ্ধার হওয়ায় এবং এই মামলার আসামী হিসেবে তিনি ও তার ছেলে গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে এলাকায় তিনি ভাটা মান্নান নামে কুখ্যতি অর্জন করেন । এছাড়া আখি নামের এক কন্যা শিশু ধর্ষন ও হত্যা মামলারও তিনি আসামি বলে জানা যায় ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।