নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ড্রয়ে জুভেন্টাস ও বার্সেলোনা একই গ্রæপে পড়ার পর থেকেই ফুটবলপ্রেমীদের সব মনোযোগ ঘিরে ছিল এই দুই দলের মুখোমুখি লড়াই। যার মূল আকর্ষণ লিওনেল মেসি ও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর দ্বৈরথ। ২০১৮ সালে রিয়াল মাদ্রিদ ছেড়ে রোনালদো জুভেন্টাসে পাড়ি জমানোর পর থেকে গতপরশু রাতের আগে এই দুই তারকার লড়াই দেখেনি বিশ্ব। দীর্ঘ আড়াই বছরের প্রতীক্ষা শেষের মঞ্চে প্রত্যাশিত রূপে নিজেকে মেলে ধরলেন পর্তুগিজ তারকা, পারলেন না বার্সেলোনা অধিনায়ক। ফুটবলে সময়ের সবচেয়ে বড় দুই তারকার ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সের পার্থক্যই ফল গড়ে দিয়েছে ম্যাচের; বার্সেলোনাকে তাদেরই মাঠে ৩-০ গোলে হারিয়ে দেয় জুভেন্টাস।
ইউরোপ সেরার মঞ্চে এই হাইভোল্টেজ লড়াইয়ের প্রথম পর্ব হতে পারতো গত অক্টোবরেই। কিন্তু কোভিড-১৯ পজিটিভ হওয়ায় সেই ম্যাচে খেলতে পারেননি রোনালদো। জুভেন্টাসের মাঠে সেদিন দলের ২-০ ব্যবধানের জয়ে যোগ করা সময়ে পেনাল্টি থেকে দলের দ্বিতীয় গোলটি করেছিলেন মেসি। তাই ফুটবল বিশ্বের নজর আটকে ছিল ক্যাম্প ন্যুয়ের এই লড়াইয়ে। সুস্থ হয়ে রোনালদো মাঠে ফিরেছেন আগেই। সা¤প্রতিক সময়ে তার পায়ে ও শরীরে আগের সেই ক্ষিপ্রতাও কিছুটা চোখে পড়ে, গত কয়েকটি ম্যাচে পার্থক্যও গড়ে দেন তিনি। বার্সেলোনার বিপক্ষে সেভাবেই নিজেকে মেলে ধরলেন পাঁচবারের বর্ষসেরা ফুটবলার। পেনাল্টি থেকে দুটি গোল করেন রোনালদো, যার প্রথমটি ম্যাচের শুরুর দিকে দ্রæত ডি-বক্সে ঢুকে তিনি নিজেই আদায় করে নিয়েছিলেন। তার নৈপুণ্যে ম্যাচটি জিতে ‘জি’ গ্রæপের সেরা হয়ে নকআউট পর্বে পা দিয়েছে জুভেন্টাস।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে বার্সেলোনার বিপক্ষে এদিনই প্রথম জালের দেখা পান রোনালদো। তবে, সব প্রতিযোগিতা মিলে কাতালান দলটির বিপক্ষে তার গোলসংখ্যা অসাধারণ; এই দুটি নিয়ে ৩১ ম্যাচে হলো ২০ গোল। সবশেষ লড়াইয়ে অবশ্য শুধু তার গোল দুটোই নজর কাড়েনি। বল পায়ে রাখার দিক থেকে এগিয়ে ছিলেন লিওনেল মেসি, সুযোগও বেশি পান ও তৈরি করেন তিনি; কিন্তু ম্যাচের শুরু থেকে ৩৫ বছর বয়সী রোনালদোর গতি আলাদা করে নজর কেড়েছে। তাতে বার্সেলোনার ধীর রক্ষণভাগকে ভালোই ভোগাতে পেরেছেন তিনি।
গুরুত্বপ‚র্ণ এই ম্যাচে রোনালদো কতটা কার্যকর ছিলেন, সেটা সবচেয়ে ভালো উপায়ে তুলে ধরা যেতে পারে শেষের একটি ঘটনায়। ৩-০ গোলে এগিয়ে দল সহজ জয়ের পথে, কিন্তু রোনালদো ছিলেন শুরুর সেই মনোভাবেই। আক্রমণে ওঠা মেসির পিছু নেন তিনি, নিজেদের ডি-বক্সে আর্জেন্টাইন তারকার থেকে বল কেড়ে নিয়ে দলের পাল্টা আক্রমণে নেতৃত্বও দেন। সা¤প্রতিক সময়ে নিজেকে সেরা রূপে মেলে ধরতে লড়াই করে যাওয়া মেসিও কম চেষ্টা করেননি। দলের দিকহারা আক্রমণভাগকে নেতৃত্ব দেওয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন তিনি, কিন্তু আশানুরূপ ফল মেলেনি কোনোবারই। বেশ কয়েকবার দ‚র থেকে প্রতিপক্ষের অভিজ্ঞ গোলরক্ষক জিয়ানলুইজি বুফনের পরীক্ষাও নিয়েছেন তিনি। গোলের উদ্দেশে মোট ১১টি শট ছিল তার, এর একটিও জালে যায়নি।
উত্তেজনার আবহ যতটা ছিল, তার পুরোটাই ম‚লত ছিল এই দুজনকে ঘিরেই। সময়ের দুই সেরা ফুটবল তারকার দ্বৈরথ বলে কথা! তাতে শেষ হাসি হেসেছেন জুভেন্টাসের পর্তুগিজ ফরোয়ার্ড রোনালদো। বার্সেলোনার আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড মেসিকে মাঠ ছাড়তে হয়েছে একরাশ হতাশা নিয়ে। ম্যাচশেষে অবশ্য প্রতিদ্ব›িদ্বতার নয়, দুজনের মধ্যকার বন্ধুত্বপ‚র্ণ সম্পর্কের উপরই জোর দিয়েছেন রোনালদো।
আড়াই বছর পর মুখোমুখি লড়াইয়ে রোনালদো জিতেছেন, মেসি হেরেছেন। তবে ম্যাচের পর স্প্যানিশ গণমাধ্যম মোভিস্টারকে জুভেন্টাস তারকা বলেছেন, মেসিকে কখনোই প্রতিদ্ব›দ্বী ভাবেননি তিনি, ‘মেসির সঙ্গে আমার সম্পর্কটা বরাবরই সৌহার্দ্যপ‚র্ণ। তার সঙ্গে ১২, ১৩ কিংবা ১৪ বছর ধরে আমি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে পুরস্কার ভাগাভাগি করেছি। আমি কখনোই তাকে প্রতিদ্ব›দ্বী হিসেবে দেখিনি। সে সবসময়ই দলের জন্য সেরাটা করতে চায়। আমিও একই কাজ করি। তার সঙ্গে আমার সম্পর্ক খুবই ভালো।’ তাহলে সময়ের সেরা ফুটবলার বেছে নেওয়া নিয়ে কেন এত প্রতিদ্বন্দ্বিদ্বতা? পাঁচবারের ব্যালন ডি’অর জয়ী তারকা দিয়েছেন ব্যাখ্যা, ‘কিন্তু আমরা জানি যে, গণমাধ্যমের স্বার্থে, রোমাঞ্চের স্বার্থে ফুটবলে একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতার প্রয়োজন পড়ে। কিন্তু তার ও আমার মধ্যে বোঝাপড়াটা খুবই ভালো। আমি সবসময় তাকে একইভাবে দেখে এসেছি।’
দুর্দান্ত জয়ের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে তীব্র উচ্ছ¡াসও প্রকাশ করেছেন রোনালদো, ‘স্পেন ও কাতালুয়ানিয়ায় ফেরাটা সবসময়ই দারুণ ব্যাপার। আমার মুখোমুখি হওয়া দলগুলোর মধ্যে অন্যতম শক্তিশালী একটির বিপক্ষে ন্যু ক্যাম্পে খেলা সবসময়ই কঠিন। আজ (পরশু) আমরা চ্যাম্পিয়ন দল ছিলাম। একটি সত্যিকারের শক্তিশালী ও একতাবদ্ধ পরিবার! এভাবে খেললে মৌসুমের শেষ পর্যন্ত আমাদের ভয় পাওয়ার কিছু নেই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।