বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
মৃত্যুর আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া এক ভিডিও বার্তায় হাফেজ তৌহিদুল ইসলাম রাতে ঘুমানোর মধ্যে তাকে ছাত্রলীগ মেরে ফেলতে পারে বলে আশংঙ্কা প্রকাশ করেন। ফলে তাকে হত্যার যে দাবী স্বজনরা করছেন তা আরো জোরালো হয়ে ওঠে।
জানায়ায়, চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় নিহত হাফেজ তৌহিদুল ইসলাম আত্নহত্যা করেননি বরং তাকে ওই রাতে রুমে বেঁধে নির্যাতন করে ঠান্ডা মাথায় পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে বলে দাবী করেছেন তার স্বজনরা।
বার আউলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ছাত্রলীগ নেতা আরিফুল ইসলামের নেতৃত্বে ১০/১২ জন যুবক শিশু বৎলকারের অভিযোগে রুমের মধ্যে বেঁধে তাকে মারধর করে। এলোপাতাড়ি মারধরের ফলে তৌহিদ মারা গেলে ঝুলিয়ে রেখে আত্নহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা করছে বলে দাবী তার স্বজনদের।
চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় আল-কুরআনুল হাকীম আদর্শ হেফজখানার শিক্ষক মোঃ তৌহিদুল ইসলামের (২২) ঝুলন্ত লাশ গত ২১ অক্টোবর, বুধবার সকালে বার আউলিয়া ডিগ্রী কলেজের সামনে ইলিয়াস বিল্ডিং থেকে উদ্ধার করে থানা পুলিশ। নিহত তৌহিদ চুনতি ইউনিয়নের শমসু মেম্বার পাড়ার শামসুল ইসলামের পুত্র ।
মৃত্যুর পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে ১ মিনিট ১৪ সেকেন্ডের একটি ভিডিও বার্তা ভাইরাল হয়। ভিডিও বার্তায় নিহত হাফেজ তাওহীদুল ইসলাম ঘুমের মধ্যে তাকে মেরেও ফেলতে পারে বলে আশংঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, “আসসালামু আলাইকুম। শেষ বিদায়। আপনারা আমাকে ক্ষমা করে দিবেন। আমার আব্বা আম্মার জন্য দোয়া করবেন। আহারে ! ছাত্রলীগ। এদেরকে আপনারা দেখবেন। এই নাস্তিকগুলো হুজুরদের টুপিকে দেখতে পারে না। এরা এখানে আসছিলো জুতা নিয়ে। কতক্ষণ ধরে আমাদেরকে বন্দি করে রাখছে দুইজনকে। হুজুর ওখানে ঘুমাচ্ছে, আমি এখানে। আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন। শেষ বিদায়। ওরা কিছুক্ষণ পরপর দরজায় বারি (ধাক্কা) দেয় আমাদেরকে পিঠানোর জন্য। আমরা দুইজন এইখানে আটকে আছি। আমাদেরকে বেঁধে রাখছে যে। আপনারা একটু দেখবেন। হয়তো রাতে ঘুমানোর মধ্যে মেরেও ফেলতে পারে।”
ওই হেফজখানার শিক্ষক মোঃ ইসমাঈল জানান, ঘটনার দিন রাত ১০টার দিকে বলৎকারের অভিযোগ এনে তৌহিদকে স্থানীয় ১০/১২ জন যুবক অপমান ও মারধর করে। মৃত্যুর আগে হাফেজ তাওহীদুল ইসলাম ও তাকে রুমে তালা মেরে আটকে রাখে বলে তিনি জানান।
এব্যাপারে তৌহিদের চাচা মোহাম্মদ আলী জানান, বার আউলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ছাত্রলীগ নেতা আরিফুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল যুবক বলৎকারের অভিযোগ এনে তৌহিদকে মারধর করে। ঝুলন্ত অবস্থা থেকে লাশ নামানোর সময় আমি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলাম। কিন্তু তৌহিদের মুখ ও চোখ স্বাভাবিক ছিল; আত্নহত্যা করার মতো কোন চিহ্ন তার চোখে মুখে ছিল না বলে তিনি জানান।
তৌহিদের বাবা শমসুল ইসলাম জানান, আমার ছেলে আত্নহত্যা করেনি। তাকে আরিফের নেতৃত্বে হত্যা করা হয়েছে বলে তিনি দাবী করেন।
এব্যাপারে জানতে চাইলে ছাত্রলীগনেতা আরিফুল ইসলাম জানান, আমি হৈ চৈ শুনে ঘটনাস্থলে যাই। কিন্তু বলৎকার সংক্রান্ত বিষয় হওয়ায় তৎক্ষণাৎ চলে আসি। তৌহিদকে মারধরের ব্যাপারে তিনি জড়িত নন বলে জানান।
লোহাগাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) রাশেদুল ইসলাম জানান, লাশের ময়না তদন্তের রির্পোট এখনো আসেনি। রির্পোট আসার পর হত্যা না আত্নহত্যা জানা যাবে। রির্পোট আসার পর এব্যাপারে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ঘটনায় আত্নহত্যা প্ররোচনা মামলা রুজু করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।