নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
এবার আর প্রতিপক্ষের সামনে নতজানু হতে হয়নি ডোমিনিক থিমকে। চতুর্থবারে এসে সাফল্যকে ছুঁয়ে দেখার সুখকর অভিজ্ঞতা পেলেন অস্ট্রিয়ান তারকা। ইউএস ওপেনের ফাইনালে প্রথম দুই সেটে পিছিয়ে পড়েও অসাধারণ প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখলেন। জার্মানির আলেক্সান্দার জেভরেভকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো কোনো গ্র্যান্ড সø্যাম জিতলেন তিনি। গতপরশু রাতে নিউইয়র্কের ফ্লাশিং মিডোসে অনুষ্ঠিত হওয়া ম্যাচে হয়েছে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। শেষ পর্যন্ত দ্বিতীয় বাছাই থিম পঞ্চম বাছাই জেভরেভকে হারান ৩-২ সেটে। চার ঘণ্টা এক মিনিটের রোমাঞ্চকর ফাইনালে ২-৬, ৪-৬, ৬-৪, ৬-৩, ৭-৬ (৮-৬) গেমে জিতে চ্যাম্পিয়ন হন তিনি।
এবারের ইউএস ওপেনকে নতুন প্রজন্মের তারকা খুঁজে পাওয়ার আসরের তকমা দেওয়া যেতে পারে। কারণ, ছেলেদের এককে থিমই গ্র্যান্ড সø্যাম জেতা প্রথম খেলোয়াড়, যার জন্ম নব্বইয়ের দশকে। টেনিসের ‘বিগ ফোর’-এর (রজার ফেদেরার, রাফায়েল নাদাল, নোভাক জোকোভিচ ও অ্যান্ডি মারে) পরবর্তী প্রজন্মের সম্ভাব্য সেরাদের তালিকায় থাকছেন জেভরেভও।
২০১৬ সালে সুইজারল্যান্ডের স্ট্যান ভাভরিঙ্কা ইউএস ওপেনের শিরোপা জেতার পরের সবগুলো গ্র্যান্ড সø্যাম গিয়েছিল তিন কিংবদন্তি তারকা ফেদেরার, নাদাল ও জোকোভিচের ঝুলিতে। সেই ধারায় ছেদ টানলেন থিম। ওপেন যুগে ৫৫তম গ্র্যান্ড সø্যাম বিজয়ী তিনি। ২০১৪ সালের ইউএস ওপেনে ক্রোয়েশিয়ার মারিন সিলিচ সেরার মুকুট জেতার পর এই প্রথম নতুন কোনো গ্র্যান্ড সø্যাম চ্যাম্পিয়নের দেখা পেল টেনিস অঙ্গন।
এই ফাইনালের আগে থিম কিংবা জেভরেভ কারও নামের পাশে ছিল না কোনো গ্র্যান্ড সø্যাম। ২৭ বছর বয়সী থিম অবশ্য আগে তিনবার ফাইনালে উঠেছিলেন। কিন্তু প্রতিবারই তার স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল। ২০১৮ ও ২০১৯ সালে পরপর দুবার ফ্রেঞ্চ ওপেনের ফাইনালে ক্লে কোর্টের রাজা রাফায়েল নাদালের কাছে পরাস্ত হন তিনি। আর চলতি বছরের শুরুতে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের ফাইনালে ২-১ সেটে এগিয়ে গিয়েও নোভাক জোকোভিচকে দমাতে পারেননি।
অন্যদিকে, ২৩ বছরের তরুণ জেভরেভ প্রথমবারের মতো নেমেছিলেন কোনো গ্র্যান্ড সø্যামের ফাইনালে। শুরুর দুই সেট জিতে প্রথমবারেই লক্ষ্য প‚রণের জোরালো সম্ভাবনা জাগিয়ে তুলেছিলেন তিনি। পরের দুটি সেট হারলেও পঞ্চম সেটে এক পর্যায়ে ৫-৩ ব্যবধানে এগিয়েও গিয়েছিলেন। সেসময় আর একটি গেম পয়েন্ট পেলেই শিরোপা উঠত তার হাতে! কিন্তু বিধি বাম। ঘুরে দাঁড়িয়ে ম্যাচ টাইব্রেকারে নিয়ে গেলেন থিম। নতুন করে ছন্দ খুঁজে পেয়ে হাসলেন শেষ হাসি।
১৬ বছর পর কোনো গ্র্যান্ড সø্যাম ফাইনালের প্রথম দুই সেট হেরেও চ্যাম্পিয়ন হওয়ার নজির স্থাপন করলেন থিম। সবশেষ এই কৃতিত্ব দেখিয়েছিলেন আর্জেন্টিনার গ্যাস্তন গাউদিও। ২০০৪ সালের ফ্রেঞ্চ ওপেনের ফাইনালে। আর ইউএস ওপেনে এমন ঘটনা শেষ কবে ঘটেছিল তা জানতে আমাদের ফিরে যেতে হবে ৭১ বছর পেছনে! ১৯৪৯ আসরে এমন প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের পাঞ্চো গঞ্জালেস।
সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করা জেভরেভ ম্যাচ শেষে আবেগ ধরে রাখতে পারেননি। ফাইনাল পরবর্তী পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে চোখের পানিতে ভাসেন তিনি। বছরের শুরুর দিকে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের সেমি-ফাইনালে টিমের কাছে হেরেছিলেন জেভেরেভ। এবার নিউ ইয়র্কেও হারের পর হতাশা ঝরল তার কণ্ঠে, ‘কঠিন একটা লড়াই শেষ হলো। তুমি (টিম) আরও কিছু ভুল করলে আমি ট্রফিটা তুলে ধরতে পারতাম।’ তীরে এসে তরী ডোবার অনুভ‚তি কেমন তা ভালোই জানা থিমের। তাই তো শিরোপা হাতে তোলার আগে বললেন, ‘আজ হয়তো দুজন বিজয়ী থাকতে পারত। আমরা দুজনেই এটার যোগ্য ছিলাম।’
করোনাভাইরাসের কারণে দর্শকশ‚ন্য এই টুর্নামেন্টে অংশ নেননি গত আসরের চ্যাম্পিয়ন রাফায়েল নাদাল। চোটের কারণে খেলেননি রেকর্ড ২০ গ্র্যান্ড সø্যামজয়ী রজার ফেদেরার। ছিলেন না তার স্বদেশী স্তানিসøাস ভাভরিঙ্কাও। দুর্ঘটনাবশত লাইন জাজকে বল দিয়ে আঘাত করে টুর্নামেন্টের মাঝপথে ছিটকে যান নোভাক জোকোভিচ। আগের দিন আসরের নারী এককে বেলারুশের ভিক্টোরিয়া আজারেঙ্কাকে হারিয়ে শিরোপা জিতেন জাপানের নাওমি ওসাকা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।