নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
আজ থেকে ২৩ বছর আগে বর্ণিল শুরুটা হয়েছিল এই নিউ ইয়র্কেই। ১৯৯৯ সালে ইউএস ওপেনে ক্যারিয়ারের প্রথম গ্র্যান্ড সø্যাম জিতে টেনিসের আঙিনায় নিজের আগমনী বার্তা দিয়েছিলেন সেরেনা উইলিয়ামস। সময়ের পরিক্রমায় নিজেকে তিনি নিয়ে গেছেন কিংবদন্তিদের কাতারে। তার মোট মেজরের সংখ্যাও এখন ২৩। বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারের শেষটাও হতে যাচ্ছে সেই নিউ ইয়র্কেই। ইউএস ওপেন দিয়ে টেনিসকে বিদায় বলতে যাচ্ছেন টেনিসের কৃষ্ণকলি।
আর্থার অ্যাশ স্টেডিয়ামে বিদায়ী আয়োজনের মঞ্চও ছিল প্রস্তুত। তবে বাংলাদেশ সময় গতকাল ভোরে হওয়া প্রথম রাউন্ডে ম্যাচটি দাপট দেখিয়ে জিতেছেন সেরেনা। মন্টেনেগ্রোর দানকা কোভিনিচিকে ৬-৩, ৬-৩ গেমে হারান ঘরের মেয়ে। আপাতত তাই সেই বিদায়ী আয়োজন জমা থাকল আরেক দিনের জন্য! পাশাপাশি এই আসর দিয়েই তার শেষ হবে কিনা, সেই প্রশ্নও এখন জাগছে। সেরেনার কথার সূত্রেই জেগে উঠছে সংশয়টুকু। একক ছাড়াও বড় বোন ভেনাস উইলিয়ামসের সঙ্গে জুটি বেঁধে টুর্নামেন্টের দ্বৈতেও খেলবেন সেরেনা।
সেরেনার বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারকে উদযাপনের দারুণ এক আয়োজন ছিল ম্যাচের পর। ৪০ বছর বয়সী তারকার ঝকমকে ক্যারিয়ার, অসংখ্য অর্জন, প্রাপ্তি, রেকর্ড, কীর্তি, সবকিছু দিয়ে সাজানো একটি ভিডিও চিত্র দেখানো হয়। এই আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন সেরেনার মা, স্বামী, সন্তান, বোনসহ পরিবার ও বন্ধুদের বেশ কজন। ছিলেন টেনিসের জীবন্ত কিংবদন্তীরা। এর বাইরেও ছিলেন সাবেক মার্কিণ প্রেসিডন্ট বিল ক্লিনটনও। সবমিলিয়ে আর্থার অ্যাশ স্টেডিয়ামে ছিল রেকর্ড দর্শক!
কিছুদিন আগে ‘ভোগ’ ম্যাগাজিনে লেখা একটি কলামে সেরেনা ইঙ্গিত দেন, শিগগিরই বিদায় নেবেন টেনিস কোর্ট থেকে। সরাসরি ইউএস ওপেনের কথা না বললেও তখন ধরেই নেওয়া হয়, এই আসর দিয়েই তিনি বিদায় নেবেন কোর্ট থেকে। ইউএস ওপেনের প্রথম রাউন্ডে হেরে গেলে তার সিঙ্গেলস ক্যারিয়ারের সমাপ্তি হবে ধরে নিয়ে এই ম্যাচ ঘিরে কৌত‚হল ছিল অনেক। তার ক্যারিয়ার ঘিরে আয়োজনেও সেসবেরই প্রকাশ। তবে তার কথায় আভাস ভিন্ন কিছুর, ‘ব্যাপারটা এখনও খুব কঠিন, কারণ এখনও পর্যন্ত এখানে (কোর্টে) থাকতে দারুণ ভালোবাসি আমি। যত টুর্নামেন্ট খেলছি, যতই মনে হচ্ছে এটিই আমার আসল জায়গা।’
এখানে ইঙ্গিত খেলা চালিয়ে যাওয়ার। তবে পরের কথায়ই আবার থেমে যাওয়ার সুর, ‘তবে আমার জন্য এখনই সময় পরবর্তী কিছুতে নিজেকে মেলে ধরার।’ এরপর তার কাছে নির্দিষ্ট করে জানতে চাওয়া হয় ইউএস ওপেনই কি তার শেষ? সেরেনা তখন রহস্য রেখে দিলেন আবারও, ‘এটা নিয়ে আমি আসলে ঠিক নিশ্চিত নই... আপাতত অস্পষ্টই থাকুক, কারণ কে জানে (কী হবে)!’
পায়ের চোটের কারণে গত বছরের ইউএস ওপেনে সেরেনা খেলতে পারেননি। এক বছর টেনিসের বাইরে থাকার পর গত জুনে উইম্বলডন দিয়ে কোর্টে ফেরেন তিনি। যদিও প্রথম রাউন্ড থেকে বিদায় নিতে হয় তাকে।
সেরেনা সবশেষ গ্র্যান্ড সø্যাম জিতেছেন ২০১৭ সালে। এরপর থেকে তিনি কোনো গ্র্যান্ড সø্যামে পা রাখলেই শুরু হয়, তার মার্গারেট কোর্টের ২৪ গ্র্যান্ড সø্যাম জয়ের রেকর্ড ছোঁয়ার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা, ক্ষণগণনা। কিন্তু সেই অপেক্ষার আর শেষ হয়নি। ২০১৭ সালে মেয়ে অলিম্পিয়ার জন্মের পর চারটি মেজরের ফাইনালে উঠে রেকর্ড ছোঁয়ার কাছাকাছি গিয়েছিলেন তিনি। যেখানে ক্যারিয়ারের ইতি টানতে যাচ্ছেন, সেই ইউএস ওপেন সেরেনা জিতেছেন মোট ছয়বার। এছাড়া সাতবার অস্ট্রেলিয়ান ওপেন, তিনবার ফরাসি ওপেন ও সাতবার জিতেছেন উইম্বলডন।
একটা সময় ছিল যখন গ্র্যান্ড সø্যামের প্রথম রাউন্ডে সেরেনার মুখোমুখি হওয়া টেনিসের সবচেয়ে কঠিন কাজগুলোর একটি। তবে সেরেনার সা¤প্রতিক ফর্ম পরতির দিকে। অবসরের পরিকল্পনা জানানোর পর খেলা প্রতিটি ম্যাচেই যে হেরেছেন সেরেনা! টরন্টোতে বেলিন্ডা বেনচিচের কাছে তিনি হারেন সরাসরি সেটে। এরপর সিনসিনাটি ওপেনে ইউএস ওপেন চ্যাম্পিয়ন এমা রাডুকানুর কাছে হেরে যান ৬-৪, ৬-০ গেমে। এবার দেখা যাক শেষটা রাঙাতে পারেন কি-না সেরে-না!
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।