Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বেলারুশে চলছে সরকার পতনের আন্দোলন : মৃত্যু ১, গ্রেফতার ৬ হাজার

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৩ আগস্ট, ২০২০, ১২:৩৫ পিএম

সদ্য সমাপ্ত বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়ে উঠেছে পূর্ব ইউরোপের দেশ বেলারুশ। স্বাধীন পর্যবেক্ষকদের মতে, এ নির্বাচন মোটেও সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক হয়নি। এর ফলে প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কোর বিরুদ্ধে গত রবিবার থেকে বিক্ষোভ করছে দেশটির হাজার হাজার মানুষ। এমনকি প্রতিদ্বন্দ্বী প্রেসিডেন্ট প্রার্থী সভেৎলানা তিখানোভস্কায়াকেও দেশ ছাড়তে হয়েছে।
বিক্ষোভ দমনে স্বৈরাচারী লুকাশেঙ্কো সরকার অভূতপূর্ব বলপ্রয়োগ করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্লেষকরা। বিক্ষোভের ঘটনায় এ পর্যন্ত অন্তত একজন প্রাণ হারিয়েছেন, গ্রেফতার হয়েছেন ছয় হাজারেরও বেশি।
বেলারুশের বিতর্কিত নির্বাচনের ফলাফল বলছে, ৮০ দশমিক ২৩ শতাংশ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন ২৬ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা লুকাশেঙ্কো। অন্যদিকে, তার প্রধান বিরোধী সভেৎলানা তিখানোভস্কায়া পেয়েছেন মাত্র ৯ দশমিক ৯ শতাংশ ভোট।
অথচ জনসমর্থনের দিক থেকে বহুগুণে এগিয়ে রয়েছেন সভেৎলানা। তার সমর্থকদের দাবি, স্বৈরাচার লুকাশেঙ্কোকে ক্ষমতায় রাখতে নির্বাচনে ব্যাপক দুর্নীতি এবং জালিয়াতি করা হয়েছে।
অনেস্ট পিপল নামে একটি স্বাধীন পর্যবেক্ষক গ্রুপ জানিয়েছে, তাদের কাছে থাকা তথ্যমতে, সভেৎলানা অন্তত ৮০ শতাংশ ভোটকেন্দ্রে জয়লাভ করেছেন। এ কারণে অনেকেই এখন ভোট পুনর্গণনার দাবি জানিয়েছেন।
ভোটের ফলাফল প্রকাশের পর গত রবিবার থেকেই বেলারুশের রাস্তায় নেমে আসে দেশটির জনগণ। বিক্ষোভের প্রথম রাতেই গ্রেফতার করা হয় কয়েক হাজার মানুষকে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দেয় সরকার।
বুধবার বেলারুশের প্রেস অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, বিক্ষোভ চলাকালে অন্তত ৫০ সাংবাদিক আটক নাহয় আহত হয়েছেন।
নির্বাচনে কারচুপি ও ব্যাপক ধরপাকড়ের প্রেক্ষিতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্র বেলারুশের স্বৈরাচারী সরকারের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়ার পরিকল্পনা করছে। তবে রাশিয়া সমর্থন জানিয়েছে লুকাশেঙ্কোকে।
১৯৯৪ সাল থেকে ক্ষমতায় থাকা লুকাশেঙ্কো বিরোধীদলীয় সমর্থকদের ‘ভেড়া’ বলে মন্তব্য করে বলেছেন, বিরোধী সমর্থকদের বিদেশ থেকে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। দেশকে ধ্বংস করার কোনও সুযোগ দেয়া হবে না বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
তবে বিরোধীরা বলছেন ভিন্ন কথা। সভেৎলানা তিখানোভস্কায়া প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লুকাশেঙ্কোর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও মূলত তার স্বামী প্রার্থী হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তাকে আটক করে জেলে ঢোকানোর কারণে পরে প্রার্থী হন সভেৎলানা। কিন্তু তিনিও নিজ দেশে থাকতে পারেননি। গত সপ্তাহে দেশ ছাড়তে হয়েছে তাকে।
সভেৎলানার এক প্রতিনিধি জানিয়েছেন, তাদের নির্বাচনী প্রচারণা দলের একটি অংশকে জিম্মি করে রাখা হয়েছে। ফলে আর কোনও উপায় ছিল না সভেৎলানার সামনে। এদের মুক্ত করার উদ্দেশ্যেই দেশত্যাগ করেছেন তিনি।
সভেৎলানা তিখানোভস্কায়ার সন্তানেরা বর্তমানে পার্শ্ববর্তী দেশ লিথুনিয়ায় রয়েছেন। দেশটি বেলারুশ সংকটে মধ্যস্থতা করার চেষ্টা করছে। খবর বিবিসি, সিএনএন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বেলারুশ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ