বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
ঢাকার সাভারের আশুলিয়ায় গ্যাসের লিকেজ থেকে বিস্ফোরণে দগ্ধ হয়ে মা-বাবা ও শিশু সন্তান সহ একই পরিবারের তিন জনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে।
ঘটনাটি গত শনিবারের (৪ জুলাই) হলেও বিষয়টি আজ বুধবার প্রকাশ্যে আসে। বাড়ির মালিক ও প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে বিষয়টি ধামাচাঁপা দেওয়ার অভিযোগ উঠার পর পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
বুধবার দুপুরে নিহতের নিকট আত্মীয় আজিজুল ইসলাম একই পরিবারের তিনজনের মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করে বলেন, এর আগে গত ৪ জুলাই (শনিবার) ভোরে আশুলিয়ার দূর্গাপুর পূর্বচালা এলাকায় শহীদ হাজীর মালিকানাধীন দুই তলার বাড়ির নিচতলার ভাড়া দেওয়া কক্ষে এই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- আবুল কাশেম (২৮), তার স্ত্রী ফাতেমা বেগম (২২) ও ছয় বছরের মাদ্রাসা পড়ুয়া সন্তান আল-আমিন। তাদের বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল থানার চন্ডীপাশা গ্রামে। নিহত আবুল কাশেম স্থানীয় কন্টিনেন্টাল নামে একটি গার্মেন্টে কাজ করতেন। তার স্ত্রী একই এলাকার সাউদার্ন নামে অপর একটি তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিক।
আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সামিউল ইসলাম জানান, বিস্ফোরণে অগ্নিদগ্ধ হয়ে একই পরিবারের তিন জনের মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে আসলে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে তিনি ঘটনাস্থলে যান। তবে এর আগে ঘটনার দিন তাদের বিষয়টি জানানো হয়নি। কেন জানানো হয়নি সেটিও ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রাথমিক তদন্তে গ্যাস লাইনের লিকেজ থেকে বিস্ফোরণের ঘটনার বিষয়টি জানা গেলেও অধিকতর তদন্ত ছাড়া নিশ্চিত করে কিছুই বলা যাচ্ছে না। এছাড়া বাড়ির মালিক পলাতক থাকায় ওই বাড়িতে অবৈধ গ্যাস সংযোগ ছিল কি না সে ব্যাপারটিও নিশ্চিত নয়। তবে এঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
নিহতের প্রতিবেশী অটোচালক শহীদুল ইসলাম জানান, গত তিন মাস পূর্বে আবুল কাশেম পরিবার নিয়ে আশুলিয়ার দূর্গাপুর এলাকায় শহীদ হাজীর দুই তলা বাড়ির নিচতলার একটি কক্ষ ভাড়া নেয়। তারা উভয়ই গার্মেন্টে কাজ করত। গত শনিবার ভোরে গার্মেন্টে কাজে যাওয়ার জন্য ঘুম থেকে ওঠে তারা। এসময় রান্নার জন্য দিয়াশলাই জ্বালালে হঠাৎ বিকট শব্দে চারপাশ কেঁপে উঠে আগুন ধরে যায়। পরে তাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় আবুল কাশেম, তার স্ত্রী ফাতেমা ও সন্তান আল-আমিনকে দেখতে পায়। পরে তাদের উদ্ধার করে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে স্থানীয়রা।
নিহেরত মামা আজিজুল ইসলাম বলেন, ভাগিনা কাশেমসহ তার পুরো পরিবার অগ্নিদগ্ধ হয়েছে এমন খবরে ছুটে আসেন তিনি। কিন্তু ততক্ষণে তাদের একটি অটোরিকশায় তুলে হাসপাতালে প্রেরণ করা হচ্ছে বলে তিনি দেখতে পান। এরপরদিন রবিবার রাতেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কাশেমের শিশু সন্তান আল-আমিন মারা যায়।
তিনি আরো বলেন, এনাম মেডিকেলের চিকিৎসা ব্যয় বহন করা সম্ভব নয় চিন্তা করে অগ্নিদগ্ধ কাশেম ও তার স্ত্রীকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে রেফার্ড করান তারা। এসময় হাসপাতালে নেওয়ার পথে ভাগিনা কাশেমেরও মৃত্যু হয়। পরে ফাতেমার অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ন ইন্সটিটিউটে ভর্তি করা হলে মঙ্গলবার বিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেও মারা যায়।
তবে বাড়ির মালিক পলাতক থাকায় তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।