মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
মধ্যপ্রাচ্যের আরব দেশগুলো গাড়ি চালানো, ঘরদোর পরিষ্কার রাখা এবং শিশু ও প্রবীণ স্বজনদের যত্ন নেওয়ার জন্য এশিয়া ও আফ্রিকা থেকে আসা লাখ লাখ প্রবাসী গৃহকর্মীর উপর নির্ভর করে। কিন্তু তাদেরকে স্বল্প বেতন দিয়ে এমন পরিস্থিতিতে রাখা হচ্ছে মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলি যেটাকে দীর্ঘদিন ধরে ‘শোষণ ও নির্যাতনমূলক’ হিসেবে বর্ণনা করে আসছেন।
সউদী আরবে গৃহকর্মী হিসেবে কর্মরত ৯ আফ্রিকান নারী করোনা ভাইরাস লকডাউনের কারণে যখন চাকরি হারালেন, তখন নিয়োগকারী দালাল কয়েকটা পাতলা মাদুর দিয়ে তাদের একটি খালি ঘরে তালাবদ্ধ রেখেছিল। কেউ কেউ মার্চ থেকে সেখানে আছেন। একজন ছয় মাসের গর্ভবতী হলেও কোনো যত্ন পাচ্ছেন না। আরেকজন মানসিকভাবে এমন বিপর্যস্ত যে নিজের কাপড় ছিঁড়ে ফেললে তাকে দেয়ালের সঙ্গে শেকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়।
ওই নারীরা বলছেন, তাদের দিনে একবার খাবার দেয়া হয়। দেশে ফিরে যাওয়া তো দূরের কথা তারা সেখান থেকে কখন বের হতে পারবেন সেটাই জানেন না। তাদের মধ্যে কেনিয়া থেকে আসা অ্যাপিসাকির সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে নিউইয়র্ক টাইমসের কথা হয়। তিনি বলেন, ‘আমরা সবাই আতঙ্কিত। এখানকার পরিবেশ মোটেই ভালো না। কেউ আমাদের আওয়াজ শুনতে পায় না।’
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) হিসেবে, লেবানন ও জর্ডানসহ অন্যান্য আরব অঞ্চলে যে পরিমাণ বিদেশি গৃহকর্মী ও আয়া কাজ করেন, তা বিশ্বের অন্য কোনো অঞ্চলের চেয়ে বেশি। তাদের বেশির ভাগ নিয়োগ দালালদের মাধ্যমে এবং বাধ্যতামূলক আবাসিকতাসহ স্পন্সরশিপ ব্যবস্থার আওতায় হয় বলে নিয়োগকর্তার ব্যাপক ক্ষমতা প্রয়োগের সুযোগ থাকে। আবাসিকতা না হারিয়ে চাকরি ছাড়তে পারে না বা নতুন চাকরিতে চলে যেতে পারে না বা নিয়োগকর্তার অনুমতি ছাড়া দেশও ছাড়তে পারে না। মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, অনেক নিয়োগকর্তা শ্রমিকের পাসপোর্ট বাজেয়াপ্ত করেন এবং কোনো ছুটি দেন না। কেউ কেউ কর্মীদের মোবাইল ফোন বা ইন্টারনেট ব্যবহার করতে দেন না। শারীরিক ও যৌন নির্যাতনের ঘটনা তো খুবই সচরাচর।
মাইগ্রান্ট-রাইটস নামে একটি অধিকার গোষ্ঠীর সহযোগী সম্পাদক বাণী সরস্বতী বলেন, ‘সপ্তাহের সাত দিন ২৪ ঘণ্টাই তারা আপনার নজরদারি করছেন। তাহলে কল্পনা করুন, নিয়োগকর্তাদের কী পরিমাণ নির্যাতন!’
কেনিয়ার একটি গৃহকর্মীদের সংগঠনের চেয়ারম্যান রুথ খাকমে বলেন, সউদী আরবে কয়েক ডজন কেনীয় নারী ‘পর্যাপ্ত খাবার ও বিশ্রাম না থাকা, সহিংসতা, এমনকি হুমকি, আটকে রাখা ও নজরদারির অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন, ‘আপনাকে ফোন ব্যবহার করতে দেয়া হচ্ছে না। সুতরাং লড়াই করছেন, সম্পূর্ণ একা। আপনার কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই।’
গত ফেব্রুয়ারিতে কাজের সন্ধানে পর্যটক ভিসা নিয়ে কেনিয়া থেকে দুবাই আসেন ২৫ বছরবয়সী কেল্লে জোকি। কিন্তু এসেই বুঝতে পারেন যে তিনি গর্ভবতী। এখন তিনি একটি জনাকীর্ণ ডরমিটরিতে ঘুমান। তার মাতৃত্বকালীন কোনো যত্ন নেই; ফিরে যাওয়ার জন্য ৪০০ ডলার বিমান ভাড়াও নেই। ফোন সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমি সাত মাসের গর্ভবতী; এখানে বাচ্চাকে কিভাবে রাখব? আটকে গেছি। আমার সত্যিই সাহায্য দরকার।’
সউদী আরবের রাজধানী রিয়াদে আরো ৮ নারীর সঙ্গে আটকে পড়া অ্যাপিসাকি আরো বিপদে পড়েছিলেন গত মাসে যখন কয়েক মাসের বেতন পরিশোধ না করে তাকে ছাঁটাই করা হয় এবং দালালের কাছে ফিরে যেতে হয়। তাকে কাজ হারানো কেনিয়া ও উগান্ডার অন্যদের সঙ্গে আটকে রাখা হয়েছিল। দালাল তাদের পাসপোর্ট কেড়ে নেয়া ও লকডাউনের কারণে বাড়ি ফেরার কোনো উপায় ছিল না। অ্যাপিসাকি বলেন, সবাই মিলে একটি টয়লেট ব্যবহার করেন, সিংকে কাপর কাচেন। তারা একবেলা রান্না করেন ও দালালরা প্রতিদিন খাবার ছুড়ে দিয়ে যান।
ওমানে কর্মরত ৩৩ বছর বয়সী উগান্ডান জাস্টিন মুকিসা বলেন, মহামারীতে তার ১৮০ ডলারের মাসিক বেতন কেটে অর্ধেক করা হয়েছে। তার কাজের চাপ বেড়ে গেছে এবং নিয়োগকর্তাও বৈরী হয়ে উঠেছে। করোনাভাইরাসের আগে মাঝে মাঝে বাচ্চাদের সঙ্গে খেলতাম। এখন সেটা নিষিদ্ধ। নিয়োগকর্তা চান না যে তাদের খাবারের স্পর্শ করি বা তাদের কাছে বসি।”
অভিযুক্ত নারীরা বলছেন, তাদের দিনে একবার খাবার দেয়া হয়। তাও পশুর মতো সামনে ছুড়ে দেয়া হয়। তাদের মধ্যে কেনিয়া থেকে আসা আপিসাকি হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেন, ‘আমরা সবাই আতঙ্কিত।
গত ফেব্রুয়ারিতে কাজের সন্ধানে পর্যটক ভিসা নিয়ে কেনিয়া থেকে দুবাই আসেন ২৫ বছর বয়সী কেল্লে জোকি। কিন্তু এসেই বুঝতে পারেন যে তিনি গর্ভবতী। এখন তিনি একটি জনাকীর্ণ ডরমিটরিতে ঘুমান। তার মাতৃত্বকালীন কোনো যত্ন নেই; ফিরে যাওয়ার জন্য ৪০০ ডলার বিমান ভাড়াও নেই।
ফোন সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমি সাত মাসের গর্ভবতী। এখানে আমি আমার বাচ্চাকে কীভাবে রাখব? আমি আটকে গেছি। আমার সত্যিই সাহায্য দরকার।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।