বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
না মুখে ছিল না কখনো আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য ও সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরানে। হ্যা বলেই সকলকে আপন করে নিয়েছিলেন তিনি। সেকারনে মুখে মুখে বিন¤্র শ্লোগান ছিল, নগরবাসীর প্রিয় নাম বদর উদ্দিœ আহমদ কামরান। আজ না ফেরার দেশে তিনি। রবিবার দিবাগত রাত ৩টায় ঢাকায় সিএমএইচে মারা যান কামরান। সোমবার বাদ জোহর সিলেট নগরীর মানিকপীর কবরস্থানে মা-বাবার পাশেই চিরদিনের জন্য সমাহিত করা হয়েছে তাদের পিয়ে সন্তান কামরানকে। তার মৃত্যুতে শোকে বিহব্বল সাধারন মানুষ। একজন অভিভাবক, নির্ভরশীল রাজনীতিক হিসেবে অনন্য ছিলেন তিনি। সাহাস্যজ¦ল মুখে, রাজনীতির অগ্নি স্ফুলিঙ্গকে শীতল করে, বসিয়ে দিতেন আলোচনার টেবিলে। সেখানে সৌহার্দপূর্ণ সর্ম্পকে পরিসমাপ্তি ঘটতো রক্তপাতময় যুদ্ধের।পারস্পরিক সর্ম্পকের এক বীর কূটনীতিক ছিলেন তিনি। সিলেটের রাজনীতিক রাজপথের উত্তাল ঢেউ কখনো আঁচড়ে পড়তে দেননি হিং¯্রতার থাবায়। তার চলে য্ওায়া মানে হারিয়ে য্ওা নয়, বরং তার প্রতিটি পদক্ষেপে রয়েছে বর্তমান আগামীর শিক্ষনীয় বার্তা। তার মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী শোক জানিয়ে বার্তা দিয়েছেন। আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা কামরানকে নিয়ে ব্যক্ত করেছেন নিজস্ব অনুভূতি। তাদের বার্তা ও অনুভূতিতে মূল্যায়ন হয়েছে কামরানের জীবন অধ্যায়ের। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শোকবার্তায় বলেছেন, ‘স্বীয় কর্মের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ নেতা কামরান গণমানুষের হৃদয়ে বেঁচে থাকবেন।’ সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত বলেন, ‘তাঁর এই চলে যাওয়া সিলেটের রাজনৈতিক অঙ্গণে শুন্যতা সৃষ্টি করবে। বদর উদ্দিন আহমদ কামরান সুদীর্ঘ ২১ বছর জনপ্রতিনিধি হিসেবে সাধারণ মানুষের সাথে কাজ করেছেন। সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচিত মেয়র ছিলেন তিনি। সিলেটের রাজনীতি ও উন্নয়নে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে তাঁর অবদান।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘জনমানুষের নেতা বদরউদ্দিন আহমদ কামরান পৃথিবী ছেড়ে চলে যাওয়ায় দেশ একজন বিশিষ্ট রাজনীতিবিদকে হারালো। বদর উদ্দিন আহমদ কামরান ছিলেন সিলেটের মাটি ও মানুষের প্রিয় নেতা ও অভিভাবক। সিলেটের সকল আন্দোলন সংগ্রামে ছিলেন একজন সম্মুখযোদ্ধা তিনি। সিলেট আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে অসামান্য অবদানরেখেছেন কামরান। তাঁর মৃত্যুতে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের ধারক ও বাহক একজন লড়াকু নেতাকে আমরা হারালাম এবং রাজনীতিতে সিলেটের যে শূণ্যতা সৃষ্টি হলো তা অপূরণীয়।’
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন এমপি শোকবার্তায় বলেন, ‘আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতাকর্মীদের কাছে খুবই জনপ্রিয় ছিলেন প্রত্যন্ত অঞ্চল চষে বেড়ানা বদর উদ্দিন আহমদ কামরান। সিলেটের উন্নয়ন ও জনসেবার জন্য তিনি দীর্ঘদিন মানুষের মনে বেঁচে থাকবেন।’
বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির সভাপতি ও ইসলামী ঐক্যজোট চেয়ারম্যান এডভোকেট এম এ রকিব বলেন,
‘আলোচনায় সমাধানে বিশ^াসী ছিলেন বলেই, দলমত নির্বিশেষে গ্রহনযোগ্যতা ছিল বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের। তার প্রতি ভালোবাসা ছিল সবার। নিজেই পরিণত হয়েছিলেন এক প্রতিষ্টানে। নামের বাহাদুরীতে আলাদাভাবে সমাদৃত ছিলেন। আজ নেই, কিন্তু তার কর্মগুণ অশেষ, বর্তমান ও ভবিষ্যতে কামরানের প্রয়োজনীয়তা ফুরাবে না।’
আ’লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল বলেন, ‘তিনি ছিলেন তৃণমূলের নেতা। জনপ্রতিনিধি হয়েও তিনি সব শ্রেণির মানুষের সাথে মিশতেন, সেভাবেই তিনি ধীরে ধীরে গণমানুষের নেতা হয়ে উঠেছিলেন।’ দলটির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ বলেন, ‘মানুষের দুঃসময়ে সবার আগে হাজির হতেন তিনি। সে কারণে পরপর দুইবার সিটি মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন। মানুষের যে ভালোবাসা তার জন্য ছিল, সেটা কখনও ফুরিয়ে যাবে না।’
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট লুৎফুর রহমান এবং সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট নাসির উদ্দিন খান বলেন, ‘কামরানের মৃত্যুতে সিলেটবাসী আওয়ামী লীগের আরো একজন অভিভাবককে হারালো, তাঁর মৃত্যুতে দল হারোলো এক কর্মীবান্ধব নেতা।’
সিলেট জেলা বিএনপির আহবায়ক কামরুল হুদা জায়গীরদার শোকবার্তায় উল্লেখ করেছেন, ‘ বর্তমানে রাজনৈতিক বৈরিতার এই দুঃসময়ে ব্যক্তি কামরান ছিলেন সিলেটের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের কাছে জনপ্রিয় ব্যক্তিত। তার মৃত্যুতে সিলেটবাসী একজন সিলেটবান্ধব জনপ্রিয় নেতাকে হারালো, সহজে তা পূরণ হবার নয়।’
বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা এম এ হক বলেন, ‘বদর উদ্দিন আহমদ কামরান বৃহত্তর সিলেটের অন্যতম জনপ্রিয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ছিলেন। আদর্শিক রাজনীতির বাইরে গিয়ে একজন সজ্জন রাজনীতিবিদ ছিলেন তিনি। রাজনৈতিক সম্প্রীতি বজায় রাখতে তাঁর অবদান ছিল অপরিসীম। তার মৃত্যুতে সিলেটবাসী একজন গুণী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে হারালো।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।