বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
যেখানে জন্ম, বেড়ে উঠা সেই গ্রামেই মৃত্যুর পর জায়গা হলো না মনোয়ারার। যাদের ভালোবাসায় বড় হলে সেই মানুষগুলো তার লাশ দাফনে বাধা হয়ে দাঁড়ালেন। শেষ প্রশাসনের সহযোগীতার নাদীর পাড়ে দাফন হলো তার।
জানা যায়, করোনাভাইরাসে মারা পোশাক শ্রমিক মনোয়ারা বেগম (৩০)। একসময় যে মানুষগুলো তাকে এত আদর-স্নেহ ও ভালবাসতেন, তারাই তার লাশ নিজ গ্রামে প্রবেশ করতে দেননি। এর পর মনোয়ারার লাশ নিয়ে তার স্বামী শরিফুল ইসলাম ঘুরতে থাকেন বিভিন্ন জায়গায়।
পরে জলঢাকা উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল ওয়াহেদ বাহাদুরের হস্তক্ষেপে প্রশাসনের সহায়তায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের নিয়োগকৃত মাওলানার মাধ্যমে জানাজা হয়। এর পর সন্ধ্যায় জলঢাকা শহরের কেন্দ্রীয় কবরস্থানে মনোয়ারা বেগমের লাশ দাফন করা হয়।
হৃদয়বিদারক এ ঘটনাটি ঘটে মঙ্গলবার নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার জলঢাকা পৌর এলাকার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বগুলাগাড়ী গ্রামে। মনোয়ারা ওই গ্রামের মোজদুলের মেয়ে। তিনি এক সন্তানের জননী ছিলেন।
পারিবারিক সূত্র জানায়, মনোয়ারা তার স্বামী শরিফুল ইসলামের সঙ্গে ঢাকায় তৈরি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। স্বামীর বাড়ি জলঢাকার কাঁঠালি ইউনিয়নে।
গত ৫ মে স্বামী-স্ত্রী ও সন্তানসহ ঢাকা থেকে রাতের বাসে গ্রামের বাড়ি রওনা দেন মনোয়ারা। পথে মনোয়ারা অসুস্থ হয়ে পড়লে তারা রংপুরে নেমে যান এবং মনোয়ারাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।
সেখানে ৬ মে তাদের নমুনা নেয়া হয়। ৮ মে রংপুর পিসিআর ল্যাবের রিপোর্টে মনোয়ারা বেগমের করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে। সেখানে চিকিৎসাধীন থেকে মনোয়ারার মৃত্যু হয়।
মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে অ্যাম্বুলেন্সে মনোয়ারার লাশ নিয়ে তার স্বামী ও সন্তান জলঢাকায় গেলে গ্রামবাসীর বাধার মুখে পড়েন। তারা গ্রামে মনোয়ারার লাশ প্রবেশ করতে দেননি। পরে স্বামী শরিফুল ইসলাম স্ত্রীর লাশ নিয়ে নিজের ইউনিয়ন কাঁঠালিতে নেয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু সেখানেও ব্যর্থ হন।
জলঢাকা পৌর মেয়রকে এ ব্যাপারে বারবার মোবাইল করে অসহায় পরিবারটি। কিন্তু মেয়র মোবাইল রিসিভ করেননি। পরে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল ওয়াহেদ বাহাদুরকে বিষয়টি জানানো হয়।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল ওয়াহেদ বাহাদুর জানান, বিষয়টি জেনে উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশের সহায়তায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের নিয়োগকৃত মাওলানার মাধ্যমে জানাজা হয়। এরপর মাগরিবের আগে জলঢাকা শহরের কেন্দ্রীয় কবরস্থানের শেষ মাথায় আউলিয়াখানা নদীর ধারে মনোয়ারা বেগমের লাশ দাফন করা হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।