মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
পুলিশের হাতে কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েড মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। সেই বিক্ষোভ থেকে অন্তত ৯ হাজার ৩শ’ জনকে গ্রেফতার করেছে মার্কিন পুলিশ। যুক্তরাষ্ট্রের বাইরেও ইউরোপে, অস্ট্রেলিয়ায় এই আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে। বর্ণবাদ বিরোধী বিক্ষোভে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছে। যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি, নিউইয়র্ক, লস অ্যাঞ্জেলসের মতো বড় শহরগুলোসহ ৪৩টিরও বেশি শহরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। তবে মিনেপোলিসসহ অনেক জায়গায় পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়। নিউইয়র্কেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। মঙ্গলবার রাতে নিউইয়র্কের অনেক দোকান ও শোরুমে ভাংচুর এবং লুটপাটের ছবি ও ভিডিও প্রকাশ পায়। অনেক শহরে বিক্ষোভকারীদের ওপরে টিয়ার গ্যাস ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পুলিশ। সহিংসতায় দোকানপাটে আগুন জ্বালিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা।
জর্জ ফ্লয়েড হত্যাকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ছড়িয়ে পড়া বর্ণবাদ বিরোধী বিক্ষোভে ৪৩টি শহরে ৯ হাজার ৩শ’ জনেরও বেশি মানুষ গ্রেফতার হয়েছে। দাঙ্গা, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, উন্মত্ত আচরণসহ আরো নানা অভিযোগ আনা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বিক্ষোভ প্রথমে শান্তিপূর্ণভাবে শুরু হলেও পরে তা সহিংসতায় রূপ নিচ্ছে। বহু শহরে জারি থাকা কারফিউ ভঙ্গ করেই বিক্ষোভ চলছে। ওয়াশিংটন, নিউ ইয়র্ক, লস এঞ্জেলেস, সান ফ্রান্সিসকোসহ অন্য আরো কয়েকটি শহরে কারফিউ ভেঙে বিক্ষোভকারীরা রাস্তায় নামায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়েছে। অন্যতম বড় বিক্ষোভ হয়েছে ফ্লয়েডের নিজ শহর টেক্সাসের হিউস্টনে। ওই বিক্ষোভে তার স্বজনেরাও যোগ দেয়।
পুলিশি হেফাজতে নিরস্ত্র কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষোভে উত্তাল পুরো যুক্তরাষ্ট্র। টানা আট দিন ধরে শহরে শহরে চলছে বিক্ষোভ। শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের পাশাপাশি পুলিশি দমনের বিপরীতে চলছে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও সংঘর্ষ। কারফিউ জারি আর বিশেষ বাহিনী নামিয়েও লোকজনকে রাস্তা থেকে সরানো যাচ্ছে না।
মঙ্গলবার হোয়াইট হাউস অভিমুখে রওনা দেয়া বিক্ষোভকারীদের ঠেকাতে মার্কিন রাজধানীর রাজপথে সেনাবাহিনীর উপস্থিতি দেখা গেছে। একই সময়ে আকাশে হেলিকপ্টারও উড়তে দেখা যায়। রাতের বেলার কারফিউ অমান্য করে নিই ইয়র্কের ম্যানহাটনে বিক্ষোভকারীরা রাস্তায় নেমে আসলে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সেখানে কারফিউয়ের মেয়াদ আরও এক সপ্তাহ বাড়ানো হয়েছে।
এছাড়া বড় ধরনের বিক্ষোভ হয়েছে লস অ্যাঞ্জেলস, ফিলাডেলফিয়া, আটলান্টা ও সিয়াটলে। তবে তুলনামূলকভাবে শান্ত হয়ে এসেছে ফ্লয়েড হত্যাকান্ডের ঘটনাস্থল মিনিয়াপলিস শহর।
জনরোষের শিকার হচ্ছে পুলিশও। লাস ভেগাসে বিক্ষোভের সময় আলাদা দুটি গুলির ঘটনায় একজন মারা গেছেন এবং এক পুলিশ কর্মকর্তা গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন শহরটির শেরিফ জো লোম্বার্ডো।
ঘটনার বর্ণনায় শেরিফ বলেন, সার্কাস সার্কাস হোটেল এবং ক্যাসিনোর সামনে থেকে বিক্ষোভকারীদের সরানোর চেষ্টা করার সময় ওই পুলিশ কর্মকর্তা গুলিবিদ্ধ হন। তাকে এখন ইউনিভার্সিট মেডিকেল সেন্টারে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে। এটিসহ সহিংস বিক্ষোভে গুলিবিদ্ধ এবং আহত হয়েছেন অন্তত পাঁচ পুলিশ কর্মকর্তা। পুলিশ ও গণমাধ্যম একথা জানিয়েছে। ওই পুলিশ কর্মকর্তাকে গুলি করার সন্দেহে একজনকে চিহ্নিত করে কাস্টডিতেও নেয়া হয়েছে। পৃথক আরেকটি ঘটনায় পুলিশ একজনকে গুলি করে। হাসপাতালে নেয়ার পর তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।
এদিকে লস অ্যাঞ্জেলেসে একটি মলে বিক্ষুব্ধরা আগুন দিয়েছে। নিউ ইয়র্কে দোকানে লুটপাট হয়েছে। সেন্ট লুইস এবং মিসৌরিতে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে আহত হয়েছেন চার পুলিশ। তাদেরকে হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। প্রায় ২শ’ বিক্ষোভকারী লুটপাট চালানোসহ পুলিশের দিকে পাথর ছুড়ে মারছে বলে জানিয়েছেন সেন্ট লুইসের এক পুলিশ কর্মকর্তা। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, বিক্ষোভকারীরা পুলিশের ওপর চড়াও হচ্ছে। একটি জায়গায় ফ্লয়েডের মৃত্যুকে ঘিরে গোটা দেশজুড়ে ছারখার হচ্ছে শহরের পর শহর। সূত্র : এবিসি নিউজ, হেভি, রয়টার্স।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।